|
|
|
|
বাসে উঠতে বাধা, প্রতিবন্ধী দিবসে হেনস্থা দৃষ্টিহীনকে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • তমলুক |
বিশ্ব প্রতিবন্ধী দিবসে এক দৃষ্টিহীনকে বাসে উঠতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠল জনৈক বাসকর্মীর বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার এই ঘটনাকে ঘিরে উত্তেজনা ছড়ায় পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাসদর তমলুকে।
এ দিন বিভিন্ন দাবি-দাওয়া নিয়ে দৃষ্টিহীন প্রতিবন্ধীদের সংগঠন ‘লুই ব্রেইল এসোসিয়েশন অফ দি ব্লাইন্ড’-এর সদস্যরা সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ তমলুক শহরের হাসপাতাল মোড়ে প্রায় আধ ঘণ্টা হলদিয়া-মেচেদা রাজ্য সড়ক অবরোধ করেন। পরে তাঁরা প্রায় এক কিলোমিটার দূরে জেলা প্রশাসনিক ভবনে সংগঠনের তরফে জেলা সমাজ কল্যাণ আধিকারিকের কাছে স্মারকলিপি জমা দেন। কর্মসূচি শেষ হতে দুপুর দেড়টা নাগাদ প্রতিবন্ধীদের অধিকাংশই বিভিন্ন রুটের বাসে ওঠার জন্য জেলাশাসকের অফিসের সামনে বাস স্টপে দাঁড়িয়ে ছিলেন। তাঁদের মধ্যেই ছিলেন দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার বারুইপুর এলাকার দৃষ্টিহীন প্রতিবন্ধী সৈকত কর। তিনি ঘাটালের বাসের জন্য অপেক্ষা করেছিলেন। দুপুর দেড়টা নাগাদ হলদিয়া থেকে গড়বেতাগামী একটি বাস এলে সৈকতবাবু উঠতে যান। তখন ওই বাসের কর্মী তাঁকে উঠতে বাধা দেন, এমনকী ঠেলে ফেলে দেন বলে অভিযোগ। সুপ্রভাত পাত্র নামে এক ব্যক্তি কোনও রকমে সৈকতবাবুকে ধরে ফেলেন। চণ্ডীপুরের বাসিন্দা সুপ্রভাতবাবু বলেন, “সৈকতবাবুর অনুরোধে তাঁকে ওই বাসে উঠতে সাহায্য করছিলাম। কিন্তু বাসের সামনের দরজায় এক বাসকর্মী সৈকতবাবুকে উঠতে বাধা দেন। সৈকতবাবু সিঁড়ি দিয়ে ওঠার চেষ্টা করলে ওই বাসকর্মী তাঁকে ঠেলে ফেলে দেন। কোনও মতে আমি সৈকতবাবুকে ধরে ফেলি।’’ সৈকতবাবু বলেন, “এর আগেও বাসে নানা অপমানজনক মন্তব্য শুনেছি। কোনও বাসকর্মী যে ঠেলে ফেলে দেবে তা ভাবিনি!” |
|
প্রতিবাদে প্রতিবন্ধীদের অবরোধ। ছবি: পার্থপ্রতিম দাস। |
এর জেরে সেখানে অপেক্ষা করা অন্য প্রতিবন্ধীরা ক্ষুদ্ধ হয়ে ঘটনায় জড়িত বাসকর্মীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তোলেন। বাসটিকে আটকে রেখে দেন। প্রতিবন্ধী সংগঠনের তরফে তমলুক থানার ওই বাসকর্মীর বিরুদ্ধে অভিযোগ জানানো হয়। পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে বাসটিকে ছাড়া হয়। ঘটনার রেশ কাটার আগেই ফের এ দিনের কর্মসূচিতে আসা কয়েকজনকে হলদিয়া-কোলঘাটগামী বেসরকারি বাসে উঠতে বাধা দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। কর্মসূচিতে নেতৃত্ব থাকা ‘লুই ব্রেইল অ্যাসোসিয়েশন অফ দি ব্লাইন্ড’-এর রাজ্য সভাপতি নুপূর মাইতি অভিযোগ করেন, “আইন অনুযায়ী প্রতিটি বাসে প্রতিবন্ধীদের জন্য ও প্রবীণ নাগরিকদের জন্য দুটি করে আসন সংরক্ষিত হওয়ার কথা। কিন্তু অধিকাংশ বাসে তা রাখা হয় না। তা ছাড়া আরও অনেক ক্ষেত্রেই বাসকর্মীরা প্রতিবন্ধীদের সঙ্গে নানা রকম দুর্ব্যবহার করে থাকেন।” তাঁর দাবি, “সৈকতবাবুর সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা বাসকর্মীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে।’’ ডিস্ট্রিক্ট বাস অনার্স অ্যাসোসিয়েশনের জেলা সম্পাদক সুকুমার বেরা বলেন, “বাসকর্মীরা দুর্ব্যবহারের করে থাকলে তা দুঃখজনক, অনুচিত। আমরা বিষয়টি খোঁজ নিচ্ছি।” |
|
|
|
|
|