আইসিসি-র বর্ষসেরা দল
ওয়ান ডে অধিনায়ক ধোনি সুযোগ পেলেন না কোহলি
ঠিন দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজ শুরুর আটচল্লিশ ঘণ্টা আগে ভারতীয় ক্রিকেটের মুকুটে যদি মর্যাদার পালক লেগে থাকে, তা হলে সেই মুকুটে কাঁটাও থাকছে!
বৃহস্পতিবার ওয়ান্ডারার্সে স্টেইনগানের সামনে পড়ছে ধোনির ভারত। আর মঙ্গলবার বিশ্ব ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ামক সংস্থা আইসিসি বর্ষসেরা ওয়ান ডে দলের অধিনায়ক বেছে নিল মহেন্দ্র সিংহ ধোনিকে। বিশ্বকাপ এবং চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জয়ী ভারত অধিনায়ক ধোনির কাছে এটা অবশ্য নতুন ব্যাপার নয়। শেষ পাঁচ বছরের মধ্যে চারবারই আইসিসি নির্বাচিত সেরা ওয়ান ডে দলের ক্যাপ্টেন তিনি। তবে এ বার সঙ্গে বাড়তি সংযোজন‘আইসিসি পিপল’স চয়েস অ্যাওয়ার্ড’ পেয়েছেন ধোনি-ই। বিশ্বের ১ লক্ষ ৮৮ হাজার ক্রিকেটপ্রেমীর ভোটে ধোনি আইসিসি-র এই জনপ্রিয় পুরস্কার পেয়েছেন। যেটা ২০১০ থেকে চালু করেছে আইসিসি। এবং এ পর্যন্ত তিন জন পুরস্কৃত ক্রিকেটারই এই উপমহাদেশের সচিন তেন্ডুলকর (২০১০), কুমার সঙ্গকারা (২০১১-’১২) আর ২০১৩-এ ধোনি।
তবে বিরাট কোহলির এ বারের আইসিসি বর্ষসেরা ওয়ান ডে এবং টেস্ট কোনও একাদশেই সুযোগ না পাওয়াটা ক্রিকেটমহলের অনেককে বিস্মিত করতে পারে। এমনকী আইসিসি চিফ এগজিকিউটিভ, দক্ষিণ আফ্রিকার প্রাক্তন আন্তর্জাতিক উইকেটকিপার ডেভ রিচার্ডসন-ও বলে ফেলেছেন, “কোহলি নিজেকে হতভাগ্য মনে করতেই পারে বিশেষ করে বর্ষসেরা ওয়ান ডে দলে নির্বাচিত না হতে পেরে। পরের বছরের দলেও কোহলি সুযোগ না পেলে সেটা রীতিমতো অবাক ব্যাপার হবে।”
অধিনায়ক ধোনি। পেলেন আইসিসি-র পিপলস চয়েস পুরস্কারও।
আইসিসি ক্রিকেট কমিটির চেয়ারম্যান অনিল কুম্বলের নেতৃত্বে একটি প্যানেল (যার অন্য সদস্যরা; ওয়াকার ইউনিস, অ্যালেক স্টুয়ার্ট, গ্রেম পোলক এবং নিউজিল্যান্ড মেয়ে দলের ক্রিকেটার ক্যাথেরিন ক্যাম্পবেল) এ বারের বর্ষসেরা টেস্ট এবং ওয়ান ডে দল বেছেছে ৭ অগস্ট, ২০১২ থেকে ২৫ অগস্ট ২০১৩, এই সময়ের মধ্যে বিশ্ব ক্রিকেটে প্লেয়ারদের আন্তর্জাতিক পারফরম্যান্সের ভিত্তিতে। যে সময়সীমার ভেতর কোহলি ৮ টেস্টে ৪৭২ রান (গড় ৪৩) করেছেন। আর একদিনের ক্রিকেটে ২৩ ম্যাচে কোহলির সংগ্রহ ৬৮৯ রান (গড় ৪০.৫২)। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, এই সময়ের মধ্যে অন্তত দশ জন ব্যাটসম্যানের রান কোহলির চেয়ে বেশি। তাঁদের মধ্যেও অর্ধেকের বর্ষসরা দলে সুযোগ ঘটেনি। বর্ষসেরা টেস্ট একাদশে এ বছরের ৬ জানুয়ারি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়ে ফেলা মাইক হাসি-র সুযোগ পাওয়া নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে। কিন্তু সেখানেও দেখা যাচ্ছে, বাঁ-হাতি অস্ট্রেলীয় ব্যাটসম্যান আইসিসি-র নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে ৬ টেস্টে তিনটি সেঞ্চুরি-সহ ৫২৭ রান করেছেন।
বর্ষসেরা দল ঘোষণার পরে কুম্বলে বলেছেন, “নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে ঘটা ক্রিকেটারদের পরিসংখ্যান খতিয়ে দেখা ছাড়াও আমাদের প্যানেল দেখেছে কোন প্রতিপক্ষ, কেমন পিচ, ম্যাচের কোন পরিস্থিতিতে ক্রিকেটাররা ওই পারফরম্যান্স করেছে। তার পরেও যখন এক দল বিশ্বমানের ক্রিকেটারের মধ্যে মাত্র বারো জনকে বাছার সুযোগ থাকে, তখন সব সময় কয়েক জন ভাল প্লেয়ার বাদ পড়ে যায়।”
অন্য দিকে, ক্রিকেট-দর্শকদের বিচারে বর্ষসেরা ক্রিকেটারের পুরস্কার জেতার পর ধোনি এক বিবৃতিতে বলেছেন, “এই পুরস্কার আমাকে প্রচণ্ড তৃপ্তি দিচ্ছে। কারণ, এটা আমি পেয়েছি, ক্রিকেট খেলাটার অন্যতম প্রধান অংশীদারদের কাছ থেকে যাদের নাম ক্রিকেট ফ্যান। এঁরাই খেলাটার প্রধান পৃষ্ঠপোষক। যাঁদের উদ্দীপনায় আমি সব সময় বাড়তি এক মাইল এগিয়ে যেতে পারি।” ধোনি আইসিসি-র আরও দু’টো পুরস্কারের দৌড়ে আছেন। বর্ষসেরা ক্রিকেটার এবং বছরের সেরা ওয়ান ডে ক্রিকেটার। ফল জানা যাবে ১৪ ডিসেম্বর।

আইসিসি-র বর্ষসেরা টেস্ট দল (ব্যাটিংক্রম অনুযায়ী): কুক (ইংল্যান্ড-অধিনায়ক), আমলা (দঃ আফ্রিকা), পূজারা (ভারত), ক্লার্ক (অস্ট্রেলিয়া), হাসি (অস্ট্রেলিয়া), ডে’ভিলিয়ার্স (দঃ আফ্রিকা), ধোনি (ভারত-উইকেটকিপার), সোয়ান (ইংল্যান্ড), স্টেইন (দঃ আফ্রিকা), অ্যান্ডারসন (ইংল্যান্ড), ফিল্যান্ডার (দঃ আফ্রিকা)। দ্বাদশ ব্যক্তি: অশ্বিন (ভারত)।

আইসিসি বর্ষসেরা ওয়ান ডে দল (ব্যাটিংক্রম অনুযায়ী): দিলশান (শ্রীলঙ্কা), ধবন (ভারত), আমলা (দঃ আফ্রিকা), সঙ্গকারা (শ্রীলঙ্কা), ডে’ভিলিয়ার্স (দঃ আফ্রিকা), ধোনি (ভারত-অধিনায়ক-উইকেটকিপার), জাজেডা (ভারত), আজমল (পাকিস্তান), স্টার্ক (অস্ট্রেলিয়া), অ্যান্ডারসন (ইংল্যান্ড) মালিঙ্গা (শ্রীলঙ্কা)। দ্বাদশ ব্যক্তি: ম্যাকক্লেনাঘান (নিউজিল্যান্ড)।

কেন বাদ বিরাট
আইসিসি-র এ বারের বর্ষসেরা একাদশ বাছার সময়সীমা হল ৭ অগস্ট ২০১২ থেকে ২৫ অগস্ট ২০১৩। এই সময়ের মধ্যে বিরাট কোহলি টেস্ট ক্রিকেটে ৮ ম্যাচে ৪৭২ রান করেছেন। গড় ৪৩। সেঞ্চুরি ২। আটটির মধ্যে ছ’টি টেস্টই ঘরের মাঠে। প্রতিপক্ষ ছিল নিউজিল্যান্ড আর অস্ট্রেলিয়া। আর একদিনের ক্রিকেটে কোহলি ২৩ ম্যাচে করেন ৬৮৯ রান। গড় ৪০.৫২। সেঞ্চুরি ২। কিন্তু তাঁর চেয়ে বিশ্ব ক্রিকেটে দশ জন ওই সময়সীমার মধ্যে বেশি রান করেছেন। যাঁদের মধ্যে সর্বোচ্চ সঙ্গকারা (৯৫৬ রান)। সর্বনিম্ন শিখর ধবন (৭০৭ রান)। এই দশের মধ্যেও মিসবা-উল-হক (৯১০), ইয়ান বেল (৮২৬), ডারেন ব্র্যাভো (৭৭৫), জোনাথন ট্রট (৭২৫), নাসির জামশেদ (৭১৩) বর্ষসেরা দলে জায়গা পাননি। কোহলির গত জুনে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতেও পাঁচ ম্যাচে মাত্র একটি হাফসেঞ্চুরি ছিল।




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.