প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ বর্জনের ডাক দিয়ে কাগজের ব্যাগ চালু করতে শেষ অবধি সবলা মেলাকে বেছে নিল দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা প্রশাসন। ৮ থেকে ১৪ ডিসেম্বর হস্তশিল্পকর্মের ওই মেলায় স্টলগুলিতে বেচাকেনার কাজে কাগজের ব্যাগ ব্যবহার হবে বলে জানালেন জেলাশাসক তাপস চৌধুরী। জেলা গ্রামোন্নয়ন সেলকে এ ব্যাপারে দায়িত্ব দেওয়া হয়। গ্রামোন্নয়ন সেল ৪টি মহিলা স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে দশ হাজার কাগজের ব্যাগ তৈরির বরাত দিয়েছে। তাপসবাবু বলেন, “সরকারি অনুষ্ঠানে কাগজের ব্যাগ ব্যবহার করা এ বার থেকে বাধ্যতামূলক হবে।” জেলা গ্রামোন্নয়ন সেলের পক্ষে দেবায়ণ কুণ্ডু বলেন, “৪টি গোষ্ঠীকে নিয়ে এ বছর কাজে নামা হয়েছে। সবলা মেলার জন্য নানা আকারের ব্যাগ তৈরির বায়না দেওয়া হয়েছে।”
প্রশাসনের এই উদ্যোগের দু’বছর আগেই বালুরঘাটের ডাঙা পঞ্চায়েতের মাহিনগর স্বনির্ভর দল ও শিবশক্তি স্বনির্ভর দলের পাশাপাশি মালঞ্চার সাথী সংস্থা ও লক্ষীনারায়ণ স্বনির্ভর দলের ৪৪ জন কাগজের ব্যাগ তৈরির প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন। |
বায়না পেয়ে তাই আশার আলো দেখছেন স্বনির্ভর মহিলারা। মাহিনগর স্বনির্ভর দলনেত্রী প্রীতি পাল বলেন, “২০১১ সালে কাগজের ব্যাগ তৈরির প্রশিক্ষণ নিয়ে কোনও অর্ডার পাইনি। ফলে গোষ্ঠীর সদস্যদের নিয়ে কৃষিকাজ, হাঁসমুরগি পালনের মধ্যেই কাজ সীমাবদ্ধ ছিল। প্রশাসন থেকে ১০ হাজার কাগজের ব্যাগ তৈরির অর্ডার পেয়ে সকলের উৎসাহ বেড়েছে।” এ দিন সকালে মাহিনগর এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, নানা বহন ক্ষমতাসম্পন্ন নানা আকারে কাগজের ব্যাগ তৈরির কাজে ব্যস্ত ফেরুনা বিবি, বাবলি হালদারেরা।
প্রশাসনের এ উদ্যোগের বাইরের ছবির বদল কিন্তু এখনও দেখা যায়নি। শহরময় ক্যারিব্যাগের ব্যবহারনালা থেকে রাস্তা, স্তূপীকৃত জঞ্জালে জমা হয়ে দূষণ ছড়ালেও পুরকর্তৃপক্ষ কিংবা বণিকসভার তরফে হেলদোল নেই বলে অভিযোগ। তৃণমূল পরিচালিত বালুরঘাট পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান রাজেন শীল জানান, শীঘ্রই বালুরঘাট শহরকে ক্যারিব্যাগ মুক্ত হিসাবে গড়ে তুলতে প্রচার অভিযান শুরু করা হবে। তিনি বলেন, “প্রশাসন মেলা দিয়ে শুরু করছেন, আমরা বাজার, দোকানে অভিযান ও সচেতনার প্রচার চালিয়ে শহর প্লাস্টিক-মুক্ত করব।” সরকারি মেলা ঘিরে ক্যারিব্যাগ বর্জনের এই উদ্যোগে এখন পুরসভা কতটা ততপর হয়, সেটাই দেখার। |