বিঘার পর বিঘা জমির ফসল হাতির দল তছনছ করলেও ক্ষতিপূরণ মিলছে নাম মাত্র। বন দফতরের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ তুলে ক্ষতিপূরণের পরিমাণ বাড়ানোর দাবি তুলেছেন ঝালদার চাষিরা। ইতিমধ্যে ঝালদা রেঞ্জ অফিসে গিয়ে এই দাবিতে বিক্ষোভও দেখিয়েছেন এলাকার কয়েকটি গ্রামের বাসিন্দা।
অযোধ্যা পাহাড় ও মুরগুমা এলাকা থেকে হাতিদের দু’টি দল কিছুদিন আগে ঝালদার পুস্তি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় ঢুকেছে। ওই ৩৫টি হাতির উপদ্রবে হেঁসলা, কনকপুর, পুস্তি, কর্মাডি, ঘসড়া প্রভৃতি গ্রামের বাসিন্দারা অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন। বুধবার সন্ধ্যায় ঝাড়খণ্ড থেকে সুবর্ণরেখা পার হয়ে আরও ১৫টি হাতি এলাকায় এসে পড়ায় হাতিদের হামলা আরও বেড়েছে। ঝালদার রেঞ্জ অফিসার সমীর বসু বলেন, “দেখা গিয়েছে হাতির দল কোনও এলাকায় ঢুকলেও দিন কয়েক উপদ্রব চালিয়ে অন্যত্র চলে যায়। কিন্তু এখানে দেখছি হাতিগুলি এলাকা থেকে নড়তেই চাইছে না।” হেঁসলার বাসিন্দা হলধর সিং মুড়া, সমীর কুইরিদের কথায়, “চোখের সামনে মাঠের সব ফসল নষ্ট করে দিচ্ছে হাতির পাল। ওই সব্জি বাজারে বিক্রি করলে যে দাম পাওয়া যেত, বনদফতর যে ক্ষতিপূরণ দেবে, তা অতি নগণ্য।” |
কনকপুরের চাষি জন্মেজয় মাহাতোর ক্ষোভ, “আমারা চাষবাস করে সংসার চালাই। কিন্তু এখন ফি বছর হাতিরা সব ফসল সাবাড় করে দিচ্ছে। আমরা তাহলে খাব কী?” পুস্তি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান দুর্গাচরণ মাহাতো বলেন, “হাতির দল দিনের পর দিন এলাকায় ধান, সব্জি নষ্ট করছে। অথচ ডেসিমেল প্রতি ৩০ টাকা ক্ষতিপূরণ পান চাষিরা। এখনও সেই মান্ধাতার আমলের ক্ষতিপূরণ কি বাস্তবসম্মত? ক্ষতিপূরণের টাকা বাড়ানোর জন্য আমরা রেঞ্জ অফিসারের কাছে দাবি জানিয়েছি।” বাঘমুণ্ডির কংগ্রেস বিধায়ক তথা জেলা কংগ্রেস সভাপতি নেপাল মাহাতোর দাবি, “পাঁচ কিলোমিটার দূরে ঝাড়খণ্ডে সব্জির ক্ষতিপূরণ ডেসিমেল প্রতি ২৪০ টাকা এবং ধানের ক্ষেত্রে ১২০ টাকা। অথচ এখানে ধান-সব্জি সব একই দর, ডেসিমেল প্রতি মাত্র ৩০ টাকা! এই সরকার সারদার লগ্নিকারীদের ক্ষতিপূরণ দিচ্ছে, অথচ চাষিদের বেলায় নীরব।” পুরুলিয়ার ডিএফও ওমপ্রকাশ বলেন, “এ ব্যাপারে আমাদের কিছু করার নেই। সরকারি নীতি মেনেই আমরা ক্ষতিপূরণ দিচ্ছি।” তবে হাতিগুলিকে তাড়ানোর জন্য বন দফতর ব্যবস্থা নেবে বলে তিনি আশ্বাস দিয়েছেন। |