|
|
|
|
সুনহরের অত্যাচারে জেরবার রাতাবাড়ি |
নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলচর |
করিমগঞ্জ জেলার রাতাবাড়ি অঞ্চলের মানুষ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। মুলিয়ালা, বেতুবাড়ি প্রভৃতি গ্রাম থেকে বাড়িঘর ছেড়ে পালাচ্ছেন অনেকে। খুন, অপহরণ, মুক্তিপণ আদায়ের মতো ঘটনা লেগেই আছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, পুলিশকে জানিয়েও কোনও লাভ হচ্ছে না। শেষ পর্যন্ত তাঁরা জেলাশাসকের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে সেনা অভিযানের দাবি।
রাতাবাড়ি থানার বিভিন্ন গ্রাম দীর্ঘ দিন থেকে এমনিতেই জঙ্গি -হানায় জেরবার। এ বার তার সঙ্গে যোগ হয়েছে ‘সুনহর আলি’-র উৎপাত। বাড়িঘরে আগুন দিয়ে এক পরিবারের নয় সদস্যকে হত্যার ঘটনায় করিমগঞ্জ জেলা আদালত সুনহরকে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করেছিল। হাইকোর্ট পরে তাকে নির্দোষ বলে বেকসুর খালাস করে দেয়। সে জেল থেকে ফিরে আসে বছর দেড়েক আগে। তারপর থেকেই তার রাজত্ব চলছে রাতাবাড়িতে, এমনটাই অভিযোগ এলাকাবাসীর। লুণ্ঠন, অপহরণ, ও মুক্তিপণ আদায়ের জন্য বিশাল বাহিনী গড়ে তুলেছে সুনহর। তাদের হাত থেকে বাঁচতে এলাকার লোকজন তৈরি করেছেন রাতাবাড়ি সংগ্রাম কমিটি।
জেলাশাসক সঞ্জীব গোঁহাই বরুয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে গ্রামবাসীরা জানান, সেনাবাহিনীর শিবির থাকার সময় সুনহর বাহিনীর উৎপাত কিছুটা নিয়ন্ত্রিত ছিল। ক’মাস আগে ওই শিবির তুলে নেওয়া হলে সমাজবিরোধীদের আস্ফালন আরও বেড়ে যায়। তাঁরা ফের সেনা -শিবির স্থাপনের জন্য জেলাশাসককে অনুরোধ করেছেন। তাঁদের আর্জি, এই দাবি পূরণের আগে পর্যন্ত স্পর্শকাতর গ্রামগুলির জন্য যেন একটি পুলিশ চৌকির ব্যবস্থা করা হয়। রাতাবাড়ি সংগ্রাম কমিটির সভাপতি নজমুদ্দিন আহমেদের কথায়, “বছর দেড়েক ধরে বেশ ক’টি খুনের ঘটনা ঘটেছে এলাকায়। ক’দিন আগেও সুনহর বাহিনীর হাতে প্রাণ হারিয়েছেন কালা মিয়া নামে এক গ্রামবাসী। এ সব ঘটনায় আতঙ্কিত মানুষ গ্রাম ছাড়ছেন। পুলিশ সুনহরের মতো দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করতে পারছে না।”
রাতাবাড়ি থানার ওসি সফিউল হোসেন স্বীকার করেন, “সুনহর হাইকোর্টের রায়ে জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর উৎপাত বাড়িয়ে দিয়েছে। আগেই গ্রামবাসীরা তার বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেওয়ায় সে রাতাবাড়ি এলাকায় থাকে না। পুলিশ তাকে খুঁজে বেড়াচ্ছে। ওসি অবশ্য গ্রামবাসীদের এলাকা ছেড়ে পালানোর কথা মানতে রাজি নন। তাঁর কথায়, “পুলিশ নিয়মিত স্পর্শকাতর এলাকাগুলিতে টহল দিচ্ছে। এ ছাড়া, সুনহর যাতে এলাকায় ঢুকতে না পারে তার জন্যও ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।” জেলাশাসক সঞ্জীববাবু বলেন, তিনি বিষয়টি নিয়ে পুলিশকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করবেন। |
|
|
|
|
|