সকালেই বিগড়োল মেট্রো, ভুগলেন অফিসের যাত্রীরা
দিনের শুরুতেই আটকে গেল মেট্রো। দেড় ঘণ্টা আটকে যখন আবার তার যাত্রা শুরু হল, ততক্ষণে যাত্রীদের সমস্ত কাজকর্ম পণ্ড। কর্তারা যা-ই বলুন না কেন, যাত্রীদের বক্তব্য, মেট্রোর রক্ষণাবেক্ষণের যে চূড়ান্ত দুর্দশা চলছে, মঙ্গলবারের ঘটনায় সেটা ফের পরিষ্কার হল।
মেট্রো সূত্রের খবর, চাকার অ্যাক্সেল ভেঙে এ দিন সকালে মহাত্মা গাঁধী স্টেশনে ডাউন লাইনে দাঁড়িয়ে গিয়েছিল একটি ট্রেন। এর জেরে সব মিলিয়ে প্রায় দেড় ঘণ্টারও বেশি পুরো রুটে মেট্রো চলাচল বন্ধ থাকে। তাতেই চূড়ান্ত দুর্ভোগে পড়েন কয়েকশো যাত্রী। কী করে চাকার অ্যাক্সেল ভাঙল, তা তদন্ত করে দেখছেন মেট্রোকর্তারা। দুর্ঘটনার কিছুক্ষণ পর থেকে নোয়াপাড়া থেকে গিরিশ পার্ক ও ময়দান থেকে কবি সুভাষ পর্যন্ত ট্রেন চালিয়ে অবস্থা সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন মেট্রো কর্তৃপক্ষ। মেট্রো সূত্রে খবর, এই ঘটনার জেরে ৬টি মেট্রো বাতিল করতে হয়।
ঠিক কী হয়েছিল এ দিন? ওই ট্রেনটির যাত্রীরা জানান, সকাল পৌনে ৯টা নাগাদ দমদম থেকে ছাড়া কবি সুভাষমুখী রেকটি মহাত্মা গাঁধী স্টেশনে ঢোকার মুখে আচমকাই তার সমস্ত আলো নিভে যায়। প্রথম কামরার দু’টি দরজা প্ল্যাটফর্ম ছাড়িয়ে যাওয়ার পরে অন্ধকারের মধ্যে ট্রেনটি থামে। যাত্রীদের চেঁচামেচিতে চালক তাঁর কেবিন থেকে বেরিয়ে এসে কোনও মতে দ্বিতীয় দরজাটি খুলে দেওয়ার পরে অনেকে নেমে পড়েন। পরে সবক’টি দরজাই খুলে দিয়ে প্ল্যাটফর্মে ঘোষণা করা হয় ট্রেনটি খারাপ হয়ে গিয়েছে। যাত্রীদের নেমে আসতে বলা হয়।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছন মেট্রোর ইঞ্জিনিয়ারেরা। কিন্তু ট্রেনটিকে কিছুতেই সরানো যাচ্ছিল না। মেট্রো সূত্রে খবর, পরে বোঝা যায়, ট্রেনের অ্যাক্সেল ভেঙে যাওয়াতেই এই বিপত্তি। পরে কোনও মতে ট্রেনটিকে মেরামতির জন্য কারশেডে নিয়ে যাওয়া হলে সকাল ১০টা ১৬ নাগাদ ফের টানা ট্রেন চলাচল শুরু হয়। মাঝের সময়টায় নোয়াপাড়া থেকে গিরিশ পার্ক এবং ময়দান থেকে কবি সুভাষের মধ্যে পরিষেবা চালু ছিল।
মেট্রো রেল সূত্রের খবর, দিনের শুরুতে ওই ব্যস্ত সময়ে নিত্যযাত্রীদের ভিড় উপচে পড়ছিল আটকে পড়া ট্রেনটিতে। তার উপরে পিছনে থাকা রেকগুলিও প্রত্যেক স্টেশনে প্রায় সাত-আট মিনিট করে দাঁড়িয়ে থেকেছে।
ফলে হয়রান হয়ে প্রচুর যাত্রী ময়দান স্টেশনে পৌঁছনোর আগেই মেট্রো থেকে নেমে পড়েন। স্টেশনগুলিতে ওই সময়ে অনবরত এই বিভ্রাটের কথা ঘোষণা করে ময়দান স্টেশনে কামরা খালি করতে অনুরোধও করা হচ্ছিল।
ট্রেন আর যাবে না বুঝতে পেরে সবাই নামতে শুরু করেন। অফিসটাইমে একসঙ্গে এত যাত্রী প্ল্যাটফর্ম থেকে বেরোতে চাওয়ায় বিপত্তি বাধে স্মার্ট গেটেও। এর পরেই ভিড়টা আছড়ে পড়ে ময়দান স্টেশনের বাইরে। রাস্তায় বেরিয়ে এসে অনেকে গাড়ি-বাস-ট্যাক্সি ধরে গন্তব্যের দিকে রওনা দেওয়ার চেষ্টা করেন। পাতালে মেট্রো বিভ্রাট এবং উপরে ভিড়ে ঠাসা বাসে উঠতে না পেরে কিংবা ট্যাক্সি না পেয়ে তুমুল নাস্তানাবুদ হন নিত্যযাত্রীরা।
মেট্রো সূত্রে খবর, খারাপ হয়ে যাওয়া রেকটি দীর্ঘক্ষণ মহাত্মা গাঁধী স্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকায় ডাউন লাইনের মেট্রো চলাচল বেশি বিঘ্নিত হয়েছে। এর প্রভাব পড়েছে অন্যান্য ট্রেনগুলির উপরেও। ফলে পুরো রুটে ট্রেন চলাচল শুরু পরেও দেরিতে ট্রেন চলায় বহুক্ষণ ভুগিয়েছে পরিষেবা।
রক্ষণাবেক্ষণে ত্রুটির কথা অবশ্য মেট্রোকর্তারা মানতে চাননি। তাঁদের বক্তব্য, এ দিনের বিপর্যয় ঘটেছে যান্ত্রিক ত্রুটির জেরে। প্রশ্ন উঠেছে, মাঝপথে এই ত্রুটি এড়াতেই রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করা হয়। তবে কি এ ক্ষেত্রে সেই কাজ ঠিক মতো হচ্ছে না? না হলে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রেনের চাকার অ্যাক্সেল ভেঙে গেল কী করে? মেট্রোকর্তারা অবশ্য এর জবাব দেননি। তাঁদের বক্তব্য, সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.