আইনি ব্যবস্থার ইঙ্গিত সংস্থার |
সমুদ্রবন্দর গড়তে দেরি, শো-কজ আম্মালাইন্সকে |
গার্গী গুহঠাকুরতা • কলকাতা |
লাল ফিতের ফাঁস। রাজনীতির ডামাডোল। আর পরিবেশ সংক্রান্ত ছাড়পত্র পেতে গড়িমসি। আম্মালাইন্সের অভিযোগ, এই তিন কারণেই রসুলপুরে গভীর সমুদ্রবন্দর গড়ার কাজ এগোতে পারেনি তারা। অথচ এখন সেই দেরির অভিযোগেই তাদের শো-কজ বা কারণ দর্শানোর নোটিস পাঠিয়েছে রাজ্য। সিদ্ধান্ত নিয়েছে, বাম আমলে পাওয়া লেটার অফ ইনটেন্ট (আগ্রহপত্র) নাকচ করার। মুম্বইয়ের সংস্থাটি জানাচ্ছে, শেষ পর্যন্ত রাজ্য সত্যিই সে পথে চললে, আইনি রাস্তায় হাঁটতে বাধ্য হবে তারাও।
সম্প্রতি শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, আম্মালাইন্সের আগ্রহপত্র নাকচ করা হচ্ছে। তাঁর যুক্তি ছিল, “সরকারি-বেসরকারি যৌথ উদ্যোগে এই বন্দর তৈরির কথা। সে ক্ষেত্রে সব সংস্থার জন্যই দরজা খোলা রাখতে হবে। একটি সংস্থাকে কাজ দেওয়া সম্ভব নয়।”
কিন্তু মেকা গোষ্ঠীর শাখা আম্মা- লাইন্সের অভিযোগ, আসলে পূর্বতন বাম ও বর্তমান তৃণমূল সরকারের মধ্যে রাজনৈতিক টানাপোড়েনের বলি তারা। যে-কারণে আগের জমানার প্রতিশ্রুতি ভাঙার রাস্তা খুঁজছে বর্তমান সরকার। এ প্রসঙ্গে ই-মেলে সংস্থার অন্যতম কর্তা হেমন্ত মেকা রাওয়ের দাবি, ২০১০-এ বিস্তর বাধার মুখে পড়ে সংস্থা। নন্দীগ্রাম কাণ্ডে রাজনৈতিক অস্থিরতায় এলাকায় কাজ করা যায়নি। এখন রাজ্য সেই দায় সংস্থার ঘাড়ে চাপানোয় তিনি ক্ষুব্ধ।
রসুলপুরে বন্দর গড়তে ২০০৭-এ তৎকালীন বাম সরকারের কাছে আগ্রহপত্র জমা দেয় আম্মালাইন্স। ২০০৮-এ প্রকল্প এগিয়ে নিয়ে যেতে সায় দেয় কেন্দ্রও। এর পর ২০১০-এ সংস্থাকে আগ্রহপত্র দেয় রাজ্য। তাতে পরিবেশের ছাড়পত্র পাওয়া থেকে শুরু করে প্রকল্পের বিশদ পরিকল্পনা ও খরচ জানানোর দায় চাপে সংস্থার উপরেই। সেই অনুযায়ী ২০১০-এর অগস্টে শিল্পোন্নয়ন নিগমে খসড়া চুক্তিপত্র পাঠায় আম্মালাইন্স। কিন্তু তার শর্ত নিয়ে চাপান-উতোরে চুক্তি হয়নি। এর পর বিধানসভা ভোট এসে পড়ায় বিষয়টি ধামাচাপা পড়ে। ২০১০-এর জানুয়ারিতে হলদিয়ার শিল্প প্রকল্পের ক্ষেত্রে পরিবেশ নিয়ে কেন্দ্রীয় নিষেধাজ্ঞা চালু হয়। আটকে যায় রসুলপুরের ছাড়পত্র। ২০১৩-র সেপ্টেম্বরে নিষেধাজ্ঞা ওঠে। সংস্থার দাবি, সম্প্রতি পরিবেশ মন্ত্রকের বিশেষজ্ঞ কমিটি তাদের ব্যাখ্যায় সন্তুষ্ট। ফলে এ মাসেই সবুজ সঙ্কেত পাওয়ার কথা। কিন্তু সংস্থার ভয়, রাজ্য আগ্রহপত্র নাকচ করলে জলে যাবে পুরো প্রক্রিয়া। নষ্ট হবে সমীক্ষা, নকশায় ব্যয় করা ২২ কোটি টাকা। ফলে আইনি পথে হাঁটা ছাড়া উপায় থাকবে না বলেই সংস্থার দাবি।
|