লগ্নিকারীদের স্বার্থ সুরক্ষিত রাখতে এ বার বড় ব্যাঙ্কগুলির জন্য মূলধন সংক্রান্ত নতুন বিধি চালু করতে চলেছে ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক (আরবিআই)।
শীর্ষ ব্যাঙ্ক এ ব্যাপারে একটি খসড়া নির্দেশিকা প্রকাশ করে জানিয়েছে, এক দশকের মধ্যে ২০১২-’১৩ সালে সবচেয়ে ঢিমেতালে পা ফেলেছে ভারতীয় অর্থনীতি। যার খেসারত দিতে হচ্ছে ব্যাঙ্কিং শিল্পকে। ব্যাঙ্কের অনাদায়ী ঋণের অঙ্ক আকাশছোঁয়া। সম্প্রতি তা পৌঁছেছে ১০ হাজার কোটি ডলার বা ৬ লক্ষ ৩০ হাজার কোটি টাকায়। এটা ব্যাঙ্কগুলির দেওয়া মোট ঋণের প্রায় ১০%। এই পরিপ্রেক্ষিতেই ব্যাঙ্কগুলিকে আরও সুরক্ষিত রাখতে উদ্যোগী হয়েছে শীর্ষ ব্যাঙ্ক। এই নির্দেশিকা সম্পর্কে ব্যাঙ্কগুলিকে তাদের মতামত জানাতে হবে আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে।
খসড়া নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, যে-সব ব্যাঙ্ক ‘আয়তনে এত বড়, যে-তারা বন্ধ হতে পারে না’, সেগুলিকেই নয়া মূলধন বিধির আওতায় আনা হবে। সংশ্লিষ্ট সূত্রের ইঙ্গিত, ‘বড়’ হিসেবে সেই সব ব্যাঙ্ককেই চিহ্নিত করতে চায় আরবিআই, যাদের প্রত্যেকের ব্যবসার পরিমাণ জাতীয় আয়ের ২ শতাংশের বেশি। বাড়তি মূলধনের সংস্থান করতে হবে এই সব ব্যাঙ্ককে। পাশাপাশি, সেগুলির উপর নজরদারিও বাড়াবে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। আগামী ২০১৬ সাল থেকে নতুন আইন চালু করার কথা খসড়া প্রস্তাবে জানিয়েছে তারা।
নয়া আইনের আওতায় অন্তত ১৫টি ভারতীয় এবং ৫টি প্রথম সারির বিদেশি ব্যাঙ্ককে আনা হবে বলে সংশ্লিষ্ট শিল্পমহলের ইঙ্গিত। গুরুত্বপূর্ণ দেশীয় ব্যাঙ্কগুলিকে ‘ডোমেস্টিক সিস্টেমিক্যালি ইমপর্ট্যান্ট ব্যাঙ্ক’ বা ডি-সিব তালিকায় আনা হবে। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের নয়া খসড়া নির্দেশিকায় যে-সব প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, সেগুলির মধ্যে রয়েছে:
• যে সমস্ত সম্পদের ঝুঁকি বেশি, গুরুত্বের ভিত্তিতে সেগুলির মূল্যায়ন করা
• ওই সব সম্পদের ০.২% থেকে ১% হিসেবে বাড়তি মূলধনের সংস্থান করা
• ২০১৬-র এপ্রিল থেকে বাড়তি মূলধন রাখার শর্ত মানার বাধ্যবাধকতা
• ২০১৯ পর্যন্ত তা দফায় দফায় রূপায়িত করা
• ২০১৫ সাল থেকে শুরু করে প্রতি বছরের অগস্টে ডি-সিব ব্যাঙ্কের নয়া তালিকা প্রকাশ
ডি-সিব তালিকার ব্যাঙ্কের উপর রিজার্ভ ব্যাঙ্ক বাড়তি নজর রাখবে বলে খসড়ায় স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেই নজরদারি ব্যাঙ্কের নিজস্ব পরিচালন ব্যবস্থা মারফত যেমন করা হবে, তেমনই বাইরে থেকেও জোরদার করা হবে নিয়ন্ত্রণ। এ খবর রয়টার্সের। |