কানে একটা বড়সড় কানবালা। যত বড় হবে তত ভাল। আর দু’হাত ভরিয়ে থাকুক দু’টো হাত-পদ্ম। সাবেক সাজে ডিজাইনার ছোঁয়া দিতে বেছে নেওয়া যায় একটা ‘মাঙ্গটিকা’ও।
পুরনো দিনের এ সব ডিজাইনই ফিরে এসেছে জাঙ্ক-ফ্যাশনে। ঠাকুরমার কানবালা দেখে নাকি বহু দিন আগেই মুগ্ধ হয়েছিল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের শ্রেয়া। বলে, “সেটা দেখা থেকেই ইচ্ছে ছিল একটা কানবালা পরার। এত দিনে ফ্যাশনে ফিরল।” শ্রেয়ার মতো আরও অনেক তরুণীই এই শীতের বিয়েবাড়ি-সিজনে নিজের গয়নার বাক্সে ভরে নিচ্ছে রকমারি পাথর বসানো কানবালা। কাঁধের যত কাছাকাছি নামবে কানের দুল, ততই স্টাইলিশ হয়ে উঠবেন সুন্দরী।
গয়নার ডিজাইনার ইনা অহলুওয়ালিয়া জানালেন, নানা ধাতুর কানবালা তৈরি করেছেন তিনিও। কোনওটা মুক্তো অথবা সাদা পুঁতি বসানো, তো কোনওটায় থাকছে নানা রঙের সেমি প্রেশাস পাথর। ইনা বলেন, “চাঁদবালির রেট্রো সাজ এখন পছন্দ করছেন বিভিন্ন বয়সের মহিলারা।”
সেন্ট জেভিয়ার্সের শ্বেতা আবার চাঁদবালিতেও আনতে চায় ফিউশনের ছোঁয়া। কিনে ফেলেছে নানা রঙের প্লাস্টিক বিডস্ দিয়ে তৈরি গোলাকার বড়সড় দুল। ভারতীয় নয়, পুরোদস্তুর পশ্চিমী ড্রেসের সঙ্গে সেই
চাঁদবালিতে চমকে দেবে দাদার বিয়ের ককটেল পার্টি। |
এক্সপেরিমেন্ট শুধু কানের দুলেই থামবে কেন! হুল্লোড়ের মরসুমে একটু হটকে সাজতে রকমারি ধাতুর হাত-পদ্ম কিনে ফেলছে অনেকে। শ্রেয়ার বন্ধু পামেলা যেমন ছোট হাতার আনারকলি কুর্তার সঙ্গে সাদা পাথরের হাত-পদ্ম পরবে মাসতুতো দিদির বিয়ের দিন। বলল, “কানে বড় বড় দু’টো ড্যাঙ্গলার আর বেশ কয়েকটা চেন দেওয়া হাত-পদ্ম। ব্যস। আর কোনও গয়না নয়।” তাতেই মাত চারপাশ।
ইনা জানালেন, আরও নানা রকম জিনিস দিয়ে হাত-পদ্ম তৈরি হচ্ছে এই বছর। জাঙ্ক ফ্যাশনে সেই সাবেক ডিজাইন পেয়ে রীতিমতো মেতে উঠেছে এই প্রজন্ম। প্রেসিডেন্সির রাইয়ের আবার ইচ্ছে একটা সেমি এথনিক মেজাজের ড্রেসের সঙ্গে অক্সিডাইজড্ ধাতুর হাতফুল পরার। বয়ফ্রেন্ডের দিদির বিয়ের সঙ্গীতে সেই সাজেই প্ল্যান করছে একটা পারফর্ম্যান্স। বলে, “ওর অন্য বান্ধবীরা তো ট্র্যাডিশনাল পরবে, সেখানে এই ফিউশন সাজে মাত হয়ে যাবে চারদিক!” |
রেট্রো সাজে বিয়ের মরশুম মাতিয়ে তুলতে উৎসাহী ফ্যাশন ডিজাইনার অভিষেক দত্তও। বিশেষ দিনে অভিষেকের পছন্দ সুতির শাড়ির সঙ্গে লো কাট ব্লাউজ। আর নজর টানতে গলায় একটা ভারী নেকপিস।
এই টিপসের কথা শুনতেই কফি শপে বসে গোখেল কলেজের তৃণা ঠিক করে ফেলল, বেস্টফ্রেন্ডের বিয়ের আগে নাকি জাঙ্ক জুয়েলারি কিনতে হবে ওকে। কাঠের তৈরি বড় হার পরবে সে জুটসিল্কের সঙ্গে। |
এই মরসুমে নাকি সারা গায়ে থাকবে যত রং, দেখাবে ততই সমসাময়িক। এক হাতে দশটা চুড়ি হতে পারে দশ রঙের। আর সে রং যত হবে চোখ ধাঁধানো, ততই স্টাইলিশ তরুণীর সাজ। ইনা আবার বলেন, “শুধু রং কেন, রকমারি ডিজাইনও একসঙ্গে পরা যায়।” যেমন কাচ, পাথর আর কাঠের তৈরি চুড়ি পরে নেওয়া যায় কোনও পশ্চিমী ড্রেসের সঙ্গে। সাজ হয়ে যাবে এথনো ওয়েস্টার্ন। বহু দিন না ব্যবহার করা সব গয়নাও বার করে মিক্স-ম্যাচ করা যায় এ ভাবে। বাড়িতে মা-ঠাকুরমার টিকলি থাকলেও বার করে ফেলা যায় এই মরসুমে। রকমারি টিকলি, এমনকী টায়রাও এখন ফ্যাশনে হিট।
সোনালি-রুপোলি ধাতুর তৈরি হোক বা বসানো থাকুক নানা রঙের পাথর, সাজ জমাতে এই টায়রাও কম কিছু নয়। সঙ্গে আনারকলি সালোয়ার, একগোছা চুড়ি আর মাঙ্গটিকা।
তবে আর কী, এ বার ভিড়ের মধ্যে বাজার হাতরে জাঙ্ক গয়না কেনার ঝক্কিও কমল!
|
কানবালা প্লাস |
• কোনও হাল্কা সাজে মাত করতে পুরনো কোনও দুল অথবা পেন্ডন্টকে ব্যবহার করা যায় চুলের ক্লিপ হিসেবে
• চুল খোলা রাখুন বা খোঁপায় সাজান, এই গয়না নজর কাড়তে বাধ্য
• সুতির শাড়ির সঙ্গে লো কাট ব্লাউজ। আর গলায় থাকুক ভারী একটা নেকপিস। বিশেষ দিনে এই সাজ সবার নজর কাড়বেই |
টিপস্: অভিষেক দত্ত |
|