উড়ালপুলের কাজ শেষ করতে উদ্যোগ ঝাড়গ্রামে
বশেষে ঝাড়গ্রাম শহরে অসমাপ্ত উড়ালপুলের কাজ শেষ করার জন্য উদ্যোগী হচ্ছে রাজ্য সরকার।
গত শনিবার রেল ও পূর্ত দফতরের আধিকারিক এবং ঝাড়গ্রামের ব্যবসায়ী সংগঠন ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের নিয়ে দফতরে বৈঠক ডাকেন ঝাড়গ্রামের মহকুমাশাসক এস অরুণপ্রসাদ। বৈঠকে পূর্ত দফতরের আধিকারিকরা জানান, রেল ক্রশিংয়ের দক্ষিণ দিকে জুবিলি বাজার সংলগ্ন এলাকায় যাতায়াতের জন্য উড়ালপুলের তলায় দু’টি আন্ডারপাস করার অনুমোদন মিলেছে। তিন সপ্তাহের মধ্যে উড়ালপুলের অসমাপ্ত কাজ ফের শুরু করার জন্য রেল কর্তৃপক্ষকে বলেছে প্রশাসন।
বিধানসভা নির্বাচনের আগে তৎকালীন রেলমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঝাড়গ্রামে উড়ালপুল তৈরির আশ্বাস দিয়েছিলেন। রাজ্যে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পরে ২০১১ সালের অগস্টে শহরের মেন রেলওয়ে ক্রশিং সংলগ্ন ৫ নম্বর রাজ্য সড়কে দীর্ঘ প্রতীক্ষিত উড়ালপুল তৈরির কাজ শুরু হয়। পুরো কাজটার দায়িত্ব নেয় রেল। রেলের তরফেই টেন্ডার ডেকে একটি ঠিকাদার সংস্থাকে নিয়োগ করা হয়। প্রায় ৮৫ শতাংশ কাজ হওয়ার পরে চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে ঠিকাদার সংস্থাটি রেল কর্তৃপক্ষকে জানায়, ঝাড়গ্রাম শহরের জুবিলি বাজার সংলগ্ন মেন রোডের স্থানীয় ব্যবসায়ীদের একাংশের আপত্তিতে উড়ালপুলের দক্ষিণ প্রান্তের গার্ড ওয়াল তৈরির কাজ হচ্ছে না। এরপর প্রশাসনিক স্তরে কয়েক বার বৈঠক হলেও সমাধান সূত্র বের হয়নি।

উড়ালপুলের জন্য বন্ধ। সেই সুযোগে ৫ নম্বর রাজ্য সড়কের উপরেই পার্কিং।
বসেছে সব্জি স্টল, খাবার দোকান। রাস্তায় চলা দায়। ছবি: দেবরাজ ঘোষ।
এ দিকে, উড়ালপুলের উত্তরপ্রান্তে বাছুরডোবার দিকে গার্ড ওয়াল তৈরির কাজ প্রায় শেষ। কিন্তু দক্ষিণপ্রান্তে জুবিলি বাজারের দিকে গার্ড ওয়াল তৈরির কাজ বন্ধ রয়েছে। নির্মীয়মাণ উড়ালপুলটির জন্য গত দু’বছর ধরে মেন রেল ক্রশিং সংলগ্ন প্রধান রাস্তার একটি অংশে যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। ফলে শহরের উত্তর ও দক্ষিণ অংশের মধ্যে সরাসরি যানবাহনের যোগাযোগ কার্যত বিচ্ছিন্ন। গত দু’বছর ধরে ঘুরপথে বাস ও অন্যান্য যানবাহন চলছে। প্রতিনিয়ত চরম দুর্ভোগ সহ্য করতে হচ্ছে শহরবাসীকে। এ বার পুরভোটের প্রচারেও উঠে এসেছিল অসমাপ্ত উড়ালপুলের প্রসঙ্গ।
ব্যবসায়ীরা বাধা দিচ্ছেন কেন?
ঝাড়গ্রাম মেন রোড ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি সন্তোষ সোমানির দাবি, “মূল নকশায় বলা ছিল, উড়ালপুলের তলায় দু’পাশে তিন মিটার করে চওড়া সংযোগকারী রাস্তা থাকবে। বাস্তবে রেল ক্রশিংয়ের দক্ষিণ দিকে রায়তি জমিতে থাকা মেন রোডের ধারের দোকানগুলির গা-ঘেঁষেই উড়ালপুলটি তৈরি করা হয়েছে। এরপর মূল রাস্তার সঙ্গে উড়ালপুলটি সংযোগ করার জন্য গার্ড ওয়াল তৈরি করা হলে বেশ কিছু দোকান সম্পূর্ণ ‘অবরুদ্ধ’ হয়ে যাবে। মানুষও দুর্ভোগে পড়বেন। পণ্যবাহী গাড়িগুলি দোকানে ঢুকতে পারবে না। আগুন লাগলে দমকল ঢোকার মত পথ থাকবে কি-না সন্দেহ।”
শনিবার উড়ালপুলের কাজের অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা চলাকালীন ‘মেন রোড ব্যবসায়ী সমিতি’র প্রতিনিধিরা ‘ওয়াক-আউট’ করে বেরিয়ে যান। মহকুমাশাসক বলেন, “ব্যবসায়ী সংগঠনটি বাদে বৈঠকে উপস্থিত অন্য সকলেই অসমাপ্ত উড়ালপুলের কাজ দ্রুত শেষ করার পক্ষে মত দেন।” প্রশাসন সূত্রের খবর, ঝাড়গ্রামের উড়ালপুল নিয়ে অচলাবস্থা কাটাতে কয়েক দিনের মধ্যেই নবান্নে বৈঠকে বসছেন রাজ্য প্রশাসনের কর্তারা।
ঝাড়গ্রামের ‘ভাবী পুরপ্রধান’ তথা তৃণমূলের জেলা সাধারণ সম্পাদক দুর্গেশ মল্লদেব বলেন, “মানুষের চাহিদা উড়ালপুল। কেউ কেউ কাজ বন্ধ করার জন্য নানাভাবে অপচেষ্টা করছেন। রেল কর্তৃপক্ষ দায় এড়াতে পারেন না। কারা এসব করছেন তা পুরবাসী দেখছেন। পুরবোর্ড গঠনের পর আমরা উড়ালপুলের কাজ শেষ করার জন্য প্রয়োজনে পথে নামব।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.