|
|
|
|
সারদা কাণ্ডে সিবিআই তদন্ত চেয়ে কংগ্রেসের পদযাত্রা
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
সামনেই লোকসভার যুদ্ধ। তার আগে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে সুর চড়াতে শুরু করল কংগ্রেস। তৃণমূল সরকারের দুর্নীতির প্রতিবাদে রবিবার মেদিনীপুর শহর থেকে শুরু হল কংগ্রেসের ‘মুক্তির পদযাত্রা’। সারদা কাণ্ডে সিবিআই তদন্তের দাবিতেও সোচ্চার হন কংগ্রেস নেতৃত্ব। এ দিন পদযাত্রার সূচনা করেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি তথা সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্য। উপস্থিত ছিলেন এআইসিসি’র দুই নেতা শাকিল আহমেদ খান ও অরুণ যাদব-সহ প্রদেশ কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব। পশ্চিম মেদিনীপুর, পূর্ব মেদিনীপুর, হাওড়া জেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ১৩ ডিসেম্বর এই পদযাত্রা কলকাতায় পৌঁছবে। ওই দিন শহিদ মিনার ময়দানে এক সভা হবে।
রবিবার পদযাত্রা শুরুর আগে শহরের গাঁধীমূর্তির পাদদেশে এক সভা হয়। সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে রাজ্য সরকারের কড়া সমালোচনা করেন কংগ্রেস নেতৃত্ব। পাশাপাশি, সারদা কাণ্ডে সিবিআই তদন্তের দাবিতেও সোচ্চার হন তাঁরা। এআইসিসি নেতা শাকিল আহমেদ খান যেমন বলেন, “রাজ্যের তৃণমূল সরকার কেন্দ্রীয় প্রকল্পের অর্থ লুঠ করছে। কেন্দ্র কোটি কোটি টাকা পাঠালেও রাজ্য তা সঠিক ভাবে খরচ করছে না।” |
মেদিনীপুর শহরে শুরু মুক্তি পদযাত্রা। —নিজস্ব চিত্র। |
তাঁর কথায়, “সারদা কাণ্ডে সিবিআই তদন্ত চাই। আমরা ইতিমধ্যে এই দাবি তুলেছি। আগামীকাল (সোমবার) রাহুল গাঁধীর সঙ্গে আমার বৈঠক রয়েছে। তাঁর কাছেও এই দাবি জানাব। কুণাল ঘোষ তো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, মুকুল রায়দের নাম বলেছেন। কী ভাবছে সরকার? আর কতদিন অত্যাচার চলবে?” সাংসদ অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেন, “পরিবর্তনের ডাক দেওয়া হয়েছিল দুর্নীতির বিরুদ্ধে। কিন্তু, আমরা কী দেখছি? দুর্নীতি এখনও চলছে। পরিবর্তন যতক্ষণ না-হয়, সেটা ২০১৪ হতে পারে, ২০১৬ হতে পারে, ততক্ষণ পর্যন্ত মুক্তির পদযাত্রা চলবে।” সাংসদ তথা প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্য বলেন, “আমাদের এই কর্মসূচির মধ্য দিয়ে তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সোচ্চারিত হবে। কেন্দ্রের কর্মসূচি মানুষের কাছে পৌঁছবে। মানুষ জানতে পারবেন, কেন্দ্রের ঠিক কী কী কর্মসূচি রয়েছে।” এ দিন সভায় প্রাক্তন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি তথা বিধায়ক মানস ভুঁইয়া বলেন, “ক্ষুধা থেকে মানুষকে মুক্ত করতে হবে। খাদ্যের অধিকার কারও দয়া নয়। কারও করুণা নয়। কেন্দ্রের কংগ্রেস সরকার খাদ্যের অধিকারের ব্যবস্থা করেছে। এই অধিকারকে এই রাজ্যে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। খাদ্য সুরক্ষা আইন এই রাজ্যেও লাগু করতে হবে।”
সভায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রদেশ কংগ্রেস নেতা ওমপ্রকাশ মিশ্র, যুব কংগ্রেসের রাজ্য সভাপতি সৌমিক হোসেন প্রমুখ। কংগ্রেস নেতৃত্ব জানিয়েছেন, আগামী দিনে সারা বাংলাতেই পদযাত্রা হবে। প্রথম পর্যায়ে পশ্চিম মেদিনীপুর, পূর্ব মেদিনীপুর, হাওড়া, কলকাতাতে হচ্ছে। পরবর্তী সময় অন্য জেলাতেও এমন পদযাত্রা হবে। কেন মেদিনীপুর থেকেই এই কর্মসূচির সূচনা? পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা কংগ্রেস সভাপতি স্বপন দুবে বলেন, “মেদিনীপুর বিপ্লবের পীঠস্থান। মেদিনীপুরের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট বিবেচনা করেই দলীয় নেতৃত্ব এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। নেতৃত্বের এই সিদ্ধান্তে আমরা খুশি।” ২২৫ কিলোমিটার যাত্রাপথের পুরোটাতেই থাকবেন ১০১ জন কর্মী। তাছাড়াও যে এলাকার উপর দিয়ে পদযাত্রা যাবে, সেই এলাকার কর্মীরাও পদযাত্রায় সামিল হবেন। রবিবার দুপুরে এই পদযাত্রা খড়্গপুরের ইন্দা হয়ে গোলবাজারে দলীয় কার্যালয়ে এসে পৌঁছয়। শহরের চৌরঙ্গী থেকে পদযাত্রায় পা মেলান বিধায়র জ্ঞান সিংহ সোহন পাল, শহর কংগ্রেস সভাপতি অমল দাস, খড়্গপুরের পুরপ্রধান রবিশঙ্কর পান্ডে প্রমুখ। আজ, সোমবার পদযাত্রাটি পিংলার জামনার উদ্দেশে রওনা হবে। |
|
|
|
|
|