রোনাল্ডোহীন রিয়াল পেয়ে গেল ‘প্রিন্স অব গোলস’-কে
সাইডলাইন ঘেঁষে দৌড়চ্ছেন তিনি। মুষ্টিবদ্ধ হাত। কিছুক্ষণ পরেই সমর্থকদের উদ্দেশে তাঁর সেই বিখ্যাত ‘হার্ট শেপ’-এর ইঙ্গিত। যেন বলতে চাইলেন, ‘এ ভাবেই আমি তোমাদের হৃদয়ে থাকতে চাই।’
বের্নাবাওয়ে এক মায়াবি রাতেই ‘ওয়েলস উইজার্ড’ থেকে মাদ্রিদের ‘প্রিন্স অব গোলস’-এ উত্তরণ গ্যারেথ বেলের। শনিবার লা লিগায় রিয়াল ভালাদোলিদের বিরুদ্ধে হ্যাটট্রিকে। বিশ্বের সবচেয়ে দামি ফুটবলারের রিয়াল মাদ্রিদকে ৪-০ জয় এনে দেওয়ার সাক্ষী তখন বের্নাবাওয়ে নিজের প্রাইভেট বক্সে বান্ধবী ইরিনা শায়েক-সহ ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোও।
ক’দিন আগেও তো টটেনহ্যাম হটস্পার থেকে রেকর্ড ৮৫ মিলিয়ন পাউন্ডের ট্রান্সফার ফি-তে রিয়ালে যোগ দেওয়ার পর অনেকে প্রশ্ন তুলেছিলেন তাঁর যোগ্যতা নিয়ে। মরসুম শুরুর পারফরম্যান্স দেখে ‘পুরো অর্থটাই জলে গেল’ বলেছিলেন কেউ কেউ। হঠাৎ কী এমন হল যাতে রাতারাতি লা লিগায় দাপটের ঘণ্টাধ্বনি ছড়িয়ে দিচ্ছেন বেল? ম্যাচের পর উত্তরটা দিলেন রিয়াল কোচ কার্লো আন্সেলোত্তি, “নতুন পরিবেশ, নতুন ক্লাবে ওর মানিয়ে নেওয়ার পর্বটা শেষ হয়েছে। ভাল শেপে রয়েছে। আত্মবিশ্বাসী। আমাদের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ প্লেয়ার বেল।”

ম্যাচে হ্যাটট্রিক করে নায়ক গ্যারেথ বেল।
ব্রিটিশ কিংবদন্তি গ্যারি লিনেকারও রিয়াল কোচের সঙ্গে একমত। যাঁর ১৯৮৭ সালে লা লিগায় বার্সেলোনার হয়ে প্রথম ব্রিটিশ প্লেয়ার হিসেবে হ্যাটট্রিক রয়েছে। আড়াই দশক পর সেই রেকর্ড স্পর্শ করা বেলকে অভিনন্দন জানিয়ে লিনেকারের টুইট, “অভিনন্দন বেল। আমরা সবাই যেটা জানি ওর সম্পর্কে, সেটাই প্রমাণ করতে পারায় দারুণ লাগছে। ওর প্রতিভা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই।”
বিশেষজ্ঞদের মত, প্রাক্-মরসুমে টটেনহ্যাম থেকে রিয়ালে ট্রান্সফার নিয়ে টালবাহানায় বেলের প্রস্তুতিটাই ঠিকমতো হয়নি। এর মধ্যেই আবার ‘পেশির টান’ নিয়ে সমস্যায় মরসুমের প্রথম কয়েক’টা ম্যাচে নিজেকে মেলে ধরতে পারেননি তিনি। ফিটনেস ফিরে পেতেই নিজেকে প্রমাণ করতে মরিয়া হয়ে রয়েছেন রিয়াল তারকা। শনিবারের ম্যাচে চোট পাওয়া রোনাল্ডো না থাকা সত্ত্বেও প্রথমে হেড থেকে (৩৩ মিনিট) আর পরে দুই পায়েই গোলে (৬৪, ৮৯) দেখা তারই ঝলক। ১৩ ম্যাচে ৯ গোল, গোলের পাস ছ’টি। লা লিগায় নতুন সই করা কোনও ফুটবলারের এ রকম দাপট শেষ কবে দেখা গিয়েছে মনে করা যাচ্ছে না।
ম্যাচের পর হ্যাটট্রিকের বলটা দখল করে বেল নিজে যদিও বলছেন, “গোল করার আনন্দ তো থাকেই। কিন্তু ঘরের মাঠে হ্যাটট্রিকের আনন্দই আলাদা। এখন উন্নতি করছি। সব স্বপ্ন সত্যি হয়ে উঠছে। তিনটে গোল করেছি। আরও ভাল খেলতে পারি। আরও পরিশ্রম করব। রোনাল্ডোর মতো ‘সেরা’র কাছ থেকে শিখব। ও বিশ্বের সেরা প্লেয়ার। ব্যালন ডি’অর পাওয়ার যোগ্য।”

শনিবার ছিল তাঁর জন্মদিন। বের্নাবাওয়ে রিয়াল মাদ্রিদ-ভালাদোলিদ
ম্যাচ ‘কিক অফ’ করলেন দাবার বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ম্যাগনাস কার্লসেন।
তবে বেল যতই আলো ছড়ান না কেন, এখনই রোনাল্ডোর সঙ্গে তাঁর তুলনা করাটা বাড়াবাড়ি হবে মনে করছেন আলফ্রেডো ডি’স্তেফানোর মতো প্রাক্তন ফুটবলাররা। দেশ ও ক্লাবের হয়ে সাত ম্যাচে ইতিমধ্যেই ১৪ গোল করা সিআর সেভেন এখনও রিয়ালের ড্রেসিংরুম আর সমর্থকদের ‘নয়নের মণি’। কিংবদন্তি আর্জেন্তিনীয় তারকা বলেন, “এখনও বেল পুরোপুরি মাদ্রিদে মানিয়ে নিতে পারেনি। ইংল্যান্ডের লং পাসের স্টাইলের সঙ্গে ও অভ্যস্ত। কিন্তু স্পেনে বলটা ওকে পায়ে রাখতে হবে। ছোট পাসে খেলা শিখতে হবে।” বেলের সতীর্থ মার্সেলো বলেন, “দু’জনের মধ্যে তুলনার কোনও প্রয়োজন নেই। ক্রিশ্চিয়ানো সবার উপরে। টিমের সবাই সেটা জানে।”
আর্জেন্তিনায় চোটের শ্রশ্রূষার ফাঁকে লিও মেসি কি শুনছেন?

ছবি: রয়টার্স ও এএফপি।




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.