|
|
|
|
ডেবরা-সবং রাস্তা |
বৈঠক নিষ্ফলা, গ্রামবাসীর বাধায় থমকে সেতুর কাজ
নিজস্ব সংবাদদাতা • খড়্গপুর |
আলোচনা আগেই নিষ্ফল হয়েছিল। এ বার গ্রামবাসীদের বাধায় থমকে গেল ডেবরা-সবং সড়কের মাঝে সেতু গড়ার কাজ। ডেবরার বালিচকের কাছে গোদাবাজারে এই সেতুর কাজ হলে যাতায়াতের অসুবিধা হবে এই অভিযোগে গত এক সপ্তাহ ধরে কাজে আপত্তি জানাচ্ছিলেন এলাকার পূর্ব দিকের গ্রামের বাসিন্দারা। এখন তাঁদের অভিযোগ, যে জমিতে সেতু হচ্ছে, সেখানে রায়ত জমি আছে। সমস্যা সমাধানে শনিবার স্থানীয় বিধায়ক ও পূর্ত দফতরের আলোচনা হয়। তবে তারপরেও জট কাটেনি। পূর্ত দফতরের এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার তপন সাহা বলেন, “আমি বুঝিয়ে বলেছি, কিন্তু ওঁরা মানতে নারাজ। আগামী বুধবার জমি জরিপ করে দেখা হবে। তার পরে কী ভাবে করা কাজ, সেই চেষ্টা করা হবে।”
ডেবরা থেকে সবং যাওয়ার প্রায় ২৭ কিলোমিটার মূল রাজ্য সড়কটি দীর্ঘদিন ধরেই বেহাল। সংস্কার না হওয়ায় সড়কের মাঝের সেতুগুলিও বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে। বহুদিনের দাবি মেনে সড়ক সংস্কারের কাজে নেমেছে পূর্ত দফতর। সম্পূর্ণ সড়কের সংস্কার ও কয়েকটি সেতু গড়ার জন্য ১০৪ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। ডেবরার গোদাবাজারের কাছে পাস্তুফি খালের আগে থেকে একটি সেতু ছিল। কিন্তু তা আর সংস্কার করা সম্ভব নয় বলে ৭ মিটার চওড়া ও ৪২মিটার দীর্ঘ নতুন একটি সেতু তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বর্তমান সেতুর পূর্ব দিকে নতুন সেতুটি হওয়ার কথা। তবে সপ্তাহ খানেক ঠিকাদার সংস্থা কাজ শুরু করতেই গ্রামবাসীরা বাধা দেন।
গ্রামবাসীদের দাবি, পুরোনো সেতুর পূর্ব দিকে নতুন সেতু হলে পূর্ব দিকের ধুলিয়া, বারুনিয়া, বিরুনিয়া, রামপুর ডাডরা-সহ বহু গ্রামের মানুষ সমস্যায় পড়বেন। কারণ, পিংলার কালীতলার থেকে ওই সব গ্রামের সংযোগকারী মোরাম রাস্তাটি ডেবরা-সবং রাজ্য সড়কে গিয়ে মিশেছে। এতদিন ঘুরপথে রাজ্য সড়কে উঠত মোরাম রাস্তাটি। নতুন সেতু হলে মোরাম রাস্তাটি সরাসরি সেতুতে উঠবে। ফলে দুর্ঘটনাপ্রবণ হয়ে উঠবে বলে গ্রামবাসীদের আশঙ্কা। তাই তাঁদের দাবি, পুরোনো সেতু ভেঙে অথবা পশ্চিম দিকে নতুন সেতু গড়তে হবে।
স্থানীয় ধুলিয়া গ্রামের বাসিন্দা শেখ তাহের আলি, মির্জা আব্দুল মতলেবদের কথায়, “আমরা চাই সেতু হোক। তবে যে পরিকল্পনা রয়েছে, তাতে মোরাম রাস্তা সরাসরি ওই সেতুতে উঠবে। এতে দুর্ঘটনা বাড়বে। আবার পূর্ব দিকে জমিও কম। তাই আমাদের দাবি হয় পুরনো সেতু ভেঙে নতুন সেতু হোক। না হলে তা পশ্চিম দিকে তৈরি করা হোক।”
প্রস্তাবিত নতুন সেতুর লাগোয়া কিছু বাড়ির মালিকের আবার অন্য কারণে আপত্তি তুলেছেন। তাঁদের দাবি, আমিন দিয়ে জমি পরিমাপ করে দেখা গিয়েছে, পূর্ব দিকে সেতু হলে প্রায় ২১ ফুট অংশে বাড়ির মালিকেরা বিপাকে পড়বেন। কয়েকজনের রায়ত জমিও সেতুর কাজে চলে যাবে। গ্রামবাসীদের সমর্থন জানিয়েছেন স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বও। তৃণমূল ব্লক সভাপতি রতন দে বলেন, “ওই মোরাম রাস্তা সরাসরি সেতুতে উঠলে বিপদের আশঙ্কা বাড়বে। তা ছাড়া, নতুন সেতু পূর্ব দিকে হলে বহু মানুষের রায়ত জমি চলে যাবে। তাই জমি জরিপ করে কাজ করতে হবে।”
নতুন করে জমি জরিপের দাবিতেই শনিবার থেকে বন্ধ রয়েছে সেতু নির্মাণের কাজ। শনিবার স্থানীয় বিধায়ক রাধাকান্ত মাইতির সঙ্গে পূর্ত দফতরের আধিকারিকেরা আলোচনায় বসলেও রফাসূত্র বেরোয়নি। রাধাকান্তবাবু বলেন, “এলাকার মানুষের কিছু সমস্যা হচ্ছে। কিছু মানুষ তাঁদের রায়ত জমি রয়েছে বলেও দাবি করছেন। তাই ওই জমি জরিপ হওয়া প্রয়োজন। আশা করছি জমি জরিপ হলেই সমস্যা মিটবে। কাজও শুরু করা যাবে।” |
|
|
|
|
|