এক গৃহবধূর গায়ে পেট্রোল ঢেলে পুড়িয়ে মারার অভিযোগ উঠল স্বামী ও শাশুড়ির বিরুদ্ধে। রবিবার, হাওড়ার বাঁকড়া থানা এলাকার শরৎ পল্লির ঘটনা। অভিযোগের ভিত্তিতে স্বামী ও শাশুড়িকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাঁদের বিরুদ্ধে ওই বধূকে খুনের অভিযোগ দায়ের করে মামলা রুজু হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতার নাম টুম্পা মল্লিক (৩৬)। বাড়ি শরৎ পল্লি এলাকায়।
পুলিশ জানায়, আট বছর আগে টুম্পার বিয়ে হয় শরৎ পল্লিরই বাসিন্দা বিপ্লব মল্লিকের সঙ্গে। তাঁদের পাঁচ বছরের এক মেয়ে আছে। টুম্পার বাপের বাড়ির লোকদের অভিযোগ, বিয়ের পর থেকে দেনাপাওনা নিয়ে টুম্পা ও বিপ্লবের মধ্যে প্রায় অশান্তি হত। টুম্পাকে চাপ দিয়ে টাকা আদায় করা হত। আরও অভিযোগ, সম্প্রতি বিপ্লব ও তাঁর মা রেখা মল্লিক জোর করে ২ লক্ষ টাকা, একটি এলসিডি টিভি এবং অন্য দামি জিনিস আদায় করেন। তা নিয়েও স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে অশান্তি চলছিল। টুম্পার কাকা অনন্ত মল্লিক বলেন, “রবিবার মেয়েকে স্কুলে ভর্তি করা নিয়ে টুম্পা ও বিপ্লবের অশান্তি হয়।” এর পরেই বিপ্লব এবং রেখা টুম্পাকে ছাদে ডেকে নিয়ে গিয়ে তাঁর গায়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন দেন বলে অভিযোগ। টুম্পার মুখ বেঁধে দেওয়া হয়। ছাদের দরজায় তালা দিয়ে পালানোর চেষ্টা করেন বিপ্লব এবং তার মা।
ওই দু’জনকে পালাতে দেখে স্থানীয় বাসিন্দাদের সন্দেহ হয়। তাঁরা দু’জনকে ধরে ফেলেন। খবর যায় পুলিশে। ছাদে উঠে প্রতিবেশীরা দেখেন, সম্পূর্ণ দগ্ধ অবস্থায় পড়ে রয়েছেন টুম্পা। উত্তেজিত জনতার রোষ গিয়ে পড়ে বিপ্লব ও রেখার উপরে। তাঁদের বেধড়ক মারধর শুরু করে তারা। বিপ্লবদের বাড়িতে ঢুকে চলে ব্যাপক ভাঙচুর। প্রায় শ’খানেক বাসিন্দা আসবাবপত্র, আলমারি, আলো-পাখা ভেঙে তছনছ করেন। জনতাকে সামলাতে হিমশিম খায় পুলিশ। পরে বাঁকড়া ফাঁড়ি থেকে বিশাল বাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি আয়ত্তে আনে। টুম্পার দেহ ময়না তদন্তে পাঠানো হয়। হাওড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) সুখেন্দু হীরা বলেন, “ওই বধূর বাপের বাড়ির লোকদের অভিযোগের ভিত্তিতে তাঁর স্বামী ও শাশুড়ি গ্রেফতার হয়েছেন। তাঁদের বিরুদ্ধে বধূ খুনের অভিযোগ দায়ের করে মামলা রুজু করা হয়েছে।” |