প্রাথমিকের মার্কশিট অমিল, বিপাকে পড়ুয়া
ছাত্র-ছাত্রীরা পরীক্ষা দিচ্ছে। কিন্তু মার্কশিট হাতে পাচ্ছে না। চিত্রটি হাওড়া জেলার। প্রাথমিক স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের বছরে তিন বার পরীক্ষা দিতে হয়। ইতিমধ্যে এপ্রিল এবং অগস্ট মাসের দু’টি পর্যায়ের পরীক্ষা তারা দিয়ে ফেলেছে। কিন্তু ওই দু’টি পরীক্ষার মার্কশিট তারা হাতে পায়নি।
কেন এই অবস্থা? জেলা প্রাথমিক স্কুল সংসদ সূত্রে জানা গিয়েছে, শিক্ষাবর্ষের গোড়াতে অর্থাৎ জানুয়ারি মাসেই ছাপানো মার্কশিট স্কুলগুলিতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। একটি মার্কশিটেই থাকে তিনটি পরীক্ষার ফলাফল জানিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা। সেই হিসাবে প্রতিটি পর্যায়ে পরীক্ষার শেষে ছাত্র-ছাত্রীরা যে নম্বর পায় তা মার্কশিটে হাতে লিখে তা তুলে দেওয়া হয় তাদের হাতে। কিন্তু এ বছর সেই মার্কশিট সংসদ স্কুলগুলিতে পাঠায়নি। তার ফলেই ঘটেছে বিপত্তি।
প্রাথমিক স্কুলগুলিতে প্রথম পর্যায়ের পরীক্ষা হয়েছে এপ্রিল মাসে। দ্বিতীয়টি হয়েছে অগস্ট মাসে। ডিসেম্বর মাসের ৯ তারিখ থেকে শুরু হওয়ার কথা তৃতীয় বা চূড়ান্ত পর্যায়, যা বাৎসরিক পরীক্ষা নামে পরিচিত। সংসদ থেকে ছাপানো মার্কশিট এসে না পৌঁছানোয় এপ্রিল ও অগস্ট মাসের প্রথম দু’টি পর্যায়ের ফলাফল লিখিত ভাবে ছাত্র-ছাত্রীদের হাতে তুলে দেওয়া যায়নি।
জেলায় প্রাথমিক স্কুলের সংখ্যা প্রায় ২২০০। সর্বত্র একই অবস্থা। প্রতিটি স্কুল থেকেই প্রায় প্রতিদিন সংসদের কাছে মার্কশিট পাঠানোর জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে। এই মার্কশিটে শুধুমাত্র ছাত্র-ছাত্রীরা কোন বিষয়ে কত নম্বর পেয়েছে সেটাই দেওয়া থাকে না, তারা কতদিন স্কুলে এসেছে, তাদের আচরণবিধি কেমন ছিল, মোট কতদিন পঠন-পাঠন হয়েছে সেই সব তথ্যও থাকে। মার্কশিট হাতে পেলে তাঁদের বাড়ির ছেলেমেয়েদের পঠন-পাঠন সংক্রান্ত একটা প্রাথমিক রূপরেখা পান।
বাগনানের একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষক বলেন, “আমি মুখেই ছাত্র-ছাত্রীদের নম্বর জানিয়েছি। বাকি তথ্য জানানো যায়নি। অভিভাবকেরা স্কুলে মার্কশিট চাইতে এলে তাঁদের উত্তরপত্র দেখিয়ে দিচ্ছি। কিন্তু এটা তো কোনও পদ্ধতি নয়।” উলুবেড়িয়ার একজন প্রধান শিক্ষক বললেন, “খাতায় ছাত্র-ছাত্রীদের নম্বর লিখে রেখেছি। যদি মার্কশিট পাঠানো হয় বাৎসরিক পরীক্ষার প্রতিটি পর্যায়ের নম্বর ওই মার্কশিটে তুলে দেওয়া হবে।”
শিক্ষকদের একাংশের আবার আশঙ্কা, বাৎসরিক পরীক্ষার ফলাফল বেরোনোর আগেও যদি মার্কশিট না-পাওয়া যায় তা হলে চতুর্থ শ্রেণিতে উত্তীর্ণ ছাত্র-ছাত্রীরা তো পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তিই হতে পারবে না। শ্যামপুরের একজন প্রধান শিক্ষক বললেন, “হাইস্কুলগুলি তো আর সাদা কাগজে লেখা ফলাফল গ্রাহ্যই করবে না!”
শিক্ষকদের এই আশঙ্কার কথা অবশ্য উড়িয়ে দিয়েছেন সংসদের সভাপতি পুলক দেব। তাঁর দাবি, “মার্কশিট ছাপিয়ে সদ্য আমাদের হাতে এসেছে। তা স্কুলগুলিতে পাঠানো হচ্ছে। বাৎসরিক পরীক্ষার আগেই জরুরিকালীন ভিত্তিতে সেগুলি পাঠানোর কাজ চলছে।” কেন এই দেরি? সে বিষয়ে অবশ্য কিছু বলেননি পুলকবাবু। তিনি বলেন, “আমি অগস্ট মাসে দায়িত্ব নিয়েছি। তাই আগে কেন এটা যায়নি তা জানি না।” তাঁর আগে যিনি সংসদ সভাপতি ছিলেন, সেই অজয় ভট্টাচার্য এখন তৃণমূল পরিচালিত হাওড়া জেলা পরিষদের সহ সভাধিপতি। তিনি বলেন, “আমি মে মাসে পদত্যাগ করি। এ বিষয়ে কিছু বলতে পারব না।”





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.