দিল্লি দখলে বিজেপির ভরসা মোদী, কংগ্রেসের বাজি শীলা
ক দিকে রাজধানীতে নরেন্দ্র মোদীর ভিড়-টইটম্বুর সভা। অন্য দিকে কখনও রাহুল গাঁধী বা প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের সভা হওয়ার কথা থাকলেও হচ্ছে না! আর এই দুই ছবির হাত ধরেই দিল্লিতে দলের ডুবন্ত নৌকাকে ভাসাতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন নরেন্দ্র মোদী। ১৫ বছর পরে ফের দিল্লির গদি দখলের স্বপ্ন দেখছে তাঁর দলও।
পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে মিজোরামে জয়ের কথা স্বপ্নেও ভাবেন না বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব। বাকি চারের মধ্যে তিনটিতে জয়ের সম্ভাবনা নিয়ে নিশ্চিত হলেও দিল্লি চিন্তায় রেখেছে দলকে। গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ও শীলা দীক্ষিত এই দুই কাঁটাই ভাবাচ্ছে তাদের। সেটা কাটাতে মোদীই ভরসা দলের। মোদীও দিল্লিতে দলের হাল ফেরাতে শেষ লগ্নে দায়িত্ব নিয়েছেন। উত্তরপ্রদেশ থেকে ঘনিষ্ঠ অমিত শাহকে এনেছেন দিল্লিতে। একের পর এক সভাও করছেন। তার মধ্যেই মোদীর হাতে নয়া অস্ত্র এসেছে শনিবার দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রীর সভা বাতিল হওয়ায়। গত কাল পশ্চিম দিল্লিতে মনমোহনের সভা হওয়ার কথা ছিল। স্টেডিয়ামও বুক হয়ে যায়। কিন্তু দু’দিন আগে প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয় থেকে জানানো হয়, ‘ব্যস্ততা’র কারণে সভা করতে পারবেন না তিনি।
স্বাভাবিক ভাবেই এটাকে কাজে লাগাতে মরিয়া বিজেপি। গত কালই দিল্লিতে মোদী পরপর তিনটি বড় সভা করেছেন। সেখানে অরুণ জেটলি বলেন, “ক’দিন আগে দিল্লিতে রাহুল গাঁধীর সভায় ময়দান খালি পড়ে ছিল। তার পর থেকে আর কোনও সভা করেননি রাহুল। আজ দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রীর সভা হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু মোদীর সভার সঙ্গে যাতে তুলনা না টানা হয়, তাই সেটিও বাতিল করা হল।” জেটলির কটাক্ষ, “হারের ভয়ে কংগ্রেসের কোনও বড় নেতাই দিল্লিতে সভা করতে চাইছেন না।” বিষয়টি নিয়ে কংগ্রেসকে নিশানা করতে ছাড়েননি মোদীও। বলেন, “কংগ্রেসের তাবড় নেতারা মধ্যপ্রদেশ, ছত্তীসগঢ়, রাজস্থানে গিয়ে মিথ্যা বলে জনতাকে বোকা বানানোর চেষ্টা করছেন। কিন্তু দিল্লিতে জনতার মুখোমুখি হতে তাঁদের বাধছে। কারণ, দিল্লির জনতা তাঁদের চিনে গিয়েছেন।” রাহুলকেও বার্তা দিতে ছাড়েনি বিজেপি। ক’দিন আগে দিল্লির যে অম্বেডকর নগরে জনতা রাহুল গাঁধীর বক্তৃতার মধ্যেই সভা ছেড়ে যান, সেখানে পরে বড় সভা করেছেন মোদী। সেখানে বিজেপির এক নেতার কটাক্ষ, “এর থেকে কংগ্রেস বুঝছে জনতা কাকে চায়।”
রাহুলের সভায় জনতার উঠে যাওয়া এবং প্রধানমন্ত্রীর সভা বাতিল নিয়ে অস্বস্তিতে কংগ্রেস। প্রধানমন্ত্রীর সভা বাতিলের কারণ হিসেবে দলের নেতা শাকিল আহমেদ জাপানের সম্রাটের ভারত সফরের কথা বলেছেন। একই সঙ্গে তাঁর কটাক্ষ, “দিল্লির ফল বেরোলেই দেখা যাবে, বিজেপির কত ধানে কত চাল!”
বিজেপি নেতৃত্ব যে সেটা জানেন না, তা নয়। বিশেষ করে দলের গোষ্ঠীকোন্দলে স্বস্তিতে নেই তাঁরা। তাই শেষ বাজারে দিল্লির আনাচে কানাচে সভা করতে আসতে হয়েছে মোদীকে। বিজেপি নেতারা বিলক্ষণ জানেন, দিল্লি বিধানসভা হাতছাড়া হলে তার প্রভাব পড়বে লোকসভাতেও। বিজেপি নেতা বেঙ্কাইয়া নায়ডুও স্বীকার করেছেন, “নেতাদের কোন্দলে দিল্লিতে হর্ষবর্ধনকে মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী ঘোষণা করায় দেরি হয়ে গিয়েছে। তার ওপর বিজেপির ভোটে থাবা বসাচ্ছেন অরবিন্দ কেজরিওয়াল।”
কংগ্রেস নানা অস্বস্তির মধ্যেও দিল্লিতে কিছু ব্যাপারে নিশ্চিন্তে। একে তো শীলা দীক্ষিতকেই সামনে রেখে লড়ছে তারা। তা ছাড়া গোষ্ঠী কোন্দলের ছায়াও নেই। দলের নেতাদের বক্তব্য, বিধানসভা ভোট স্থানীয় বিষয়ের নিরিখে হয়। দিল্লিতেও শীলাই দলের মুখ। মনমোহন বা রাহুল বড় ফ্যাক্টর নন। দল জিতলে শীলার জয়। হারলেও দায় শীলার। রাহুলের বক্তৃতার মধ্যে জনতার চলে যাওয়া নিয়েও কংগ্রেসের অভ্যন্তরীণ বৈঠকে কথা হয়েছে। দলের অন্দরে বলা হচ্ছে, দিল্লিতে, যেখানে কংগ্রেস ১৫ বছর ধরে ক্ষমতায় রয়েছে, সেখানে রাহুলের পক্ষে আক্রমণাত্মক বক্তৃতা দেওয়া সম্ভব ছিল না। তাই জনতার কাছে রাহুলের বক্তব্য দাগ কাটেনি। কিন্তু শীলা দীক্ষিত প্রতিটি কেন্দ্রে সফর করেছেন। কংগ্রেসকে তা বাড়তি সুবিধা দেবে। ফলে বিজেপি যতই মোদী বা অমিত শাহকে প্রচারে নামাক, বিশেষ সুবিধে হবে না।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.