পুরসভার ক্ষমতাসীন জোট থেকে সমর্থন প্রত্যাহারের পরেই আসানসোলে ভাঙন ধরেছিল কংগ্রেসে। সাত কাউন্সিলর দল ছেড়ে বেরিয়ে তাদের দলে যোগ দেওয়ায় সেখানে পুরবোর্ডে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে গিয়েছে তৃণমূল। কালনা পুরসভায় ক্ষমতাসীন জোট থেকে সমর্থন না তুললেও ভাঙন ধরেছে কংগ্রেসে। খোদ উপ-পুরপ্রধান কংগ্রেস ছেড়ে যোগ দিয়েছেন তৃণমূলে। ফলে, পুরবোর্ডে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা থেকে এখন মাত্র একটি আসন কম রয়েছে তৃণমূলের। তবে ক্ষমতাসীন জোট থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করা হবে কি না, সে ব্যাপারে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানাচ্ছেন কালনার কংগ্রেস নেতারা।
২০১০ সালে ১৮ আসনের কালনা পুরসভায় তৃণমূল ৭টি, কংগ্রেস ৫টি ও বামেরা ৬টি দখল করে। বোর্ড গড়ে কংগ্রেস-তৃণমূল জোট। পুরপ্রধান পদ পায় তৃণমূল, উপ-পুরপ্রধান কংগ্রেস। বছর দেড়েক আগে কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেন পুরসভার পূর্ত বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কাউন্সিলর সুনীল চৌধুরী। তৃণমূল সূত্রের দাবি, শনিবার উপ-পুরপ্রধান দেবপ্রসাদ বাগ কলকাতায় তৃণমূল ভবনে গিয়ে তাদের দলে যোগ দিয়েছেন। তাঁর সঙ্গে যোগ দিয়েছেন প্রাক্তন কাউন্সিলর বিনয় দত্ত।
উপ-পুরপ্রধানের দলত্যাগ নিয়ে অবশ্য ভিন্ন সুর শোনা গিয়েছে তৃণমূলেরই একাংশের মুখে। তাদের দাবি, এখনও আনুষ্ঠানিক ভাবে দেবপ্রসাদবাবুর তৃণমূলে যোগদান এখনও আটকে রয়েছে। যদিও শহরের তৃণমূল নেতা অঞ্জন চট্টোপাধ্যায় বলেন, “শীর্ষ নেতৃত্বের উপস্থিতিতেই আমাদের দলে যোগ দিয়েছেন দেবপ্রসাদবাবু। দলত্যাগের বিষয়টি তাঁকে শীঘ্রই জেলাশাসককে চিঠি দিয়ে জানিয়ে দেওয়ার পরামর্শও দিয়েছেন শীর্ষ নেতারা।”
এই পুরসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে প্রয়োজন ১০টি আসন। উপ-পুরপ্রধানের দলবদলের পরে তৃণমূলের দখলে রয়েছে ৯টি। দেবপ্রসাদবাবুর দাবি, কংগ্রেসেরই আর এক কাউন্সিলর তৃণমূলে যোগ দিতে আগ্রহী। শনিবার তা তৃণমূল নেতৃত্বকে জানিয়ে দেওয়ারও কথা ছিল ওই কাউন্সিলরের। তবে তা হয়নি। ওই কাউন্সিলর যোগ দিলেই তৃণমূল পুরসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করবে বলে আশাবাদী উপ-পুরপ্রধান।
উপ-পুরপ্রধান তৃণমূলে যাওয়ায় শহরে কংগ্রেস কতটা শক্তি হারাল সে প্রশ্নে কালনার কংগ্রেস নেতা লক্ষ্মণ রায়ের বক্তব্য, “যে কোনও ব্যক্তিরই দলত্যাগের স্বাধীনতা রয়েছে। উপ-পুরপ্রধান দল ছাড়ায় কতটা প্রভাব পড়ল তা ভবিষ্যতে বোঝা যাবে।” পুরসভার কংগ্রেস কাউন্সিলর আনন্দ দত্ত আবার বলেন, “উনি আনুষ্ঠানিক ভাবে দলত্যাগ করেছেন কি না, তা এখনও পরিষ্কার নয়। আগে সেটা স্পষ্ট হওয়া দরকার।” তবে পুরবোর্ড থেকে সমর্থন প্রত্যাহারের প্রশ্নে লক্ষ্মণবাবু বলেন, “এখনও এ ব্যাপারে কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। দলের বৈঠকে ঠিক করা হবে।”
|