|
|
|
|
|
|
স্বপ্নময় চক্রবর্তী |
তখনও কেটারিং আসেনি। বিয়ের ভোজে ডাঁটিওয়ালা বেগুন ভাজা, ছ্যাঁচড়া, কাশ্মীরি না হয়ে যাওয়া আলুর দম। বাড়ির লোকজন বাজার করত, হালুইকর রান্না করত, কোমরে গামছা বেঁধে ঘোঁতন, নিতাই, জগারা ‘আর দুটো লুচি দিই’ করত, আর অমিতাভ, পার্থ, শুভময়রা পাড়ার মেয়েগুলোকে বিয়ে করে নিয়ে যেত। সেই সময়ের এক জন রান্নার বামুনের নাম পঞ্চাদা। আমাদের পাড়ার যাবতীয় ভোজ-কান্ডারি। ভোজের মেনু তৈরি হচ্ছে, পঞ্চাদার উপদেশ: ‘একটু পোলাও করে নিন দাদা। ডালডা মেরে এমন বানিয়ে দেব যে একদম মুখ মেরে দেবে। মাছ-মিষ্টি বেশি টানতে পারবে না।’ একটু দুর্বল গৃহস্থকে পঞ্চাদা অভয় দিত ‘আরে আমি তো আছি, কিচ্ছু ঘাবড়াবেন না। মাংসটা একটু রেখে সেদ্ধ করব, বেশি টানতে পারবে না। দশ কেজিতেই আপনার সোয়াশো লোকের হয়ে যাবে।’ ‘রেখে সেদ্ধ’ মানে কম করে সেদ্ধ। পাতে রসগোল্লা ছাড়ার আগে দু’মুঠো করে বোঁদে ছেড়ে দেওয়ার উপদেশ দিত পঞ্চাদা। সেই বোঁদে কড়া রসে ফেলা। এটা সন্দেশ-রসগোল্লা বাঁচানোর কায়দা। তখন মানুষ নেমন্তন্নবাড়িতে গিয়ে খেত খুব। ২০-২৫ পিস মাছ খানেওয়ালার সংখ্যা কম ছিল না। একটা বিয়েতে ৪০ জন বরযাত্রী আসার কথা ছিল, এল ৮০ জন। পঞ্চাদা ত্রাতা। এমন একটা বরযাত্রী
স্পেশাল চপ ভেজে দিল, সবাই চেয়ে চেয়ে তিন-চারটে করে খেয়ে নিল, আর মাছ-মাংসে টান পড়ল না।
|
ছবি: ওঙ্কারনাথ ভট্টাচার্য। |
সত্তরের দশকেই ছ্যাঁচড়া যুগের পতন শুরু। বিয়েবাড়ি থেকে ছ্যাঁচড়া, লাফরা (বাঙালরা বলে লাবড়া), শাক ভাজা, বেগুন ভাজা ইত্যাদি উঠে গেল। ফিশ ফ্রাইটা আগেই এসেছিল, ক্রমশ ফিশ বাটার ফ্রাই, ফিশ ওরলি, চিলি চিকেন, চিকেন মাঞ্চুরিয়ান, মাটন ভিন্ডালু নানা দেশের নানা পদ বাঙালির ভোজ-মেনুতে ঢুকে যেতে লাগল। প্রোমোটিং-এর মতো কেটারিং শব্দটাও বাংলা শব্দভাণ্ডারে শুধু নয়, বাংলা সংস্কৃতিতেও ঢুকে গেল। আশির দশকের মাঝামাঝি থেকেই পঞ্চাদা শেতলা পুজোর খিচুড়ি বানানো টাইপের কাজ ছাড়া অন্য কাজ পেত না। রোয়াকে বিরস বদনে বসে থাকত। আমাদের দেখলে বলত, পাঁচটা টাকা দিয়ে যা বাপ। তোদের মুখেভাতে রেঁধেছি, তোদের কাকা-পিসিদের বিয়েতেও রেঁধেছি। তোরা এখন বে-থা করছিস, আমায় ডাকিস না। ক্যাটারারগুলো কি রাঁধতে জানে? ওরা তো বোতলে ভরা সস আর প্যাকেটে ভরা মশলা দিয়ে রাঁধে। নিজেরা স্বাদ বার করতে পারে? আমি পারি। ছানার কোপ্তা করে দেব। রবারের মতো পনির নয়, ছানার ভিতরে রস ঢুকে থাকবে। এমন মুগডাল রাঁধব, বাতাস বলে দেবে হ্যাঁ, মুগডাল হচ্ছে। আমি পঞ্চা ঠাকুর, আমি মানুষের মুখে রুচি আনতে পারি। আর ক্যাটারারগুলোর তো মুখ মারার ধান্দা। লোকে যত কম খাবে, ওদের তত লাভ।
ফতুয়ার পকেট থেকে একটা মেনু বের করল পঞ্চাদা। রামধনু কেটারার। প্রোঃ বিমল সাধুখাঁ।
ওপেনিং সং—বেবি নান। সংগতে—ছোলে কিমা। ব্রেক ডান্স—ফিশ ওরলি। কি-বোর্ড—গ্রিন স্যালাড, পপ গায়িকা—চিকেন মাঞ্চুরিয়ান। গজল—মাটন বিরিয়ানি। অতিথি শিল্পী—রায়তা। কৌতুকশিল্পী—প্লাস্টিক চাটনি। উদাস বাউল—পাঁপড়... ইয়ারকি হচ্ছে, অ্যাঁ? খাবারের আইটেম নিয়ে ছেলেখেলা? গজল গাইছে বিরিয়ানি? বিমল সাধুখাঁ বিরিয়ানির জানেটা কী? সা-জিরে দেখেছে কখনও? কোন আইটেমে কাবাবচিনি কতটা গুঁড়ো করতে হয় জানে? ও তো রঙের মিস্ত্রি ছিল। আমি তিন পুরুষের হালুইকর। আমার ঠাকুরদা এসেছিল বালেশ্বর থেকে। ঠাকুরদার বাপ মন্দিরে ভোগ রাঁধত। আমার রক্তে জিরা-লংকা-মেথি-হলুদ। তোর বিয়ে হল, আমায় ডাকিসনি। পঞ্চু মাঞ্চু করতে পারে না, তাই না? মাঞ্চু আমিও বানাব।
পঞ্চাদা ওই সব মাঞ্চুরিয়ান, বেবি নান, চিকেন মেক্সিকান শেখার জন্য সাধুখাঁদের তেল দিয়েছে, ওরলি-মাঞ্চুরিয়ান সমন্বিত বিয়েবাড়িতে অযাচিত ঢুকে গলাধাক্কাও খেয়েছে, কখনও চেখে দেখেছে। আসলে পঞ্চাদা বুঝতে চেয়েছিল এই সব খাদ্যের সৃষ্টিরহস্য। বাড়িতেও চেষ্টা করেছে এ সব বানাতে।
আমাদের বলেছে, আরে, মাঞ্চুরিয়ান তো আসলে মাংসের বড়ার ঝোল। মাংসর কিমায় একটু আটা-ময়দা মিশিয়ে বড়া বানিয়ে ঝোল করে দিতে পারব না? সব পারব আমি। দে না মাইরি আমাকে কাজ। একটা ছোটখাট কাজ পেয়েছিল পঞ্চাদা, আমার এক বন্ধুর ম্যারেজ অ্যানিভার্সারিতে। কিন্তু মাঞ্চুরিয়ানগুলো ভেঙে ভেঙে গেল। পঞ্চাদাকে শুনতে হল, এ সব তোমার কম্ম নয়। তুমি হলে কুমড়োর ঘ্যাঁট আর মুগের ডাল জমানার পাবলিক। বৃদ্ধাশ্রমে রান্নার কাজ দেখোগে যাও।
এর মাসখানেকের মধ্যেই পঞ্চাদার রক্তাক্ত দেহ পাওয়া যায়। একটি বিয়েবাড়ির রান্নার জায়গাটার উপরে একটা বড় মাপের ঘুলঘুলি ছিল। ঘুলঘুলির তলায় কার্নিস। কার্নিস ভেঙে পঞ্চাদা পড়ে যায়। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সময় পঞ্চাদা বিড়বিড় করছিল, ‘কর্ণ-কর্ণ-কর্ণ। কর্ণ মু ভুলিবিনি। হা কুন্তী হা মাতঃ, রক্ষা কর, রক্ষা কর। কর্ণ কহিছন্তি কর্ণ নামটা ভুল হবনি ম...।’
মাতৃভাষায় স্বগত কথা পঞ্চাদার। মাথায় হেমারেজ হয়েছিল। দু’দিন পর পঞ্চাদা মারা যায়।
পরে বুঝেছি, ঘুলঘুলি দিয়ে ও আধুনিক খাদ্য নির্মাণ কৌশল দেখছিল। মাঞ্চুরিয়ান বানাবার সময় কেউ হয়তো বলেছিল কর্নফ্লাওয়ারটা মেশাও। ওই নামটা ভুলতে চায়নি। শিরা ছিঁড়ে রক্ত যখন মাথার ভিতরে গ্লোবালাইজ্ড হয়ে যাচ্ছিল, ও ফেলে আসা যাত্রাপালার কর্ণ নাম জপছিল। আসলে কর্নফ্লাওয়ার। |
|
সুমিত্র বসাক |
|
• রাতে পাইপ বেয়ে প্রেমিকার টঙের ঘরে। সবে রোমিয়ো-জুলিয়েট শুরু হবে, দরজায় বোনের ধাক্কা,
আবদার: আজ দিদির কাছে শোবে। অগত্যা হোলনাইট আপনি খাটের তলায়। |
|
|
• ক্যাশ কাউন্টারগুলোয় অজগর-লাইন। শুধু একটারই সামনে
মাত্র এক জন। ছুট্টে তাঁর পিছনে দাঁড়ালেন, তার পর দেখলেন,
তিনি একাই ১০০ জনের শপিং সেরেছেন। অন্য লাইনের লোক
যখন বাড়িতে গড়াচ্ছে, আপনি কোমর টাটিয়ে ঠায় দাঁড়িয়ে। |
• আশ্চর্য প্রদীপ কুড়িয়ে পেলেন। একটু ঘষতেই বেরিয়ে
এল ‘জিন’। বললেন, নিউ এজ বাংলা ফিল্মে একটা
চান্স করে দাও, প্লিজ। জিন খেঁকিয়ে বলল, আরে,
এ সব আমি পারি নাকি? যাও, রজতাভ দত্ত-কে গিয়ে বলো! |
|
|
|
|
• কেরলে মলয়ালম চলচ্চিত্রাভিনেতা অনুপ চন্দ্রন পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হলেন, যুব কংগ্রেস-এর একটি অনুষ্ঠান চলাকালীন হেসে ফেলার জন্য। নিতান্ত হাস্যকর মনে হলেও, সত্যি ঘটনা। সভাস্থল তাঁর বাড়ির কাছেই হওয়ায় অনুপ দর্শকাসনে এসে বসেছিলেন, মঞ্চে বক্তা বিশেষ একটি সরকারি প্রকল্পকে ‘বিশ্বের সেরা প্রকল্প’ বলে চেল্লালে তিনি হেসে ফেলেন। তাতেই বিপত্তি, পার্টিকর্মীদের গন্ডগোল এবং পুলিশ কর্তৃক অভিনেতাকে গ্রেপ্তার। কৌতুকাভিনেতা অনুপ বলেছেন তিনি আদৌ বক্তাকে ভেঙচাননি, কাঁচকলা বা বক দেখাননি, কোনও কমিক সিন ক্রিয়েট করেননি। হো হো হাসিটি তাঁর এক্কেবারে ‘ন্যাচ্রাল’ প্রতিক্রিয়া। সে জন্য হাতকড়া? অ্যাদ্দিন দেখা গিয়েছিল, ফেসবুকে কার্টুন তো দোরগোড়ায় পুলিশের পল্টুন, নেতা-মন্ত্রীকে লাইভ সভায় অপ্রিয় প্রশ্ন তাক তো মুন্ডুতে মাওবাদী-ট্যাগ। এ বার অ্যাডিশন: রাজনৈতিক সভা-সমাবেশে ভক্ত-ঠোঁটে ‘নো স্মাইল প্লিজ’ তালা। শ্রেষ্ঠ রামগরুড়ের ছানা পাবেন শ্রেষ্ঠ সমর্থক, বেস্ট ক্যাডার মেডেল। অসম্ভব সব প্রমিস-উপমা-বুকনি মঞ্চ থেকে উড়ে আসুক, আপনার হিহি-ফিকফিক-খ্যাঁকখ্যাঁকের গোড়ায় লিউকোপ্লাস্ট। হাস্যকর যত না, ভয়ংকর ততোধিক। একুশ শতকের ভারতেই খলবলাচ্ছে একুশে আইন, তালিবানি ফতোয়ার আঁচ পেতে আর আফগানিস্তান ছুটতে হবে না। হাসলেই ফাঁসলে!
• আফগানিস্তানে পেনাল কোড-এ ফিরছে ব্যভিচারের শাস্তি যা ছিল তালিবানি আমলে: পাথর ছুড়ে হত্যা। তালিবান-রাজ খতমের এক যুগ অতিক্রান্ত, ব্যাগ গুছিয়ে বাড়ি যাচ্ছে পশ্চিমি সেনা, ছন্দে ফিরছে কাবুলিওয়ালার দেশ। ঠিক তক্ষুনি ঢেঁড়া: ব্যভিচারে অভিযুক্ত প্রমাণিত হলে, জনচারেক সাক্ষী মিললেই অনিবার্য শাস্তি: অবিবাহিত হলে জোড়া পাপিষ্ঠকে একশো ঘা চাবুক, বিবাহিত হলে পাথর ছুড়ে মেরে ফেলা, জনসমক্ষে। স্মার্টফোন-মঙ্গলাভিযান-টি টোয়েন্টির এই দুনিয়ার কোত্থাও এ জিনিস ‘আইন’ হচ্ছে, আর তা লাগু করছে হদ্দ রিগ্রেসিভ খাপ পঞ্চায়েত নয়, দেশের সরকার, বিশ্বাস হয়? এ ক্ষেত্রে অপরাধীর আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগই নেই। মানে, পাথর ছুড়ে আসলে মারা হচ্ছে
যুক্তি-ন্যায়-সুবিচারকেই। মানে, তফাত নেই বিন লাদেন আর কারজাইয়েও। কেউ গুঁড়োন আকাশচুম্বী দালান, কেউ মানবাধিকারের খিলান।
ত্রাস-আতঙ্কের স্টিমরোলারে দলে-পিষে মানুষকে রিভার্স গিয়ারে ঠেলে দেওয়াই লক্ষ্য। অচিরেই হয়তো রিপিট: মেয়েদের পড়াশোনা বা একা বাইরে পা ব্যান্ড, পুরুষের দাড়ি মাস্ট। কতটা পা পিছোলে তবে শিক্ষে পাওয়া যায়? প্রশ্ন কঠিন, উত্তরও অজানা। |
|
|
১৩৪
সহজে ব্যবসা করা যায় এমন দেশগুলির মধ্যে
ভারত যত নম্বরে (১৮৯টি দেশের মধ্যে)
বলে জানাল বিশ্ব ব্যাংক। |
১৮
কলকাতায় প্রতি লক্ষে
যত জন মানুষ বায়ুদূষণজনিত
ফুসফুসের ক্যানসারে ভোগেন। |
৮৮৯৩০৫
আগামী বছর ব্রাজিল বিশ্বকাপের
টিকিটের জন্য যত দরখাস্ত জমা
পড়ল ফিফা-র প্রথম দফা বুকিংয়ে। |
১৬
যতগুলো ছয় মেরে ওয়ান ডে-র
ইতিহাসে এক ইনিংসে সবচেয়ে
বেশি ছয় মারার
রেকর্ড
গড়লেন রোহিত শর্মা। |
৩০০০০০০
২০ সেকেন্ডের বিজ্ঞাপনে অভিনয়ের জন্য
যত মার্কিন ডলার পারিশ্রমিক পেলেন
হলিউডি অভিনেতা ম্যাট ড্যামন।
|
৯২৯৬২
অতিরিক্ত ভারতীয় অনুষ্ঠান সম্প্রচার
করায় ১০টি পাকিস্তানি বেসরকারি
টেলিভিশন চ্যানেলের যত
মার্কিন ডলার জরিমানা হল। |
২১
সবচেয়ে বেশি টুইট করা
দেশগুলোর লিস্টে ভারতের
স্থান যত নম্বরে।
|
১.২
মধ্যপ্রদেশের কংগ্রেস প্রার্থী জয়বর্ধন সিংহের যত
কোটি টাকার স্বর্ণালংকার আছে বলে জানা গেল
মনোনয়নপত্রের সঙ্গে জমা দেওয়া অ্যাফিডেভিট থেকে।
|
১
২৫ বছরের রনজি-কেরিয়ারে
যত বার শূন্য করেছেন
সচিন তেন্ডুলকর
|
|
|
|
|
অ
সী
ম
চৌ
ধু
রী |
|
|
ক্রিকেট আছে সচিন নেই, ভাবাটা দুষ্কর
দাবার ছক নিরানন্দ অনেক দিন পর
হল্লাবাজি করব কীসে, তা দেব কোন গোঁপে?
নতুন কোনও মূর্তি আসুক পুজোর মণ্ডপে |
দৌড়ে যাচ্ছি ভবিষ্যতেই, থাকছি না পড়ে অতীতে
এখানে তৈরি ‘মঙ্গলযান’ ছিটকে যাচ্ছে গতিতে
সুপারস্টিশন, জ্যোতিষচর্চা
কিছুতে জীবন করি না খরচা
ঈশ্বর কিছু পেলে খুশি হন, তাই যাই তিরুপতিতে |
|
|
|
লেটারিং বেটারিং |
|
থাকে শুধু অন্ধকার, মুখোমুখি বসিবার মহা কার্লসেন |
|
|
|
|
|
|
|