তেল কেলেঙ্কারির পরিপ্রেক্ষিতে গাড়ির ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করছে পুরসভা। পুর সূত্রের খবর, অফিসারদের যাতায়াতের জন্য এ বার থেকে ব্যবহার করা হবে পুলকার। কোনও কোনও অফিসারের ক্ষেত্রে গাড়ি ব্যবহার একেবারেই বন্ধও করা হতে পারে। শনিবার পুর-কমিশনার খলিল আহমেদ এক বিজ্ঞপ্তি জারি করে কোন দফতরে কত গাড়ি চলে, তার তালিকা জমা দিতে নির্দেশ দিয়েছেন। ওই বিজ্ঞপ্তি পেয়ে রীতিমতো শোরগোল পড়ে গিয়েছে বিভিন্ন দফতরে।
পুর সূত্রের খবর, তেল চুরির তদন্ত রিপোর্ট পেয়েই গাড়ির যথেচ্ছ ব্যবহারের বিষয়ে কড়া হচ্ছেন কর্তারা। কমিশনারের ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বিভাগীয় প্রধান ও ম্যানেজার পদের অফিসারেরা একই এলাকায় থাকলে তাঁদের যাতায়াতে একটিই গাড়ি দেওয়া হবে। এত দিন অফিসার প্রতি একটি গাড়ি বরাদ্দ ছিল। গাড়ির সংখ্যা কমাতেই ওই সিদ্ধান্ত।
এক পুরকর্তার কথায়, পুরসভায় অফিসারদের জন্য প্রায় শ’পাঁচেক গাড়ি ভাড়া খাটে। যার ভাড়া ও তেলের জন্য বছরে প্রায় ১৪ কোটি টাকা খরচ হয়। এবং সে খরচ ক্রমশই বাড়ছে। ওই ব্যয় যে পুরসভার উপরে বাড়তি বোঝা হচ্ছে, তা পুরসভার অভ্যন্তরীণ রিপোর্টেও উঠে এসেছে। এমনকী, অর্থ দফতরও এ নিয়ে নানা প্রশ্ন তুলেছে। কিন্তু সেই ব্যয়ভার কমানোর ব্যাপারে এত দিন কেউই পদক্ষেপ করার সাহস দেখাননি।
সম্প্রতি পুরসভার গ্যারাজ থেকে তেলের হিসেবে গরমিল বেরোতেই নড়ে বসেন কর্তারা। অভ্যন্তরীণ অডিট বিভাগ তেলের ব্যবহারে নানা অনিয়ম পায়। তদন্তেরও নির্দেশ দেন কমিশনার। সেই রিপোর্টও জমা পড়েছে। পুর সূত্রের খবর, অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। এমনকী, গ্যারাজের কয়েক জন কর্মীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের কথাও তাতে বলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন এক পুরকর্তা।
যে সমস্ত অফিসারেরা বিভাগীয় প্রধান বা ম্যানেজার পদমর্যাদার নীচে, তাঁদের তালিকাও তৈরি করতে বলা হয়েছে। পুরসভার যুগ্ম কমিশনার অফিস সূত্রের খবর, ওই ধরনের অফিসারদের গাড়ি পাওয়ার কথা নয়। তা সত্ত্বেও দীর্ঘ দিন ধরে তাঁরা গাড়ি ব্যবহার করছেন। এ বার তাঁদের গাড়ি ব্যবহার নিয়ে ভাবনা-চিন্তা করা হবে। প্রতিটি দফতরের অফিসারদের নামের তালিকা ১০ ডিসেম্বরের মধ্যে পাঠাতে বলা হয়েছে।
এক মেয়র পারিষদের কথায়, গাড়ির খরচ কমানোর সিদ্ধান্ত খুবই সময়োপযোগী। এখনই লাগাম না ধরলে চরম আর্থিক সঙ্কটে পড়বে পুরসভা। |