ইস্পাত শিল্পের গণ্ডি ছাড়িয়ে এ বার রাজ্যে সিমেন্ট কারখানা গড়তে উদ্যোগী কলকাতার শ্যাম গোষ্ঠী। জামুরিয়া এবং শিলিগুড়িতে দু’টি সিমেন্ট কারখানা তৈরি করতে তারা প্রায় ৬০০ কোটি টাকা লগ্নির পরিকল্পনা নিয়েছে।
সংশ্লিষ্ট শিল্পের হিসেবে, পশ্চিমবঙ্গে সিমেন্টের বার্ষিক চাহিদা প্রায় ১.৫ কোটি টন। কিন্তু এ রাজ্যে সিমেন্ট তৈরি হয় তার অর্ধেক। বাকি চাহিদা মেটাতে রাজ্যের বাজারে ঢোকে ভিন্ রাজ্যের সিমেন্ট। রয়েছে পড়শি রাজ্যের বাজারও। সব মিলিয়ে পশ্চিমবঙ্গকে কেন্দ্র করে সংলগ্ল বাজার ধরতে ঝাঁপাচ্ছে বিভিন্ন সংস্থা।
সেই সূত্রেই এ রাজ্যে পা রেখেছে অনিল অম্বানী গোষ্ঠীর রিলায়্যান্স সিমেন্ট। পুরুলিয়ার রঘুনাথপুরের শিল্প তালুকে এ জন্য তাদের ১০০ একর জমি দিয়েছে রাজ্য। কারখানা গড়বে এসিসি সিমেন্ট সংস্থাও। অন্য দিকে, হাওড়ার সাঁকরাইলের কারখানা সম্প্রসারণের পাশাপাশি হুগলিতে একটি নতুন কারখনা তৈরি করতে আগ্রহী অম্বুজা সিমেন্টও।
এই বাজারে এ বার নয়া সংযোজন শ্যাম গোষ্ঠী। দক্ষিণবঙ্গ ও উত্তরবঙ্গে দু’টি সিমেন্ট কারখানা গড়তে তারা ৬০০ কোটি টাকা লগ্নি করবে। প্রথম লগ্নির গন্তব্য বর্ধমানের জামুরিয়া। যেখানে রয়েছে তাদের ইস্পাত কারখানা ও নিজস্ব ব্যবহারের জন্য একটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র। সেই প্রকল্প এলাকার মধ্যেই পড়ে থাকা জমিতে সিমেন্ট কারখানাটি গড়ার পরিকল্পনা নিয়েছে শ্যাম গোষ্ঠী। ওই কারখানাটিতে বছরে ১৫ লক্ষ টন সিমেন্ট তৈরি হবে। শ্যাম গোষ্ঠীর ভাইস চেয়ারম্যান তথা এমডি ভূষণ অগ্রবাল জানিয়েছেন, এই প্রকল্পে প্রায় ৩০০ কোটি টাকা লগ্নি হবে। ইতিমধ্যেই তাঁরা রাজ্য সরকারের কাছে প্রয়োজনীয় ছাড়পত্রের জন্য প্রকল্প প্রস্তাব জমা দিয়েছেন। সেই ছাড়পত্র পাওয়ার ১৪ মাসের মধ্যে কারখানা চালু করার ব্যাপারে আশাবাদী তাঁরা।
উত্তরবঙ্গে দ্বিতীয় সিমেন্ট কারখানাতেও প্রায় ৩০০ কোটি টাকা লগ্নি করতে আগ্রহী শ্যাম গোষ্ঠী। শিলিগুড়িতে বার্ষিক ১৬ লক্ষ টন ক্ষমতাসম্পন্ন কারখানাটি তৈরির জন্য ৪০ একর জমি অবশ্য তারা নিজেরাই কিনেছে। জমির উর্ধ্বসীমা আইনে ছাড়ের জন্য রাজ্য সরকারের সায়ের অপেক্ষায় রয়েছে সংস্থা। ছাড়পত্র পাওয়ার ১৮ মাসের মধ্যে চালু হবে এই কারখানাটি।
এই দুই কারখানার জন্যই কাঁচামাল হিসেবে ‘ক্লিঙ্কার’ আসবে শ্যাম গোষ্ঠীর মেঘালয়ের কারখানা থেকে। আর একটি কাঁচামাল ছাই আসবে ফরাক্কার বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে। জামুরিয়ার কারখানার জন্য ছাই অবশ্য মিলবে তাদেরই নিজস্ব ব্যবহারের বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকেই। |