সরকারি দফতর পরিদর্শনে গিয়ে কর্মী হাজিরার ‘বেহাল দশা’য় ক্ষোভ প্রকাশ করলেন দক্ষিণ দিনাজপুর জেলাশাসক। শুক্রবার জেলা তথ্য ও সংস্কৃতি দফতর, বালুরঘাট এবং কুমারগঞ্জের বিডিও দফতরে যান জেলাশাসক তাপস চৌধুরী। ৩টি অফিসে হঠাৎ পরিদর্শনে কর্মী অফিসারদের উপস্থিতির হার দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। তাঁর তোপের মুখে পড়তে হয় জেলার তথ্য সংস্কৃতি আধিকারিককে। বালুরঘাট ব্লক কার্যালয়ে সকাল ১১টা পর্যন্ত হাজির না হওয়া ৩২ কর্মীকে হাজিরা খাতায় লালকালির দাগ দিয়ে অনুপস্থিত লিখে দেন জেলাশাসক।
জেলাশাসক তাপস চৌধুরী বলেন, “তিনটি দফতরের কর্মী আধিকারিকদের সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। কর্মীদের সময় মত দফতরে উপস্থিত হয়ে কাজ করতে হবে। নইলে শো-কজ ও সাসপেন্ডের মত পদক্ষেপ করা হবে।’’ দক্ষিণ দিনাজপুরের সভাধিপতি ললিতা টিগ্গা বলেন, “সরকারি অফিসগুলিতে এমন অভিযান চলবে। জেলাশাসকের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা হয়েছে। কর্মীরা সতর্ক না হলে প্রশাসন কড়া ব্যবস্থা নেবে।” গত বুধবার জেলার কুশমন্ডিতে এসে প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিভিন্ন দফতরের আধিকারিকদের কাজে গতি বাড়ানোর নির্দেশ দেন। উদ্যোগকে সমর্থন করে তৃণমূলের সরকারি কর্মী সংগঠন কো-অর্ডিনেশন কমিটির সদস্য ভানুকিশোর দত্ত বলেছেন, “আমরা ডিএমের পদক্ষেপ সমর্থন করি।”
এ দিন সকাল সাড়ে ১০টায় জেলাশাসক বালুরঘাটে রবীন্দ্রভবনের জেলা তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরে হানা দেন। ১৫ কর্মীর মধ্যে উপস্থিত এক কর্মী। জেলাশাসক গোটা অফিস ঘুরে দেখেন। তিনি ১০টা ৫০ মিনিটে তথ্য দফতর ছেড়ে গাড়িতে ওঠার মুখে হাজির হন অনিন্দ্যবাবু। জেলাশাসক তাঁকে ভর্ৎসনা করে বলেন, ‘আপনি যদি দেরি করে অফিসে আসেন, তবে অন্য কর্মীদের কী হবে?” অনিন্দ্যবাবু বলেছেন, “রোজ দেরি করে অফিসে আসার অভিযোগ ঠিক নয়। জেলা পরিষদ থেকে রবীন্দ্রভবন মেরামতির জন্য ১৯ লক্ষ টাকা কাজের টেন্ডারও হয়েছে বলে ডিএমকে জানিয়েছি।”
এরপর তথ্য সংস্কৃতি দফতর থেকে জেলাশাসক হাজির হন রঘুনাথপুরের বালুরঘাট ব্লক অফিসে। সকাল ১১টায় বিডিওর দফতরের ৪৮ কর্মীর মধ্যে ৩২ জনই অনুপস্থিত। জেলাশাসক প্রত্যেকের হাজিরা খাতায় লালকালির দাগ দিয়ে সতর্ক করে যান। বালুরঘাটে বিডিও শুভ্রজিত গুপ্ত অসুস্থ থাকায় এদিন তিনি ছুটিতে ছিলেন। বালুরঘাটের পর জেলাশাসক বেলা ১২টা নাগাদ কুমারগঞ্জ ব্লকে যান। জেলাশাসক তাপসবাবু বলেন, “সঠিক সময়ে অফিসে উপস্থিতি হয়ে কর্মীদের কাজে গতি বাড়াতে বলা হয়েছে।” |