দলীয় কর্মীদের সঙ্গে সভাধিপতির সরকারি কর্মীদের হাজিরা পরিদর্শনে যাওয়া নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে পুরুলিয়ায়। দলের অন্দরে যেমন এ নিয়ে অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন, তেমনই রাজ্য সরকারি কর্মীদের ডানপন্থী সংগঠন ইউনাইটেড স্টেট গর্ভনমেন্ট এমপ্লয়িজ ফেডারেশনও সভাধিপতির সঙ্গে দেখা করে তাদের আপত্তির কথা জানিয়ে এসেছে।
তবে সভাধিপতি সৃষ্টিধর মাহাতো জানিয়ে দিয়েছেন, “কর্মীদের আগে নিজেদের হাজিরা নিয়ে সচেতন হওয়া দরকার। কিছু অফিসে কর্মীদের হাজিরা অত্যন্ত কম হওয়ায় দফতরের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে তা জমা দেওয়ার জন্য আমার কোনও সঙ্গীকে তা হাতে করে আনতে বলেছি মাত্র। ওই খাতায় আমি কোনও দাগও কাটিনি।”
সম্প্রতি বিভিন্ন দফতরে গিয়ে কর্মীদের হাজিরা পরীক্ষা করছেন সভাধিপতি। ইতিমধ্যে তিনি পূর্ত দফতর ও শিক্ষা দফতরে যান। পূর্ত দফতরে তিনি গুটি কয়েক জন কর্মীকে দেখতে পেয়ে হাজিরা খাতা তুলে এনে জেলাশাসককে জমা দেন। শিক্ষা দফতরের হাজিরা খাতাও সরাসরি জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শকে তিনি জমা দেন। এ নিয়ে তাঁর সাফ বক্তব্য, “মানুষজনের কাছ থেকে যা শুনছি তার ভিত্তিতে বিভিন্ন দফতরে যাচ্ছি। কেন না আমি মানুষের কাছে দায়বদ্ধ।” কিন্তু হাজিরা পরীক্ষা বা কর্মসংস্কৃতি ফিরিয়ে আনার নামে তাঁর হাজিরা খাতা তুলে আনার পদ্ধতি মানতে পারছেন না অনেকে। তৃণমূলের জেলা কমিটির কার্যকরী সভাপতি তথা পূর্ত কমাধ্যক্ষ সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “সভাধিপতি সরকারি দফতরে হাজিরা দেখতে যেতেই পারেন। তবে দলের কর্মীদের সঙ্গে নেওয়াটা বাঞ্ছনীয় নয়।”
ডানপন্থী ওই সরকারি কর্মচারী সংগঠনের রাজ্য কোর কমিটির সদস্য অর্ধেন্দু ঘোষেরও মত, “কিছু সমস্যা হয়েছে। সভাধিপতির সঙ্গে দেখা করে আমরা তা জানিয়েছি।” সংগঠনের তরফে জানানো হয়েছে, জেলা সভাধিপতি হিসেবে সৃষ্টিধরবাবুর বিভিন্ন দফতরে হাজিরা পরীক্ষা করতে যাওয়া নিয়ে তাদের আপত্তি নেই। কিন্তু পরিদর্শনের সময় দেখা যাচ্ছে কখনও কখনও তাঁর সঙ্গে দলীয় কর্মীরা থাকছেন। এমনকী তাঁরা ওই হাজিরা খাতা তুলে নিয়ে যাচ্ছেন। এই বিষয়ে ঘোর আপত্তি বিরোধীরা তো বটেই, অসন্তোষ ডানপন্থী কর্মচারী সংগঠনের সদস্যদের মধ্যেও। সভাধিপতি বলেন, “কাজের সময় সরকারি অফিসে কর্মীদের না দেখতে পেলে আমি কী করব? আমি তো খাতা বয়ে নিয়ে যেতে পারি না! সঙ্গে থাকা কেউ যদি খাতাটি আমার অনুরোধে বয়ে নিয়ে যান, তাতে আপত্তির কিছু দেখছি না।” |