দেওরের পরিবার ‘চোর’ সন্দেহ করায় বাড়ি ফিরে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দিলেন বৃদ্ধা। শুক্রবার ভোরে বসিরহাট মহকুমা হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। অপমানেই তিনি আত্মঘাতী হয়েছেন বলে প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশের অনুমান। মৃতার পরিবারের অভিযোগ পেয়ে পুলিশ তাঁর দেওরের এক ছেলেকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে।
বসিরহাটে ইটিন্ডার শিবতলা এলাকায় ঘটনার সূত্রপাত গত বুধবার। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায় জানায়, উৎপলা দে (৬৫) নামে ওই বৃদ্ধা সপ্তাহখানেক আগে স্বরূপনগরে তাঁর মেজো দেওর শম্ভু দে-র বাড়িতে গিয়েছিলেন। দিন কয়েক সেখানে কাটিয়ে বাড়ি ফেরেন রবিবার। বুধবার দুপুরে বড় ছেলের স্ত্রী সাথীকে সঙ্গে নিয়ে তিনি ব্লক অফিসে যাচ্ছিলেন। রাস্তায় দেওর, তাঁর স্ত্রী ও ছেলে সৌমেনের সঙ্গে দেখা হয়। সাথীর অভিযোগ, “ওঁরা আমাদের বলেন, শাশুড়ি মা ওঁদের বাড়ি থেকে চলে আসার পরেই সোনার বালা, হার, চুড়ি, আংটি পাওয়া যাচ্ছে না। উনিই সে সব চুরি করে এনেছেন। শাশুড়ি মা বারবার বলেন, তিনি গয়নার ব্যাপারে কিছুই জানেন না। কিন্তু ওঁরা ওঁকে সমানে ‘চোর, গয়না চুরি করে এনেছে’ বলে অসম্মান করতে থাকেন। রাস্তায় পাঁচ জনের সামনে অপমানিত হয়ে মা মুষড়ে পড়েন। অসুস্থও হয়ে পড়েন।”
আত্মীয়-পরিজনদের একাংশের দাবি, বাড়ি ফেরার পরে ছেলেরাও উৎপলা দেবীকে জিগ্যেস করে, তিনি গয়না চুরির ব্যাপারে কিছু জানেন কি না। তাতে তিনি আরও ভেঙে পড়েন। শেষমেশ রাত ৮টা নাগাদ সকলের অলক্ষ্যে গায়ে কেরোসিন ঢেলে গায়ে আগুন দেন বলে পরিবারের তরফে পুলিশকে জানানো হয়েছে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে বসিরহাট মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। উৎপলা দেবীর ছোট ছেলে অশোক দে-র দাবি, “আপনজনের কাছ থেকে এমন ‘চোর’ অপবাদ মা সহ্য করতে পারেননি। সেই কারণেই তিনি আত্মহত্যা করেছেন।” তাঁদের অভিযোগের ভিত্তিতেই পুলিশ সৌমেনকে আটক করেছে। যদিও সৌমেনের দাবি, “বাড়ি থেকে গয়না চুরি যাওয়া নিয়ে জেঠিমা কিছু জানেন কি না, সেটাই তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল। মোটেই ‘চোর’ বদনাম দেওয়া হয়নি।” পুলিশ জানায়, পুরো ঘটনাই খতিয়ে দেখা হচ্ছে। |