সাফল্য এসেছে, সরকারি সাহায্যের আশায় অর্চনা
ন্ম থেকেই তাঁর ডান হাত আর ডান পা অকেজো। কোনও রকমে পা টেনে টেনে রাস্তায় হাঁটেন। এক হাতে কাজ করতে হয়।
কিন্তু মনের জোর থাকলে কী না হয়? জাতীয় স্তরে প্রতিবন্ধীদের প্যারা অলিম্পিক প্রতিযোগিতা থেকে সাঁতারে সোনা ও রুপোর পদক জিতে এনেছেন নলহাটির অর্চনা হেমব্রম। কিন্তু তাঁর আক্ষেপ, রাজ্য সরকারের কাছ থেকে কোনও সাহায্য পাননি।
বিএ দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী অর্চনার বাড়ি বীরভূমের নলহাটি থানা এলাকার আদিবাসী অধ্যুষতি কুসুমজলি গ্রামে। কলেজে পড়ার সুবিধার জন্য এখন নলহাটি শহরের একটি হস্টেলে থাকেন। বাড়িতে রয়েছেন বিধবা মা। বাবা ছিলেন স্কুলশিক্ষক। তিনি যখন মারা যান, অর্চনা মোটে ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী।
শারীরিক প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও ছোট থেকেই সাঁতার ভালোবাসতেন অর্চনা। এক দিন নজরে পড়েন এলাকার সাঁতারের শিক্ষক বদরুদ্দোজা শেখের, যিনি নিজে প্রতিবন্ধী হয়েও এলাকার জনা ১৫ প্রতিবন্ধীকে সাঁতার শিখিয়ে রাজ্য ও জাতীয় স্তরে প্রতিযোগিতায় নিয়ে গিয়েছেন। ২০০৯ থেকে অর্চনাকে সাঁতার শেখাতে শুরু করেন তিনি। তার পর থেকেই সাফল্য আসার শুরু।

অর্চনা হেমব্রম। —নিজস্ব চিত্র।
২০১১ থেকে এ পর্যন্ত জাতীয় স্তরে ৪টি সোনা, ৯টি রুপো ও একটি ব্রোঞ্জ পদক জিতেছেন অর্চনা। এ বার জাতীয় প্যারা অলিম্পিক সাঁতারে ব্যক্তিগত বিভাগে দু’টি সোনা, দুটি রুপো এবং রিলে সাঁতারে একটি রুপো জিতেছেন। ১৫ জনের দলে সর্বোচ্চ পদক পেয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়নও হয়েছেন তিনি। সে জন্য মিলেছে পাঁচশো টাকা পুরস্কার।
শুধু শারীরিক প্রতিবন্ধকতা নয়। অর্চনার সাফল্যের পথে অন্যতম বড় প্রতিবন্ধক অনুশীলনের উপযুক্ত পরিকাঠামোও। গোটা রামপুরহাট মহকুমায় কোনও সুইমিং পুল নেই। বীরভূম জেলায় একটি সুইমিং পুল আছে বটে, তবে সেটি মাত্র ২৫ মিটার দৈর্ঘ্যের। তাতে জাতীয় বা আন্তর্জাতিক মানের প্রতিযোগিতার জন্য অনুশীলন করা যায় না। বাধ্য হয়ে এখন নলহাটির একটি পুকুরে অনুশীলন করেন অর্চনা।
কোচ বদরুদ্দোজা শেখের কথায়, “আমরা বাধ্য হয়ে পুকুরেই অনুশীলন করাই। একটি ভাল সুইমিং পুল পেলে আমার ছাত্রছাত্রীরা আরও ভাল ফল করবে।” অর্চনার ক্ষোভ, “জাতীয় স্তরে সাফল্যের পরেও রাজ্য সরকারের কাছ থেকে কোন রকম সহযোগিতা মেলে না। অন্য রা জ্যের হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলে সোনার পদকের জন্য আর্থিক পুরস্কার পাওয়া যায়। পরে হয়তো তাই অন্য রাজ্যেই চলে যেতে হবে।”
সাহায্য না মিললেও আশ্বাস অবশ্য মিলেছে। নলহাটির ফরওয়ার্ড ব্লক বিধায়ক দীপক চট্টোপাধ্যায় বলেন, “অর্চনার কথা জানতাম না। তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করে অন্য রাজ্যে যেতে বারণ করব। বিধানসভার অধিবেশনে তাঁর প্রসঙ্গ তুলব।” জেলা তৃণমূল চেয়ারম্যান আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের আশ্বাস, “আমি মুখ্যমন্ত্রীর কাছে অর্চনার ব্যাপারে দরবার করব। তিনি সংবেদনশীল, আশা করি যথাযথ ব্যবস্থা নেবেন।”




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.