|
|
|
|
প্রত্যাশা ছাপানো বৃদ্ধির হারে আশা দেখছে কেন্দ্র
সংবাদ সংস্থা • নয়াদিল্লি
২৯ নভেম্বর |
এক চুল হলেও প্রত্যাশা ছাপিয়েছে বৃদ্ধির হার। চলতি আর্থিক বছরের দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে (জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর) তা দাঁড়িয়েছে ৪ .৮ %। আর তাতেই অর্থনীতির ঘুরে দাঁড়ানোর রুপোলি রেখা দেখছে কেন্দ্র। দাবি করছে, পরের ছ’মাসে আরও ভাল হবে বৃদ্ধি। খোদ অর্থমন্ত্রী প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন দ্রুত একগুচ্ছ আর্থিক সংস্কারেরও।
শুক্রবার দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকের আর্থিক পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে কেন্দ্র। সেখানে দেখা যাচ্ছে, ওই সময়ে দেশের বৃদ্ধির হার (আগের বছরের একই সময়ের তুলনায়) দাঁড়িয়েছে ৪ .৮ %। এই অর্থবর্ষেরই প্রথম ত্রৈমাসিকে (এপ্রিল থেকে জুন) তা ছিল ৪ .৪ %। এমনকী জুলাই -সেপ্টেম্বরেও ওই হার ৪ .৬ % ছাড়াবে বলে আশা করেননি বিশেষজ্ঞরা। তাই প্রত্যাশা ছাপানো এই বৃদ্ধি কিছুটা হলেও স্বস্তি দিয়েছে কেন্দ্রকে।
কেন্দ্রীয় আর্থিক বিষয়ক সচিব অরবিন্দ মায়ারাম বলেন, “অনেকেই মনে করেছিলেন আরও শ্লথ হবে বৃদ্ধির গতি। কিন্তু আমরা অনেক দিন ধরেই বলছি যে, ধীরে হলেও ছন্দে ফিরছে দেশের অর্থনীতি। যে কারণে প্রথমের তুলনায় দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে বৃদ্ধি ভাল হওয়ায় আমরা খুশি। আমার ধারণা, তৃতীয় ও চতুর্থ ত্রৈমাসিকে তা আরও ভাল হবে। টপকে যাবে ৫ শতাংশের গণ্ডি।”
আশার কথা শুনিয়েছেন অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরমও। দাবি করেছেন, চলতি অর্থবর্ষের শেষে ৫ % ছাড়াবে বৃদ্ধি। দু -তিন বছরের মধ্যে ফেরা যাবে ৮ % বৃদ্ধির সড়কে। আর তা নিশ্চিত করতে কেন্দ্রও যে চেষ্টার কোনও ত্রুটি রাখবে না, তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন তিনি। তাঁর দাবি, লগ্নিকারীদের আস্থা ফেরাতে ইতিমধ্যেই প্রাকৃতিক গ্যাসের দাম নির্ধারণে স্বচ্ছতা আমদানির চেষ্টা করেছে কেন্দ্র। দ্রুত ছাড়পত্র দেওয়া হচ্ছে আটকে থাকা বিভিন্ন প্রকল্পকে। অদূর ভবিষ্যতে শেয়ার বাজার, আর্থিক পরিষেবা -সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কারের রথ ছোটানো হবে বলেও দাবি করেছেন তিনি।
দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকের যে পরিসংখ্যানকে কেন্দ্র করে চিদম্বরমরা এক চিলতে আশার আলো দেখছেন, তার প্রধান কারিগর কৃষি ক্ষেত্রের নজরকাড়া বৃদ্ধি। আলোচ্য তিন মাসে দেশে কৃষি উৎপাদন বেড়েছে ৪ .৬ %। আগের বছরের একই সময়ে যা ছিল ১ .৭ %। তাকে কিছুটা সঙ্গত দিয়েছে উৎপাদন শিল্পের চাকা ঘোরা। প্রথম ত্রৈমাসিকে কল -কারখানায় উৎপাদন বাড়া তো দূরের কথা, বরং তা সরাসরি কমেছিল। সেখান থেকে এ বার অন্তত তা ঘুরে দাঁড়িয়ে ১ % বৃদ্ধির মুখ দেখেছে। বিদ্যুৎ, গ্যাস উৎপাদন ইত্যাদি শিল্পে বৃদ্ধির হার ৭ .৭ %। দশ শতাংশ বৃদ্ধি হয়েছে পরিষেবাতেও।
এই সমস্ত কিছুর মধ্যে আশঙ্কার চোরা স্রোতও আছে, তা বিলক্ষণ জানে কেন্দ্র। এই নিয়ে টানা চারটি ত্রৈমাসিকে বৃদ্ধি ৫ % ছাড়ায়নি। এ বারও সরাসরি উৎপাদন কমেছে খনন শিল্পে। এখনও আস্থা ফেরার লক্ষণ দেখাননি লগ্নিকারীরা। কিন্তু এ সব সত্ত্বেও এ দিনের পরিসংখ্যানে আশার এক চিলতে আলো দেখছে কেন্দ্র।বিশেষজ্ঞদের মতে এর কারণ, প্রথমের তুলনায় দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে বৃদ্ধির হার অন্তত ঊর্দ্ধমুখী থাকা। একই সঙ্গে কেন্দ্র হয়তো মনে করছে ভাল বর্ষার সুফল হিসেবে বাকি দুই ত্রৈমাসিকে আরও উন্নত হবে কৃষি উৎপাদন। তার হাত ধরে চাহিদা বাড়বে বিভিন্ন পণ্য -পরিষেবার। শুধরোবে বিশ্ব অর্থনীতিও। যার সুফল ঘরে তোলার নিয়ে আশাবাদী কেন্দ্র। শিল্প অবশ্য মনে করছে, অর্থনীতি সবে ঘুরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত দিতে শুরু করেছে। কিন্তু পুরোদস্তুর ছন্দে ফিরতে তার আরও অনেক পথ হাঁটা বাকি। |
|
|
|
|
|