বিস্তীর্ণ এলাকায় রাস্তার ধারে মাঝেমধ্যেই পড়ে থাকে জঞ্জালের স্তূপ। কখনও তা উপচে পড়ে বন্ধ করে দেয় নর্দমার মুখ। তৈরি হয় নিকাশির সমস্যাও। এ ছবি তারাতলা, সার্কুলার গার্ডেনরিচ রোড, সোনাপুর রোড, হাইড রোড, কোলডক রোড এবং খিদিরপুর ডক সংলগ্ন এলাকার।
বন্দর এলাকায় আবর্জনা কে সরাবে তা নিয়ে কলকাতা বন্দর এবং পুরসভার মধ্যে চাপান-উতোর চলেছে। অসুবিধায় পড়ছেন বন্দর এলাকার বাসিন্দারা। সমস্যার সমাধানে ফের আলোচনায় বসতে চায় কলকাতা পুরসভা এবং কলকাতা বন্দর কর্তৃপক্ষ।
মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় বলেন, “বিষয়টি নিয়ে বন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ফের আলোচনায় বসব। সমস্যাটার সমাধান প্রয়োজন।”
পুরসভার মেয়র পারিষদ (জঞ্জাল অপসারণ) দেবব্রত মজুমদার বলেন, “বন্দর এলাকার রাস্তার আবর্জনা অপসারণ করার দায়িত্ব বন্দর কর্তৃপক্ষের। তা সত্ত্বেও এলাকার বাসিন্দারা পুরসভাকে অভিযোগ জানালে পুরসভাই জঞ্জাল অপসারণ করে। বন্দর কর্তৃপক্ষকে এ বিষয়ে বার বার বলা সত্ত্বেও কোনও কাজ হয়নি।” |
সার্কুলার গার্ডেনরিচ রোডের পাশে জমে আছে আবর্জনা। ছবি: শুভাশিস ভট্টাচার্য। |
অন্য দিকে, বন্দর কর্তৃপক্ষের জনসংযোগ আধিকারিক সঞ্জয়কুমার মুখোপাধ্যায় বলেন, “এই রাস্তাগুলি বন্দরের হলেও সেগুলির আবর্জনা অপসারণের ব্যাপারে কলকাতা পুরসভাকেই অনুরোধ করা হয়েছে। সুতরাং, তাদেরই এই রাস্তা পরিষ্কার করার কথা।”
সার্কুলার গার্ডেনরিচ রোডের এক বাসিন্দা কবীর মিস্ত্রি অভিযোগ করেন, “রাস্তার ধারে খোলা ভ্যাটে ময়লা পড়ে থাকে। দুর্গন্ধে এখানে টেকা দায় হয়। সেগুলি নিয়মিত সরানো হয় না।”
নিয়মানুযায়ী, শহরের রাস্তা যে সংস্থার অন্তর্ভুক্ত সেই সংস্থাই এই রাস্তাগুলি পরিষ্কার রাখার দায়িত্ব নেবেন। স্বাভাবিক ভাবেই বন্দর এলাকার রাস্তাগুলির দায়িত্ব বন্দর কর্তৃপক্ষের। কলকাতা বন্দর কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, অর্থ বরাদ্দ না থাকায় আবর্জনা সরানো সম্ভব হচ্ছে না। সেই কারণে পুরসভাকেই এই আবর্জনা সরানোর ব্যাপারে অনুরোধ করা হয়েছে।
আবর্জনা অপসারণ দফতরের এক আধিকারিক জানান, কিছু কিছু ক্ষেত্রে পুরসভা ওই অঞ্চলের আবর্জনা পরিষ্কার করেই থাকে। এমনকী, বিসর্জনের সময়েও বন্দর কর্তৃপক্ষ পুরসভার কাছে প্রতিমার কাঠামো তোলার ব্যাপারেও সাহায্য নেন। কিন্তু বন্দরের সমস্ত রাস্তা পরিষ্কার রাখা পুরসভার পক্ষেও সম্ভব নয়। সেখানেও প্রয়োজন অর্থের। পুরসভার পক্ষে সেই অর্থ বরাদ্দ করাও এই মুহূর্তে অসম্ভব। দেবব্রতবাবু জানান, পুরসভা শহরের বিভিন্ন প্রান্তে আবর্জনা সরানোর জন্য নতুন ‘কম্পাক্টর’ মেশিন বসানোর পরিকল্পনা নেই। কারণ, এই ধরনের প্রকল্প তৈরি করতে গেলে প্রয়োজন বন্দরের ছাড়পত্র। অথবা, পুরসভাকে তাদের রাস্তা হস্তান্তর করতে হবে। অন্য দিকে, সমস্যার সমাধানে এই সমস্ত রাস্তার কিছু কিছু জায়গায় খোলা জঞ্জাল ফেলার পাত্র বসানো হয়েছে। তবে তা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম বলেও পুরসভা জানিয়েছে। বন্দর এলাকার মধ্যে পুরসভার কতটা জায়গা আছে সেই ব্যাপারেও পুরকর্তৃপক্ষ সমীক্ষা করবেন বলে জানিয়েছেন। |