চালু হয়নি প্রি-পেড ট্যাক্সি, ভাড়া নিয়ে ক্ষোভ যাত্রীদের
ছর পাঁচেক আগে এক বার উদ্যোগ হয়েছিল। কিন্তু তার পরে তা ধামাচাপা পড়ে গিয়েছে। তাই প্রি-পেড ট্যাক্সি আর চালু হয়নি দুর্গাপুর শহরে। বাসিন্দারা শীঘ্র এই পরিষেবার দাবি জানালেও অদূর ভবিষ্যতে তেমন কোনও সম্ভাবনার আশা দেখাতে পারছে না পুরসভা।
দুর্গাপুরে ট্যাক্সির পরিষেবা নিয়ে বিস্তর ক্ষোভ যাত্রীদের। তাঁদের অভিযোগ, শহরের ট্যাক্সিগুলির ভাড়ার মিটার নেই। ফলে, চালকদের মর্জি মাফিক ভাড়া দিতে হয়। ট্যাক্সি চালকদের আবার পাল্টা অভিযোগ, এই শহরে ট্যাক্সি চড়ার তেমন চল নেই। নিয়মিত ভাড়া মেলে না। দিনে এক বারও ভাড়া মেলে না, এমন ঘটনাও অনেক চালকের সঙ্গেই ঘটে। ফলে, তাঁদের রোজগারের কোনও স্থিরতা নেই। যদিও বেশি ভাড়া চাওয়ার অভিযোগ ট্যাক্সি চালকেরা মানতে চাননি। যাত্রী ও ট্যাক্সি চালক দু’পক্ষেরই দাবি, সমস্যার একমাত্র সমাধান, কলকাতার মতো প্রি-পেড ট্যাক্সি চালু করা।
মিটার ছাড়াই চলে এ সব ট্যাক্সি। —নিজস্ব চিত্র।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০৮ সালে এক বার প্রি-পেড ট্যাক্সি চালুর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল। বর্তমানে দুর্গাপুর স্টেশনে ট্যাক্সির সংখ্যা ৬৭টি। স্টেশনের বাইরে রেলের জায়গাতেই সেগুলি দাঁড়িয়ে থাকে। কিন্তু প্রি-পেড ট্যাক্সি স্ট্যান্ড চালু করতে যতটা জায়গা দরকার, তা রেল দিতে পারেনি। ফলে প্রি-পেড ট্যাক্সি চালুর পরিকল্পনা আর বাস্তবায়িত হয়নি। সেই সময়ে এই পরিষেবা চালুর ব্যাপারে ভূমিকা নিয়েছিলেন পুরসভার প্রাক্তন মেয়র পারিষদ তথা প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক বিপ্রেন্দু চক্রবর্তী। ট্যাক্সি বুথ নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় জায়গা রেল দিতে না পারায় বিষয়টি আর এগোয়নি জানিয়ে তাঁর বক্তব্য, “এখন দুর্গাপুরে এই পরিষেবা চালু হওয়া ভীষণ ভাবে দরকার। তাতে যাত্রী ও ট্যাক্সি চালক, দু’পক্ষই উপকৃত হবেন।” আইএনটিইউসি অনুমোদিত বর্ধমান জেলা ট্যাক্সি অপারেটর অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “নিয়মিত ভাড়া না মেলায় চালকেরা হতাশ। প্রি-পেড ট্যাক্সি চালু হলে ভাড়া নিয়ে কোনও অস্বচ্ছতার অভিযোগ থাকবে না। যাত্রীরা ট্যাক্সি চড়বেন।”
গত কয়েক বছরে দুর্গাপুরে বহু কল-কারখানা, শপিং মল, মাল্টিপ্লেক্স, বড় হোটেল, নানা রকম কলেজ, তথ্যপ্রযুক্তি পার্ক গড়ে উঠেছে। খুলেছে নানা বড় সংস্থার শো-রুম। ফলে, বাইরে থেকে মানুষের আনাগোনা অনেক বেড়েছে। কিন্তু সেই তুলনায় শহরের পরিবহণ ব্যবস্থার তেমন উন্নতি হয়নি বলে অভিযোগ। শহরবাসীর অনেকেরই অভিযোগ, সন্ধ্যা নামতেই রুটের অটো উধাও হয়ে যায়। একমাত্র ভরসা মিনিবাস। সন্ধ্যার পরে তার সংখ্যাও কমতে থাকে। ফলে, ট্রেন থেকে নেমে যাত্রীরা চড়া ভাড়ায় অটো বা ট্যাক্সি ধরতে বাধ্য হন। দিনের বেলাতেও সঙ্গে বেশি মালপত্র থাকলে অনেকে মিনিবাসে চড়তে পারেন না। সে ক্ষেত্রে ট্যাক্সি বড় ভরসা। কিন্তু নিয়মিত ট্যাক্সি পরিষেবা চালু না থাকায় ভাড়া নিয়ে বিপাকে পড়তে হয়, এমনই অভিযোগ যাত্রীদের একাংশের।
প্রি-পেড ট্যাক্সি চালু না হওয়ায় ক্ষোভ রয়েছে চালকদের মধ্যেও। এমনই এক ট্যাক্সি চালক প্রবোধ কেওড়া বলেন, “শহরে এত এত অটো চালু হল। কিন্তু ট্যাক্সি নিয়ে কেউ ভাবছেন না।” শহরের মেয়র অপূর্ব মুখোপাধ্যায়ের অবশ্য দাবি, অটো-মিনিবাসের সংখ্যা আগের থেকে অনেক বেড়ে যাওয়ায় ট্যাক্সির চাহিদা কমেছে। তিনি বলেন, “ট্যাক্সি চালকদের দুর্দশার কথা জানি। প্রি-পেড ট্যাক্সি চালু হলেই যে ট্যাক্সি চড়ার হার বাড়বে, তা মনে হচ্ছে না। তবে ট্যাক্সি চালক ও যাত্রী, সবার কথা ভেবে কী পদক্ষেপ করা যায় দেখব।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.