এলাকার মানুষের স্বার্থে খানাকুল-১ ব্লকের পোল-১ পঞ্চায়েত এলাকায় একটি উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র গড়তে উদ্যোগী হয়েছে স্বাস্থ্য দফতর। কিন্তু তার জায়গা নির্বাচন নিয়ে জটিলতা দেখা দিয়েছে।
ওই পঞ্চায়েত এলাকার রায়বাগ গ্রামের বৃদ্ধা রওসনারা বিবি উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র গড়ার জন্য বছর দুয়েক আগে চার শতক জমি দান করেছিলেন। ওই প্রকল্পের জন্য ইতিমধ্যে টাকাও অনুমোদন হয়েছে। প্রকল্পটি তৈরির দায়িত্ব পঞ্চায়েত সমিতির। কিন্তু পঞ্চায়েত সমিতি ওই জায়গায় প্রকল্প না করে অন্যত্র করার প্রক্রিয়া শুরু করেছে, এই অভিযোগে ওই বৃদ্ধা বিডিও-র দ্বারস্থ হয়েছেন। দিন কয়েক আগে লিখিত ভাবে বিডিওকে তাঁর আপত্তির কথা জানিয়ে বৃদ্ধা দাবি করেছেন, তাঁর দানের জমিতে উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র গড়া না হলে জমি ফেরত দেওয়া হোক।
বিডিও গোবিন্দ হালদার বলেন, “পঞ্চায়েত সমিতি থেকে অন্যত্র উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র নির্মাণের যে চেষ্টা চলছিল তা বন্ধ রাখা হয়েছে। জমিদাতার সম্মতি ছাড়া অনুমোদিত ১২ লক্ষ ৪৭ হাজার টাকা অন্যত্র উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র নির্মাণে ব্যবহার করা যাবে না। স্থায়ী সমিতির মিটিং ডেকে এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।” পঞ্চায়েত সমিতির স্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ নইমূল হক বলেন, “উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র নির্মাণের জন্য তিনটি জমি পাওয়া গিয়েছে। উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি সাপদ উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র নামে অনুমোদন হয়েছে। আমার দায়িত্ব সঠিক জায়গা নির্বাচন করা। আমি চাইছি সাপদে উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি হোক।” উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র নির্মাণের সঙ্কট নিয়ে মহকুমা স্বাস্থ্য আধিকারিক সিদ্ধার্থ দত্ত খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন।
পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে, উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রের জন্য প্রথমে বাম আমলে জমি পাওয়া যায় চক প্রাথমিক স্কুল সংলগ্ন এলাকায়। কিন্তু সেটি শ্মশানভূমির অংশ বলে অভিযোগ ওঠায় অনুমোদনের বিষয়টি ধামাচাপা পড়ে যায়। তার পরে দীর্ঘদিন জমি মেলেনি। গত বছরের ৪ জুন রওসনারা বিবি চকের মোড় সংলগ্ন দিঘির পাড় এলাকায় তাঁর চার শতক জমি দান করেন। এর পরে অবশ্য পঞ্চায়েত সমিতি চক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কাছে এবং নতুন পুকুর এলাকায় দু’টি জমি নির্বাচন করে। চক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কাছের জমি মাপজোকের কাজও শুরু হয়। কিন্তু রওসনারা বিবির আপত্তির কথা জানতে পেরে ব্লক প্রশাসন সেই কাজ বন্ধ করে দিয়েছে। রওসনারা বিবি বলেন, “উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রের জন্য জমি মিলছে না জানতে পেরে স্বামীর স্মৃতির উদ্দেশে পাঁচ ছেলেকে বুঝিয়ে তাঁদের ভাগ ছেড়ে মানুষের কথা ভেবে উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রের জন্য জমি দিয়েছি। ওই জমির দাম তখন দু’লক্ষ টাকারও বেশি ছিল। এ বছর মে মাসে টাকার অনুমোদন হয়েছে জানতে পেরে আনন্দ হয়েছিল। কিন্তু এখন জানতে পারছি, অন্যত্র উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র হবে। তাই আপত্তি তুলেছি। আমি চাই, দানের মর্যাদা দেওয়া হোক।” একই বক্তব্য বৃদ্ধার ছেলেদেরও। |