চাষিদের পেঁয়াজ চাষে উৎসাহ দিতে টাকা ও বীজ দেওয়া হবে। বিনিময়ে ফলনের পরে চাষিদের ১৫ কুইন্ট্যাল পেঁয়াজ দিতে হবে।
বাঁকুড়া জেলায় পেঁয়াজ চাষের ফলন বাড়াতে এমনই ফর্মূলা নিয়ে মাঠে নামছে জেলা পরিষদ। রাজ্য সরকারের কাছ থেকে ইতিমধ্যে জেলায় এসে গিয়েছে সাড়ে তিন কুইন্ট্যাল পেঁয়াজ বীজ। ব্লকে ব্লকে কৃষকদের এই বার্তা দেওয়াও শুরু হয়ে গিয়েছে। এ বার পেঁয়াজের আকালে বাঙালি কম হাহুতাশ করেনি। পেঁয়াজের জোগানের জন্য অন্য রাজ্যের মুখাপেক্ষী থাকায় রাজ্য সরকার ঘোষণা করেছিল আগামী দিনে পেঁয়াজের ফলন রাজ্যে বাড়ানো হবে। সেই উদ্দেশে কিছু পরিকল্পনার কথা ঘোষণাও করা হয়েছে। তবে এই জেলায় পেঁয়াজের ফলন খুব বেশি না হওয়ায় জেলা পরিষদের প্রয়াস কতটা সফল হবে, তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন কৃষি বিশেষজ্ঞরা।
বাঁকুড়ার জেলা সভাধিপতি অরূপ চক্রবর্তী বলেন, “পেঁয়াজের জোগান বৃদ্ধি করতেই আমরা জেলা পরিষদের নিজস্ব তহবিল থেকে এই উদ্যোগ নিয়েছি। এই প্রকল্পে প্রায় ৩৬ লক্ষ টাকা খরচ হতে পারে। তবে সব কিছু ঠিকঠাক চললে দ্বিগুণ লাভ হবে আমাদের। সেই সঙ্গে জেলার বাজারে পেঁয়াজের জোগানও বাড়বে।” তিনি জানাচ্ছেন, চাষিদের কাছ থেকে পাওয়া পেঁয়াজ সরাসরি রাজ্য সরকারকে বাজার মূল্যে বিক্রি করবে জেলা পরিষদ।
জেলা পরিষদ সূত্রের খবর, আপাতত জেলার নির্দিষ্ট কয়েকটি এলাকায় পেঁয়াজ চাষের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। খাতড়া, সোনামুখী, ওন্দা, বাঁকুড়া ২ ব্লকগুলি বেছে নেওয়া হয়েছে। ওই এলাকার চাষিদের জেলা পরিষদের ভাবনার কথা বোঝানো শুরু হয়ে গিয়েছে। জেলা উদ্যানপালন দফতর মাধ্যমে ওই পেঁয়াজ নিয়ে আসা হয়েছে।
এমনিতে রাজ্যে যা পেঁয়াজ উৎপাদন হয়, তাতে বাঁকুড়া জেলা অনেকটাই পিছিয়ে। জেলা কৃষি দফতর সূত্রের খবর, জেলায় রবি মরশুমে ১২০০ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ চাষ হয়। কয়েক জন কৃষি বিশেষজ্ঞের কথায়, “এই জেলায় বিঘা পিছু পাঁচ- ছয় কুইন্ট্যাল পেঁয়াজ উৎপাদন হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিঘা পিছু ১৫ কুইন্টাল পেঁয়াজ জেলা পরিষদ চাষিদের কাছ থেকে আশা করছে কী করে, প্রশ্ন তুলছেন তাঁরা। যদিও জেলা উদ্যান পালন দফতরের আধিকারিক সুপ্রতিক মৈত্র বিশেষজ্ঞদের উল্টো কথাই বলছেন। তিনি দাবি করেন, “ওই তথ্য ঠিক নয়। জেলায় বিঘা প্রতি ৩০ কুইন্ট্যাল পেঁয়াজ উৎপাদন করা যেতে পারে।” শুধু ৩৫০ বিঘা জমিতে পেঁয়াজ চাষ করেই ক্ষান্ত থাকতে নারাজ জেলা পরিষদ। জেলার চাষিদের পেঁয়াজ চাষের প্রশিক্ষণ দেওয়ার বিষয়েও চিন্তাভাবনা চলছে বলে জানিয়েছেন সভাধিপতি। তিনি বলেন, “বাঁকুড়া ২ ব্লকে ও ওন্দায় পেঁয়াজ চাষের প্রশিক্ষণ দেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। প্রাথমিক ভাবে সেখানে ২০০ জন চাষিকে এই প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। পেঁয়াজের ফল বাড়াতে সব রকম চেষ্টা করা হবে।” |