শুরু রাজনৈতিক তরজা
ইন্দাসে ছ’মাস বন্ধ কৃষি বার্ধক্য ভাতা, ক্ষোভ
পোশাকি নাম ‘কৃষি বার্ধক্য ভাতা’। মাসিক ভাতার পরিমাণ সাকুল্যে ৭৫০ টাকা। দেওয়া হয় তিন মাস অন্তর। তাও বন্ধ গত ছ’মাসের বেশি। ইন্দাস ব্লকের ঘটনার জন্য সদ্য ওই পঞ্চায়েত সমিতির ক্ষমতা পাওয়া তৃণমূলের বিরুদ্ধে রাজনীতি করার অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয় সিপিএম নেতৃত্ব।
টানা মাস ছয়েকের বেশি সময় ধরে এই ভাতা না পেয়ে ইন্দাস ব্লকের ১০৮ জন দুঃস্থ কৃষক এবং মৃত কৃষকদের বিধবা পত্নীরা চরম আর্থিক সঙ্কটে পড়েছেন। অবিলম্বে প্রাপ্য ভাতা দেওয়ার দাবিতে সরব হয়েছেন তাঁরা। এই ভাতা বন্ধ করার পিছনে রাজনৈতিক কারণ রয়েছে বলে দাবি স্থানীয় সিপিএম নেতৃত্বের। অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তৃণমূল পরিচালিত ইন্দাস পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি শেখ ফরিদা খাতুন। ইন্দাসের বিডিও পুষ্পেন্দু চট্টোপাধ্যায় বলেন, “কৃষি বার্ধক্য ভাতা পেতে সমস্যা হচ্ছে বলে জানি। এই ভাতা যাতে সময়মতো প্রাপকরা পান, সে জন্য কৃষি দফতরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে।”
কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বাঁকুড়া জেলার ২২টি ব্লকের ৩৭০০ জন দুঃস্থ কৃষক এবং মৃত কৃষকদের স্ত্রীদের ওই ভাতা দেওয়া হয়। সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েত সমিতির তরফে পাঠানো নামের তালিকা থেকে এই ভাতা দেয় রাজ্য কৃষি দফতর। এ জন্য প্রতি তিন মাস অন্তর প্রতিটি পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ভাতা প্রাপকদের আয়ের এবং জীবিত থাকার শংসাপত্র সম্বলিত নামের তালিকা মহকুমা কৃষি দফতরে পাঠায়। তার ভিত্তিতে কৃষি দফতর ডাকযোগে উপভোক্তাদের কাছে প্রাপ্য ভাতা পাঠিয়ে দেয়।
বাঁকুড়ার উপ-কৃষি অধিকর্তা অনন্তনারায়ণ হাজরা বলেন, “ইন্দাস ব্লকের উপভোক্তাদের শংসাপত্র নিয়ে সমস্যা দেখা দিয়েছে। তাই তাঁদের ভাতা পেতে দেরি হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে আমাদের কোনও গাফিলতি নেই।” বিষ্ণুপুর মহকুমা কৃষি দফতরের এক আধিকারিক অবশ্য জানিয়েছেন, ইন্দাস ব্লক থেকে সভাপতির স্বাক্ষরিত ‘কৃষি বার্ধক্য ভাতা’ প্রাপকদের জীবিত থাকার শংসাপত্র সম্বলিত তালিকা আসেনি। অথচ এই ভাতা দেওয়ার ক্ষেত্রে ওই শংসাপত্র অত্যন্ত জরুরি। সেই কারণে ইন্দাসের দুঃস্থ কৃষকদের ওই ভাতা দেওয়া যাচ্ছে না।
ইন্দাস পঞ্চায়েত সমিতি সূত্রে জানা গিয়েছে, ব্লকের ১০টি পঞ্চায়েতের ১০৮ জন এই ভাতা পান। গত এপ্রিল মাস থেকে ওই ভাতা দেওয়া বন্ধ রয়েছে বলে উপভোক্তাদের অভিযোগ। ইন্দাসের চারিগ্রামের বৃদ্ধা করুণা মাঝি, ঠাকুরানিদিঘি গ্রামের জামিলা বিবি, নারায়ণপুর গ্রামের সন্ধ্যা দাসদের ক্ষোভ, “জিনিসপত্রের যা দাম বেড়েছে, তাতে ওই সামান্য টাকায় সারা মাসের তেল-নুনের খরচই হয় না। তাও যা পাচ্ছিলাম তা মন্দের ভাল। কিন্তু গত ছয় মাস ধরে ভাতা না আসায় আমরা চরম আর্থিক সঙ্কটে পড়েছি। এখন ভাতা না পেলে আমরা খাব কী?” আড়াপুর গ্রামের বাসিন্দা বিশ্বনাথ রুইদাস বলেন, “ভাতা না পেয়ে আমরা অর্ধাহারে রয়েছি। পঞ্চায়েত সমিতির অবিলম্বে আমাদের ভাতা দেওয়ার ব্যবস্থা করা উচিত।”
সিপিএমের ইন্দাস জোনাল কমিটির সম্পাদক অসীম দাসের অভিযোগ, “ওই দরিদ্র মানুষগুলি দীর্ঘদিন ধরে ভাতা পাওয়ায় আমাদের দলকে সমর্থন করেন। সেই রোষেই তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েত সমিতি তাঁদের নামের তালিকা, আয় ও জীবিত থাকার শংসাপত্র মহকুমা কৃষি দফতরে পাঠায়নি।” এমনই দুঃস্থ কয়েকজন উপভোক্তাকে নিয়ে ইন্দাসের বিডিও কাছে অভিযোগ জানান সিপিএমের স্থানীয় নেতৃত্ব।
তবে ইন্দাস পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি শেখ ফরিদা খাতুন দাবি করেছেন, “আমরা সবে কয়েক মাস মাত্র পঞ্চায়েত সমিতির ক্ষমতা পেয়েছি। ব্লকের ১০টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে ৭টি পঞ্চায়েত থেকে কৃষি বার্ধক্য ভাতা প্রাপকদের সম্পর্কে তথ্য এসেছে। বাকি ৩টি পঞ্চায়েত থেকে এখনও ওই তথ্য আসেনি। এই কারণে ভাতা প্রাপকদের শংসাপত্র সম্বলিত তালিকা মহকুমা কৃষি দফতরে পাঠানো সম্ভব হয়নি। এতে রাজনীতির কিছু নেই।” ইন্দাস ব্লক তৃণমূলের যুগ্ম আহ্বায়ক রবিউল হোসেন বলেন, “পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠনে দেরির জন্য এই সমস্যা। আমরা সিপিএমের মতো প্রতিশোধের রাজনীতি করি না।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.