স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের মধ্যে বিলি করা হল হ্যান্ড ট্র্যাক্টর এবং অন্যান্য কৃষি যন্ত্রাংশ। ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল কমপ্রিহেনসিভ এরিয়া ডেভলপমেন্ট কর্পোরেশন’ বা সামগ্রিক অঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদের উদ্যোগে এই অনুষ্ঠান হল। মঙ্গলবার গাইঘাটার বাগনাতে প্রকল্পের দফতরে মহিলাদের হাতে তুলে দেওয়া হল ওই সমস্ত যন্ত্রাংশ। তুলে দিলেন প্রকল্পের জেলার মনিটারি কমিটির চেয়ারম্যান তথা বনগাঁ উত্তর কেন্দ্রের বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস। উপস্থিত ছিলেন প্রকল্পের আধিকারিক (গাইঘাটা) উপানন্দ মণ্ডল প্রমুখ।
কেন এই উদ্যোগ?
বিশ্বজিৎবাবু বলেন, “রাজ্য সরকারের পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের পক্ষ থেকে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের অর্থনৈতিক ভাবে নিজের পায়ে দাঁড় করাতেই এই উদ্যোগ। ওই সমস্ত যন্ত্রাংশ কাজে লাগিয়ে মহিলারা আরও বেশি করে লাভের মুখ দেখবেন বলে আমাদের আশা। পুরুষদের পাশাপাশি মহিলাদের জন্যও বিকল্প আয়ের রাস্তা খুলে যাবে। গ্রামীণ অর্থনীতির চেহারা এর ফলে পাল্টে যাবে।” প্রকল্প সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন মহিলাদের হাতে ৪টি হ্যান্ড ট্র্যাক্টর, ৪টি পাম্প সেট, ৪টি হ্যান্ড স্পেয়ার, ৮টি ধানঝাড়াই মেশিন-সহ নানা যন্ত্রাংশ তুলে দেওয়া হয়। বনগাঁ মহকুমার গোপালনগর ও শিমুলপুরের দুটি ক্লাস্টার ভুক্ত গোষ্ঠী ‘নিবেদিতা’ ও ‘শক্তি’র মহিলাদের হাতে সব যন্ত্রাংশ তুলে দেওয়া হয়েছে। এর ফলে প্রায় তিন হাজার মহিলা উপকৃত হবেন। উপানন্দবাবু বলেন, “এই সমস্ত যন্ত্রাংশ যেমন ওই মহিলারা নিজেরা ব্যবহার করতে পারবেন, তেমনই এলাকার অন্য চাষিদের ভাড়া দিয়েও রোজগার করতে পারবেন।” |
কৃষি যন্ত্রপাতি পেয়ে স্বাভাবিক ভাবেই খুশি মহিলারা। দুর্গা দাস, জ্যোৎস্না দে, পুতুল দত্ত জানালেন, ২০০৫ সালে তাঁরা স্বনির্ভর গোষ্ঠী তৈরি করেন। পরবর্তী সময়ে তাঁদের দলগুলি একত্র করে ‘ক্লাস্টার’ তৈরি করেন। মহিলারা জানান, অনেকেই বাড়িতে বিড়ি বাঁধেন, কেউ জামা কাপড় সেলাই করেন। সমিতি থেকেই মাসিক ২ শতাংশ হারে সুদে ঋণ নেন। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে চাষের জন্যই ঋণ নেন তাঁরা। মায়া দাস নামে এক মহিলার কথায়, “স্বামীর সঙ্গে আমি মাঠে কাজে যাই। তবে নিজে ট্র্যাক্টর চালাতে পারি না।” তবে এই সমস্ত যন্ত্রপাতি তাঁদের খুবই কাজে লাগে বলে জানালেন তিনি।
এ দিন দুপুরে দেখা গেল, ট্র্যাক্টর চালানোর কৌশল শিখতে উৎসাহ দেখাচ্ছেন অনেকেই। ভারতী রায় নামে এক মহিলা বলেন, “নিজেদের ট্র্যাক্টর যখন হল, তখন নিজেই শিখে খেতে চাষ করব।” তবে মহিলারা এই সমস্ত যন্ত্রাংশ ব্যবহার করে অর্থের সংস্থান বাড়াচ্ছেন কি না সে দিকে তাঁরা নজর রাখবেন বলে জানিয়েছেন প্রকল্প আধিকারিকরা। |