গাড়ি উল্টোতেই ষাঁড়ের ছুট, প্রাণ বাঁচাতে সংগ্রাম
শীতের সকাল।
রোদ পোহাতে অনেকেই রাস্তায় বেরিয়েছেন। ইছামতী সেতু লাগোয়া সংগ্রামপুর বাজারে চায়ের দোকানে ইতস্তত ভিড়। হঠাৎই বিকট শব্দ। সেতু থেকে নামতে গিয়ে বাঁকের মুখে উল্টে গিয়েছে একটি ষাঁড়-মোষে ভর্তি লরি। কী হয়েছে দেখতে এগিয়ে যেতেই ঘটল বিপত্তি। উল্টে এক পাল ষাঁড়ের তাড়া খেয়ে সকলেরই তখন “জ্যাঠা নিজের প্রাণ বাঁচা’ অবস্থা।
মঙ্গলবার ওই ঘটনায় বেশ কয়েক জন জখম হয়েছেন। এ ছাড়া গুরুতর আহত এক মহিলা ও তাঁর শিশুকন্যাকে বসিরহাট মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে অবস্থা খারাপ হওয়ায় তাঁদের কলকাতার আর জি করে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। চালক ও খালাসি লরিটি আটক করেছে পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, এ দিন সকাল ৬টা নাগাদ ষাঁড় ও মোষে ভর্তি একটি লরি ওল্ড সাতক্ষীরা রোড দিয়ে ঘোজাডাঙা সীমান্তের দিকে যাচ্ছিল। দ্রুতগতির জেরে সংগ্রামপুরের কাছে ইছামতী সেতু পার হয়ে বাঁক ঘুরতেই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে লরিটি উল্টে যায়। আর তার পরেই ঘটে বড় বিপত্তি। উল্টে যাওয়া লরি থেকে ষাঁড়েরা বেরিয়ে ভয়েই হোক বা খেপে গিয়ে এদিক ওদিক ছুটতে শুরু করে।
কার্টুন: সুমিত্র বসাক।
শীতের ভোরে রোদ পোহাতে অনেকেই তখন রাস্তায়। হঠাৎ চারপাশে বেশ কয়েকটা ষাঁড়কে দৌড়তে দেখে তাঁরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। ষাঁড়ের গুঁতো থেকে বাঁচতে সবাই তখন যে যে-দিকে পারেন ছুট লাগান। কয়েক জন রাস্তার ধারে ইছামতী নদীতে ঝাঁপ দেন। কেউ পড়ে গিয়ে ভয়ে কান্নাকাটি জুড়ে দেন। ভোরে হাঁটতে বেরিয়েছিলেন বাসুদেব বিশ্বাস। তাঁর কথায়, “লরিটা উল্টে যাওয়ার পরে ষাঁড়েরা যে এমন খেপে উঠবে, ভাবতে পারিনি। আচমকা কয়েকটা ষাঁড়কে এদিক ওদিক ছুটতে দেখে ভয়ে একটা দোকানে ঢুকে পড়ি। সেখান থেকেই দেখলাম ষাঁড়ের গুঁতো থেকে বাঁচতে কয়েক জন ছুটে গিয়ে নদীতে ঝাঁপ দিলেন।”
গোটা এলাকায় তখন ত্রাহি ত্রাহি রব। কিন্তু এ দিক-ও দিক ছুটতে থাকা ষাঁড়ের দলকে ঠেকাবে কে? যদিও তত ক্ষণে খবর পৌঁছে গিয়েছে বসিরহাট থানায়। তবে তার আগেই ষাঁড়ের গুঁতোয় জখম হয়েছেন সাত-আট জন। ঘটনাস্থল থেকে বেশ কিছুটা দূরে ইছামতীর পুরনো ফেরিঘাটের দিকে বাড়ি মমতা বিবির। বছর পঁয়তিরিশের মমতা পাঁচ বছরের মেয়ে সালমা খাতুনকে নিয়ে বাড়ির সামনে রোদে বসেছিলেন। হঠাৎ তাঁর দিকে একটি ষাঁড়কে ছুটে আসতে দেখে পড়িমড়ি করে মেয়েকে নিয়ে বাড়িতে ঢুকতে গিয়ে পড়ে যান। সেই অবস্থাতেই ষাঁড়টি তাঁকে গুঁতিয়ে দেয়। কোল থেকে ছিটকে যায় সালমা। রেহাই পায়নি সেও। তার পেটেও শিং দিয়ে গুঁতিয়ে দেয় ষাঁড়টি। শেষে গ্রামবাসীর তাড়ায় রণে ভঙ্গ দেয় সে। মা ও মেয়ে দু’জনকেই সঙ্গে সঙ্গে বসিরহাট মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় সেখানে থেকে তাঁদের কলকাতার আর জি কর হাসপাতালে পাঠানো হয়।
ইতিমধ্যে পুলিশ এসে পড়ে। স্থানীয় লোকজন ও পুলিশকর্মীরা মিলে কয়েকটি ষাঁড়কে ধরে সেগুলিকে খোঁয়াড়ে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.