|
|
|
|
গুপ্তচর ঘুম কেড়ে নিয়েছে বায়ার্ন কোচের |
নিজস্ব প্রতিবেদন |
এ যেন বাঘের ঘরে ঘোগের বাসা! আর তাতেই ঘুম ছুটেছে বায়ার্ন মিউনিখ কোচ পেপ গুয়ার্দিওলার।
মেসি-নেইমার কিংবা রোনাল্ডো-রুনি নয়। তাঁর দলের লকার রুমেই নাকি রয়েছে গুপ্তচর। দলের ট্যাকটিক্স-স্ট্র্যাটেজি সবই সে ফাঁস করছে সংবাদমাধ্যমের কাছে। আর তার জেরেই রেগে লাল গুয়ার্দিওলা।
ঘটনাটা কী? মিউনিখের দলটির ওয়েবসাইট সূত্রে খবর, গত শনিবার বুন্দেশলিগায় চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী বরুসিয়া ডর্টমুন্ডের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের আগের দিনই স্থানীয় সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়ে গিয়েছিল বায়ার্নের প্রথম দল এবং খেলার ট্যাকটিক্স এবং স্ট্র্যাটেজি। যেখানে বায়ার্নের প্রথম দল তো বটেই, নির্দিষ্ট করে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল, ডর্টমুন্ডের ডিফেন্সিভ থার্ডের সামনে গিয়ে কী ভাবে পাসিং ফুটবল খেলতে খেলতে হঠাৎই থার্ড মুভ হবে, কে সেই থার্ড-ম্যান মুভের দায়িত্ব পালন করবেন কিংবা ‘সেকেন্ড বল’ বা ‘ফার্স্ট বল’ ধরে গোলের দরজা খোলার স্ট্র্যাটেজিটা কী হবে। ম্যাচের দিন সকালে এ নিয়ে হইচই না করলেও ডর্টমুন্ডকে ৩-০ হারিয়ে উঠেই সাংবাদিকদের ওপর প্রথম তোপ দাগেন গুয়ার্দিওলা। বলেন, “আমার দলের ফুটবলারদের কব্জা করে দলের খবরাখবর নেওয়ার কী দরকার। টিম মিটিংয়ের সময় বলবেন কারা কারা থাকতে চান। তাঁদের সামনে রেখেই আমি মিটিং সারব। কিন্তু দয়া করে ফুটবলারদের ফোন করে বিরক্ত করবেন না।”
এর পরেই এক হাত নেন ফুটবলারদের। বলেন, “আমার দলে কে এই গুপ্তচরের কাজটা করছে তাকে চিহ্নিত করার চেষ্টা করছি। ধরা পড়লেই তাকে দল থেকে ছুড়ে বের করে দেওয়া হবে। কোনওদিন আমার দলে সে সুযোগ পাবে না।” |
|
চিন্তায় গুয়ার্দিওলা |
গুয়ার্দিওলার এই মন্তব্য সংবাদমাধ্যমে আসতেই শুরু হয়ে গিয়েছে জল্পনা। মিউনিখের কোনও কোনও সংবাদপত্র ভিলেন বানিয়ে দিয়েছিল চলতি মরসুমেই বরুসিয়া ডর্টমুন্ড থেকে বায়ার্নে আসা মারিও গোৎজেকে। কারণ হিসাবে বলা হয়েছিল, যেহেতু বরুসিয়া তাঁর পুরনো ক্লাব তাই স্থানীয় সাংবাদিকদের অনেকেই চেনা গোৎজের। তাঁদের সঙ্গে অন্তরঙ্গ আড্ডায় দলের রণকৌশল ফাঁসও করে দিতে পারেন গোৎজের। কিন্তু পরে বায়ার্নের তরফেই প্রকাশিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়ে দেওয়া হয়, গোৎজে এই কাণ্ডে কোনও ভাবেই জড়িত নয়।
তা হলে? কী ভাবে ফুটবলারদের মধ্যে লুকিয়ে থাকা গুপ্তচরকে খুঁজে বের করবেন পেপ তা নিয়েও কয়েক দফা জল্পনা শুরু হয়ে গিয়েছে ইউরোপের ফুটবলমহলে। রসিকতার সঙ্গে যার মধ্যে রয়েছে রাজনৈতিক ছোয়াও। যেমন মাসখানেক আগেই জানা গিয়েছিল, জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মর্কেলের ফোন ট্যাপ করত মার্কিন সিক্রেট সার্ভিসের ন্যাশনাল সিকিউরিটি এজেন্সি (এনএসএ)। তাই ফুটবলারদের কে কাকে ফোন বা মেসেজ করছে তা খতিয়ে জানতে এনএসএ-র জন্য দরবার করেছেন কেউ কেউ। কোনও কোনও প্রচারমাধ্যমে আবার রসিকতার মাত্রা আরও এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে গিয়ে বলেছে, গুয়ার্দিওলাকে বিব্রত করতে এটা জ্লাটন ইব্রাহিমোভিচের প্ল্যান নয়তো? অতীতে ইব্রার সঙ্গে মনোমালিন্য হয়েছিল পেপের।
এ রকম হাস্যকর প্রতিবেদন প্রকাশের পর আসরে নামতে বাধ্য হয়েছেন বায়ার্নের চিফ এগজিকিউটিভ কার্ল হেইঞ্জ রুমেনিগে। লকার রুমে যে গুপ্তচর রয়েছে তা স্বীকারও করে নিয়েছেন তিনি। বলছেন, “কী আর করি। এনএসএ কে তো আর ডাকতে পারি না। যে এটা করছে তাকে বুঝতে হবে এটা শুধু পেপ গুয়ার্দিওলার ক্ষতি নয়। গোটা দলের ক্ষতি। সুতরাং দলের কথা ভেবে গুপ্তচরবৃত্তি বন্ধ হোক।”
বুধবারই চ্যাম্পিয়ন্স লিগে সিএসকেএ মস্কোর বিরুদ্ধে খেলা বায়ার্নের। কলমচিদের প্রশ্ন এখন এটাই, মস্কোর লকাররুমে গুয়ার্দিওলা টিম মিটিং কী ভাবে করবেন। ইশারায় না সাঙ্কেতিক চিহ্নের মাধ্যমে। বায়ার্ন কোচ যদিও বলেছেন, “টিম মিটিং হবে আগের মতোই। তবে গুপ্তচর ধরা পড়বেই।” অপেক্ষা তাই চূড়ান্ত সময়ের। |
|
|
|
|
|