নতুন বোর্ডে নবীন প্রার্থীর ভিড়, কাজে গতির আশা
৫ জন সদস্যের ১২ জনই নতুন। মেদিনীপুরে এ বার যে পুরবোর্ড হবে, তাতে ‘নতুন মুখের’ই প্রাধান্য। এঁদের পুর-প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করার অভিজ্ঞতা নেই। এর ফলে কাজের ক্ষেত্রে গোড়ার দিকে যেমন কিছু সমস্যা হবে, তেমনই নতুন চিন্তাভাবনা, নতুন পরিকল্পনায় কাজে গতি আসবে বলেই মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল। কারণ, যাঁরা নতুন কাউন্সিলর, তাঁদের নতুন কিছু করার তাগিদ থাকবেই।
মেদিনীপুরের বিধায়ক তথা জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান মৃগেন মাইতি মানছেন, “এ বার যে পুরবোর্ড হবে, তাতে ‘নতুন মুখের’ই প্রাধান্য থাকবে। এ জন্য গোড়ায় হয়তো কিছু সমস্যা হবে। তবে, নতুনদের তো সুযোগ দিতেই হবে। আমাদের ১৩ জন কাউন্সিলরের মধ্যে ৯ জন নতুন।” পুরবোর্ডের নতুন সদস্যদের অন্যতম কংগ্রেসের কৌস্তভ বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর মতে, “গোড়ায় হয়তো কিছু সমস্যা হতে পারে। তবে, কাজ করতে করতেই তো কাজ শিখতে হয়। আশা করি, এলাকার মানুষ সব সময় আমার পাশে থাকবেন।”
মৌ রায় রোকাইয়া খাতুন নির্মাল্য চক্রবর্তী
‘নতুন মুখের’ ছড়াছড়ি সব থেকে বেশি তৃণমূলে। দলের জয়ী ১৩ জনের মধ্যে মাত্র ৪ জনের পুর-প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করার পূর্ব অভিজ্ঞতা রয়েছে। এঁরা হলেন প্রণব বসু, শিপ্রা মণ্ডল, শ্যামল ভকত এবং রাধারানি বেরা। বাকি ৯ জনই নতুন। পুরনোদের মধ্যে প্রণববাবুই প্রবীণ। তিনিই শহরের বিদায়ী পুরপ্রধান। নতুনদের মধ্যে কাউকে পুরপ্রধান করতে হলে কার ভাগ্যে শিকে ছিঁড়বে?
তৃণমূলের এক সূত্রের মতে, এ ক্ষেত্রে দু’টি নাম আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে। মৌ রায় এবং জিতেন্দ্রনাথ দাস। মৌদেবী মহিলা তৃণমূলের শহর সভানেত্রী। তিনি যে এলাকা থেকে জিতেছেন, সেই ৫ নম্বর ওয়ার্ড সিপিএমের ‘দুর্ভেদ্য ঘাঁটি’ হিসেবে পরিচিত। এই এলাকাতেই থাকেন সিপিএমের জেলা সম্পাদক দীপক সরকার, সিপিআই সাংসদ প্রবোধ পাণ্ডা। ফলে, মৌদেবী যে রীতিমতো শক্ত লড়াইয়ে জিতেছেন, তা বলাই বাহুল্য। অন্য দিকে, ২৩ নম্বর ওয়ার্ড থেকে নির্বাচিত জিতেন্দ্রনাথবাবু তৃণমূলের ওয়ার্ড সভাপতি। তাঁর লড়াইটাও কঠিন ছিল। কারণ, প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন সিপিএমের শহর জোনাল সম্পাদক কীর্তি দে বক্সী, বিদায়ী উপ-পুরপ্রধান এরশাদ আলি। দুই ‘হেভিওয়েট’ প্রার্থীকে হারিয়ে শেষ হাসি হেসেছেন জিতেন্দ্রনাথবাবু। তবে পুরসভার কাজে একেবারে অনভিজ্ঞ, নতুন কাউকে দলের শীর্ষ নেতৃত্ব পুরপ্রধানের গুরু দায়িত্ব সঁপেন কিনা, সেটাই দেখার।
তৃণমূলের অন্য নবীন প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন অণিমা সাহা, টোটন সাসপিল্লি, কল্পনা মুখোপাধ্যায়, লিপিকা পাণ্ডব, পূর্ণিমা পড়িয়া, অনিলচন্দ্র দলবেরা, নির্মাল্য চক্রবর্তী। এঁদের সকলেরই বয়স ৩০ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে। অন্য দলের নবীন প্রার্থীদের মধ্যে পাল্লা ভারী কংগ্রেসের। কৌস্তভ বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়াও হাত চিহ্নে জয়ী দুই নতুন কাউন্সিলর হলেন রোকাইয়া খাতুন ও হিমাংশু মাইতি।
মেদিনীপুরে সদ্যসমাপ্ত পুরভোটে মোট ১১৫ জন প্রার্থী ছিলেন। এর মধ্যে ৩৫ জনেরই জামানত জব্দ হয়েছে! এই তালিকায় কংগ্রেস-বিজেপি-সিপিএমের মতো প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক দলের প্রার্থীরাও রয়েছেন। কংগ্রেসের ২৪ জন প্রার্থীর মধ্যে ১০ জনের জামানত জব্দ হয়েছে। বিজেপির ১৪ জন প্রার্থীর মধ্যে ৯ জনের জামানত জব্দ হয়েছে। সিপিএমের ১৩ জন প্রার্থীর মধ্যে ৩ জনের জামানত জব্দ হয়েছে।
ছবিটা ঠিক কেমন? ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে ২৭২৫ জন ভোট দিয়েছেন। সিপিএম প্রার্থী শম্ভু দিণ্ডা মাত্র ৬৯টি ভোট পেয়েছেন! ১১ নম্বর ওয়ার্ডে ২৩৯৭ জন ভোট দিয়েছেন। কংগ্রেস প্রার্থী আজম আলি পেয়েছেন মাত্র ৫২টি ভোট! ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে ৪০৩৯ জন ভোট দিয়েছেন। বিজেপি প্রার্থী সুমিতা আঢ্যের ঝুলিতে এসেছে মাত্র ৫৬টি ভোট। বিপর্যয়ের কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে সিপিএমের জেলা সম্পাদক দীপক সরকার বলেন, “জনগণ তৃণমূলকে ভোট দিয়েছেন। এখনও ওদের পক্ষে রয়েছেন। ফলাফলের বুথ ভিত্তিক পর্যালোচনা হবে। আমরা সব দিকই খতিয়ে দেখব।” কংগ্রেসের জেলা সভাপতি স্বপন দুবের কথায়, “আমাদের আসন ৪ থেকে বেড়ে ৬ হয়েছে। তবে কয়েকটি ওয়ার্ডে দলের প্রার্থীরা কম ভোট পেয়েছেন। আমরা পর্যালোচনা করব।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.