বিদায়ী পুরপ্রধান প্রণব বসুর সঙ্গে উঠে আসছে অন্য নামও
পুরপ্রধান-উপপুরপ্রধান কে, জোর জল্পনা
তদিন ছিল ভোট বৈতরণী পার করার লড়াই। ২৫টির মধ্যে ১৩টি ওয়ার্ড দখল করে সেই পরীক্ষায় উতরে গিয়েছে তৃণমূল। এখন চলছে অন্য জল্পনা। কে হবেন মেদিনীপুরের পরবর্তী পুরপ্রধান, কার ভাগ্যেই জুটবে উপ-পুরপ্রধানের পদ। তিন সিআইসি (চেয়ারম্যান ইন কাউন্সিলর) পদই বা কাদের দখলে যাবে।
এ বিষয়ে এখনই মুখ খুলতে রাজি নন জেলার তৃণমূল নেতৃত্ব। তবে দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ২৯ তারিখ কলকাতায় যাবেন তৃণমূল নেতৃত্ব। সেখানে এ বিষয়ে আলোচনা হবে। রাজ্য নেতৃত্বই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন। তৃণমূলের জেলা কার্যকরী সভাপতি প্রদ্যোত্‌ ঘোষ বলেন, “সবে তো নির্বাচন শেষ হয়েছে। এ ব্যাপারে তাড়াহুড়োর তো কিছু নেই। কয়েকদিনের মধ্যেই দলীয় বৈঠকে বিস্তারিত আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”
তৃণমূল এ বার একা মেদিনীপুরে পুরবোর্ড গড়বে। প্রাক্তন পুরপ্রধান তৃণমূলের প্রণব বসু জিতেছেন। সদ্য জয়ী দলের ১৩ জন কাউন্সিলরের মধ্যে প্রণববাবুই সব থেকে অভিজ্ঞ। বিদায়ী পুরপ্রধানই কি ফের পরবর্তী পুরপ্রধান হিসেবে শপথ নেবেন? তৃণমূলের এক সূত্রের মতে, সম্ভাবনা যে একেবারে নেই তা নয়, তবে কম। কারণ, সেই গোষ্ঠী- কোন্দল। জেলায় মুকুল রায় এবং শুভেন্দু অধিকারীর অনুগামীদের মধ্যে বিরোধ সকলেরই জানা। প্রণববাবু শুভেন্দু-অনুগামী বলে পরিচিত। অন্য দিকে, তৃণমূলের জেলা চেয়ারম্যান মৃগেন মাইতি, জেলা সভাপতি দীনেন রায় হলেন মুকুল-ঘনিষ্ঠ। এ বার যাঁরা জিতেছেন তাঁদের মধ্যে মুকুল-অনুগামীর ছড়াছড়ি। ফলে, প্রণববাবুর ফের পুরপ্রধান হওয়ার সম্ভাবনা কম বলেই মনে করা হচ্ছে।
এ বার পুরভোটের আগে তৃণমূল যেমন কোনও ইস্তেহার প্রকাশ করেনি, তেমন কে পুরপ্রধান পদপ্রার্থী, তা-ও ঘোষণা করেনি। দুর্গাপুজোর আগে পুরভোটের রণকৌশল ঠিক করতে মেদিনীপুরে এসে বৈঠক করেছিলেন দুই সাংসদ মুকুল রায় এবং শুভেন্দু অধিকারী। বৈঠকে মেদিনীপুরের জন্য ৬ সদস্যের একটি কমিটিও গড়া হয়েছিল। সিদ্ধান্ত হয়েছিল, এই কমিটিই পুরসভা নির্বাচনের কাজকর্ম দেখভাল করবে। দলীয় সূত্রে খবর, পুরভোটের দায়িত্বপ্রাপ্ত কমিটির বৈঠকে প্রার্থীদের নামের তালিকা রাজ্য নেতৃত্বের কাছে পাঠানোর জন্য প্রস্তাব গৃহীত হয়। ৫ জন সদস্য সই করলেও সম্মতি দেননি প্রণববাবু। প্রস্তাবপত্রে সইও করেননি তিনি। জেলা তৃণমূলের এক নেতা বলছিলেন, “যিনি প্রস্তাবপত্রে সই করেননি, দল তাঁকে পরবর্তী পুরপ্রধান করবে, এমন সম্ভাবনা কম।” তবে এ বার যেহেতু কোনওমতে সংখ্যা গরিষ্ঠতা পেয়েছে তৃণমূল, সে ক্ষেত্রে প্রণববাবুর কপাল খুললেও খুলতে পারে।
অন্য অভিজ্ঞ কাউন্সিলররা হলেন শ্যামল ভকত, রাধারানি বেরা ও শিপ্রা মণ্ডল। কিন্তু পুরপ্রধান পদে এঁরা কতটা উপযুক্ত তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে দলেই। বিশেষত, যেখানে বিরোধী ১২ জনের মধ্যে ৩ জন বাদে সকলেই একাধিকবারের কাউন্সিলর। বিরোধীদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন কংগ্রেসের শম্ভু চট্টোপাধ্যায়, সৌমেন খান, বামফ্রন্ট-বিকাশ পরিষদ জোটের নাজিম আহমেদ, অসিত মহাপাত্র, গোপাল ভট্টাচার্য। নাজিম আহমেদ বহু বছর পুরপ্রধান ছিলেন। আর শম্ভুবাবু উপ-পুরপ্রধানের দায়িত্বও সামলেছেন। এই পরিস্থিতিতে কেবল পুরপ্রধান-উপপুরপ্রধান বাছতে রীতিমতো বেগ হতে হচ্ছে তৃণমূল নেতৃত্বকে। তৃণমূল সূত্রে খবর, দলের একাংশ নতুন কাউন্সিলর মৌ রায়কে পুরপ্রধান হিসাবে চাইছে। সেক্ষেত্রে আবার অন্য সমস্যা হতে পারে। বিরোধীরা যদি প্রণব বসুর নাম পুরপ্রধান হিসাবে প্রস্তাব করে ১২টি ভোট দিয়ে দেন এবং প্রণববাবু নিজে নিজের ভোট দেন, তবে তিনিই পুরপ্রধান হয়ে যাবেন। তখন দলে ভাঙন ধরার আশঙ্কা। এই পরিস্থিতি ঠেকাতে তৃণমূল চাইছে কংগ্রেস থেকে অন্ত ২ জন কাউন্সিলরকে দলে টানতে। সেই প্রস্তুতিও শুরু হয়ে গিয়েছে। তিন জন তৃণমূল কাউন্সিলরের সঙ্গে প্রাথমিক কথাও হয়েছে বলে দলীয় সূত্রে খবর। শেষ পর্যন্ত জল কোন দিকে গড়ায়, শহরবাসীর এখন সেটাই কৌতুহল। তৃণমূলের এক নেতার কথায়, “সব দিক বিচার-বিবেচনা করেই রাজ্য নেতৃত্ব সিদ্ধান্ত নেবেন।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.