নজরদারি কেলেঙ্কারিই নতুন অস্ত্র কংগ্রেসের
রুণীর ওপর নজরদারি সংক্রান্ত অভিযোগকে হাতিয়ার করেই লোকসভা ভোটের আগে বিজেপির গড়া মোদীর অতিমানব ভাবমূর্তি চুরমার করতে নেমে পড়ল কংগ্রেস।
সম্প্রতি ‘কোবরাপোস্টের’ একটি তথ্য ফাঁসে জানা গিয়েছে, কী ভাবে এক নিরপরাধ তরুণীর ওপর নজরদারির জন্য গুজরাত পুলিশের শীর্ষ কর্তাদের নিয়োগ করেছিল মোদী প্রশাসন। ‘সাহেবের’ বিশেষ আগ্রহের কারণে তাঁর ওপর দিবারাত্র পুলিশি নজরদারিতে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন মোদী মন্ত্রিসভার বিতর্কিত সদস্য অমিত শাহ নিজে।
তরুণীর ব্যক্তিগত গোপনীয়তায় হস্তক্ষেপের অভিযোগ তুলে ইতিমধ্যেই এ নিয়ে বিচারবিভাগীয় তদন্ত দাবি করেছে কংগ্রেস। এমনকী ৪৪টি মহিলা সংগঠনের প্রতিনিধিদের নিয়ে রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে কাল দেখা করে এর বিহিত চেয়েছেন কংগ্রেস নেতারা। কংগ্রেস সূত্রে এ কথাও বলা হচ্ছে, সংসদের আসন্ন শীতকালীন অধিবেশনেও এই ঘটনা নিয়ে তাঁরা মোদীর বিরুদ্ধে সরব হবেন। শরিক ও সমর্থক দলগুলির নেতাদের সঙ্গেও এ ব্যাপারে আলোচনা শুরু করেছেন কংগ্রেস নেতারা। চাপের মুখে আজ এই ঘটনার তদন্তে দুই সদস্যের একটি কমিশন গড়েছে গুজরাত সরকার। তিন মাসের মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে কমিশনকে। তবে সরকারের এই পদক্ষেপকে ‘চোখে ধুলো দেওয়ার চেষ্টা’ বলেই প্রচার করছে কংগ্রেস।
প্রশ্ন হল, সব কিছু ছেড়ে কেন এই বিষয়টি নিয়ে মোদীর বিরুদ্ধে আদা-জল খেয়ে নেমেছে কংগ্রেস?
অন্যতম কারণ, গোধরা কাণ্ড ছাড়া ব্যক্তি নরেন্দ্র মোদীকে বিঁধতে কংগ্রেসের হাতে তেমন অস্ত্র নেই। এমনকী মোদীর বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িকতার অভিযোগও কালের নিয়মে লঘু হচ্ছে। পরিবর্তে আলোচনায় উঠে আসছে মোদীর উন্নয়নমুখী মনোভাব ও দৃঢ় সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতার বিষয়টি। আরও কোণঠাসা হচ্ছে কংগ্রেস। এ অবস্থায় নজরদারির মামলাটি নিয়ে দেশ জুড়ে প্রচার করে মোদী-চরিত্রের ‘অন্য দিকটি’ তুলে ধরে মানুষকে সতর্ক করতে চাইছেন কংগ্রেস নেতারা। বিশেষ করে মহিলা ও যুব সম্প্রদায়কে সতকবার্তা দিতে চাইছেন তাঁরা। তাঁদের কথায় ইনি প্রধানমন্ত্রী হলে ব্যক্তিগত গোপনীয়তা বলে কিছু থাকবে না। যখন-তখন যার-তার ফোন ট্যাপ হতে পারে। যে কোনও লোকের ওপর নজরদারি করতে পারে পুলিশ।
বিষয়টি নিয়ে মোদীর বিরুদ্ধে আঙুল তুলেছেন গুজরাত প্রশাসনের প্রাক্তন কর্তা প্রদীপ শর্মাও। এ ব্যাপারে সুপ্রিম কোর্টে একটি এফিডেভিট জমা দিয়ে প্রদীপ শর্মা এমন দাবিও করেছেন, ওই তরুণীর সঙ্গে ব্যক্তিগত সম্পর্ক ছিল মোদীর। আর কংগ্রেসের প্রশ্ন, কোন আইনে গুজরাত পুলিশের অপরাধ দমন শাখা, রাজ্য গোয়েন্দা বিভাগ ও জঙ্গি দমন শাখাকে নিয়োগ করেছিল মোদী সরকার?
কেন তাতে নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন খোদ অমিত শাহ?
এ প্রশ্নের জবাব অবশ্য নরেন্দ্র মোদী বা অমিত শাহ এখনও দেননি। তবে বিজেপি নেতারা মোদীর পক্ষে দাঁড়িয়েছেন। তাঁদের বক্তব্য, এ সব ছিঁচকে বিষয় নিয়ে মোদী জবাব দেবেন কেন? অরুণ জেটলির কথায়, “মোদীর বিরুদ্ধে এখন অস্ত্র পাচ্ছে না কংগ্রেস। তাই নোংরা খেলায় নেমেছে তারা।
কিছু ছুটকো-সাসপেন্ড হওয়া অফিসারের মন্তব্যকে হাতিয়ার করে কাদা ছেটাচ্ছেন মোদীর গায়ে।” বিজেপি নেতৃত্ব এই যুক্তিও দিচ্ছেন, ওই তরুণীর নিরাপত্তার জন্যই নজরদারি চালিয়েছিল গুজরাত পুলিশ। তবে ঘরোয়া আলোচনায় বিজেপি নেতারাও স্বীকার করছেন, এ ঘটনায় তাঁরা যথেষ্টই অস্বস্তিতে। এমন স্পর্শকাতর বিষয় নিয়ে মোদীর পক্ষে যুক্তি সাজাতেও তাঁদের সমস্যা হচ্ছে।
তবে জেটলির মন্তব্য নিয়ে কাল পাল্টা তোপ দাগেন কংগ্রেস নেতারা। পি সি চাকো বলেন, মাত্র ক’দিন আগে তাঁর ফোন ট্যাপ হওয়ার অভিযোগ তুলে জেটলি তোলপাড় করেছিলেন। আর এখন অন্যের ফোন ট্যাপের অভিযোগকে গুরুত্ব দিতে চাইছেন না! চাকোর দাবি, যে অফিসার মোদীর বিরুদ্ধে আঙুল তুলেছেন, সেই প্রদীপ শর্মা একদা মুখ্যমন্ত্রী মোদীর খুবই প্রিয়পাত্র ছিলেন।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.