বিশ্ববিদ্যালয়-চত্বরে মদ্যপান এবং অন্যান্য নেশা রুখতে কঠোর হচ্ছেন প্রেসিডেন্সি-কর্তৃপক্ষ। এই নিয়ে নির্দিষ্ট আচরণবিধিও তৈরি হচ্ছে। সেই প্রক্রিয়ার মধ্যেই মদ খেয়ে পরীক্ষা দিতে আসার অপরাধে মঙ্গলবার একটি ছাত্রকে এক বছরের জন্য সাসপেন্ড করল বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা রক্ষা কমিটি। কর্তৃপক্ষ জানান, যে-আচরণবিধি প্রণয়ন করা হচ্ছে, তাতে এই ধরনের অপরাধের ক্ষেত্রে বহিষ্কারের সংস্থানও থাকছে।
ক্যাম্পাসে ছাত্রছাত্রীদের জন্য প্রস্তাবিত আচরণবিধিতে মূলত যে-সব বিষয়ের উপরে জোর দেওয়া হচ্ছে, তার প্রথমটিই হল, নেশাভাঙকে প্রশ্রয় দেওয়া হবে না। বিশ্ববিদ্যালয়ের খবর, এ দিন যাঁকে সাসপেন্ড করা হয়েছে, তিনি অর্থনীতির প্রথম বর্ষের পড়ুয়া। ১৯ নভেম্বর তিনি মদ খেয়ে অনার্স চতুর্থ পত্রের পরীক্ষা দিতে আসেন। আগে তিনটি পত্রের পরীক্ষা ঠিকঠাক দিলেও চতুর্থ দিনে পরীক্ষা দিতে আসার আগে তিনি মদ্যপান করেন বলে অভিযোগ। কর্তৃপক্ষ তার প্রমাণও পেয়েছেন এবং তার পরেই তাঁর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়। ২০১৪ সালের অগস্টে ওই ছাত্র ফের ক্লাস করতে পারবেন। তার জন্য তাঁকে নতুন করে আর ভর্তি হতে হবে না।
১৯ নভেম্বর ঠিক কী হয়েছিল?
প্রেসিডেন্সি-কর্তৃপক্ষ জানান, সে-দিন পরীক্ষার হলে দু’জন মহিলা পরিদর্শক প্রথমে ওই ছাত্রকে দেখে ভেবেছিলেন, তিনি অসুস্থ। তাই তাঁরা ওই বিভাগেরই সিনিয়র কিছু পড়ুয়াকে পরীক্ষার হলে ডেকে ওই ছাত্রকে অন্য ঘরে নিয়ে যেতে বলেন। অভিযুক্ত ছাত্রটিকে অন্য ঘরে নিয়ে যাওয়ার সময়েই সিনিয়ররা বুঝতে পারেন, তিনি মদ্যপান করেছেন। তাঁরাই বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানান। রেজিস্ট্রার প্রবীর দাশগুপ্ত ছাত্রটিকে ডেকে কথা বলতে গিয়ে অভিযোগের সত্যতা টের পান। ওই ছাত্রের ব্যাগে মদের দু’টি খালি বোতল, প্রচুর গুটখার প্যাকেট পাওয়া যায়। কর্তৃপক্ষ খবর পাঠান ওই ছাত্রের বাড়িতে। সে-দিনই ছাত্রটির বাবা এসে ছেলেকে নিয়ে যান।
বিশ্ববিদ্যালয়-কর্তৃপক্ষ জানান, ওই ছাত্র খুবই মেধাবী। ক্লাসে তাঁর উপস্থিতির হার কম থাকলেও বিভাগের অন্তর্বর্তী রিপোর্ট যথেষ্টই ভাল। সম্ভবত পারিবারিক পরিবেশ এবং একাকীত্ব থেকেই তিনি এমন কাণ্ড ঘটনা ঘটিয়েছেন। শাস্তির সিদ্ধান্ত জানার পরে ওই ছাত্র এ দিন কর্তৃপক্ষের কাছে ক্ষমা চেয়ে নেন। প্রবীরবাবু জানান, অভিযুক্ত ছাত্রের বাবা তাঁকে জানিয়েছেন, তাঁর ছেলে মানসিক অবসাদে ভুগছেন। এর আগে স্কুলে পড়ার সময়েও অবসাদের জন্য এক বছর তাঁর পড়া বন্ধ ছিল। |