শতাব্দী প্রাচীন শান্তিনিকেতন ট্রাস্টে বদল
‘চ্যারিটেবল ট্রাস্ট’ হিসেবে সরকারি স্বীকৃত পেল শতাব্দী প্রাচীন ‘শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট’। ১৮৮৮ সালের ১৫ মে দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর ট্রাস্টটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তা পর থেকে ওই ট্রাস্ট এলাকার বিভিন্ন জনকল্যাণমূলক কাজের দেখভাল করলেও সরকারি ভাবে একটি ‘চ্যারিটেবল ট্রাস্ট’ হিসেবে তার স্বীকৃতি ছিল না। সম্প্রতি সমস্ত সরকারি পদ্ধতি মেনে শান্তিনিকেতন ট্রাস্টকে চ্যারিটেবল ট্রাস্ট হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করানোর আবেদন জানিয়েছিলেন বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। গত ২১ নভেম্বর ট্রাস্টের পুরনো ডিড ‘রি-রেজিস্ট্রেশন’ করানোর মাধ্যমে বদলের কাজটি সম্পূর্ণ হয়।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সাংবাদিক বৈঠকে এ কথা জানিয়ে ট্রাস্টের সাম্মানিক সম্পাদক অনিল কোনার বলেন, “এই পরিবর্তনের পরে শান্তিনিকেতন ট্রাস্টের জনকল্যাণমূলক কাজের পরিধি আরও বাড়বে। ইতিমধ্যেই ট্রাস্ট বিশ্বভারতীর পল্লি সম্প্রসারণ কেন্দ্রের আওতায় থাকা ৫৪টি গ্রামে নানা জনকল্যাণমূলক কাজে হাত লাগিয়েছে।” এর ফলে শান্তিনেকেতন ট্রাস্ট এ বার থেকে কোনও করই দিতে হবে না। ট্রাস্টকে যাঁরা অর্থ সাহায্য করবেন, তাঁরা কর ছাড়ের সুযোগ পাবেন। গত বছর পৌষ মেলার পরে পুরনো বকেয়া, গত বছরের আয়কর ও পরিষেবা কর বাবদ ট্রাস্টকে কেন্দ্র সরকারের তহবিলে প্রায় দশ লক্ষ টাকা জমা দিতে হয়েছিল।
বিশ্বভারতী সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রথম উপাচার্য রথীন্দ্রনাথ ঠাকুর শান্তিনিকেতন ট্রাস্টের ট্রাস্টি ছিলেন। তার পর থেকে প্রচলিত প্রথা অনুযায়ী উপাচার্যই সেখানকার ট্রাস্টি হয়েছেন। কিন্তু তার কোনও আইনসিদ্ধ দলিল ছিল না। নতুন ডিডে পদাধিকার বলে বিশ্বভারতীর উপাচার্যকে ট্রাস্টের স্থায়ী সদস্য করা হয়েছে। বর্তমানে উপাচার্য সুশান্ত দত্তগুপ্ত ছাড়াও ট্রাস্টি হিসেবে রয়েছেন অধ্যাপিকা সবুজকলি সেন এবং কালিকারঞ্জন চট্টোপাধ্যায়। মূলত বর্তমান উপাচার্যের উদ্যোগেই গত বছর থেকে শান্তিনিকেতন ট্রাস্টকে ঢেলে সাজার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল। এ ব্যাপারে বিশেষ দায়িত্ব দেওয়া হয় অনিলবাবু, কালিকাবাবু এবং সবুজকলিদেবীকে। সব রকমের সরকারি নিয়ম-নীতি মেনে ট্রাস্টের কাজ তদারকি করার সঙ্গে সঙ্গে ট্রাস্টের সমস্ত আয়-ব্যয়ের হিসেব ঠিক রাখার প্রতিও নজর রাখতে নির্দেশ দেন উপাচার্য। অন্য দিকে, বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে শান্তিনিকেতন ট্রাস্টের যাবতীয় নথি সংস্কার ও পুনরুদ্ধারেও।
এ দিকে বিভিন্ন জায়গায় অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে থাকা কিংবা বেদখল হয়ে যাওয়া শান্তিনিকেতন ট্রাস্টের জমিগুলি পুনরুদ্ধারে নেমেছেন কর্তৃপক্ষ। দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের তৈরি করা ডিডের প্রথম তফশিলে, ১৮৬২ সালে ছাতিমতলা, ১৮৬৩ সালে শান্তিনিকেতন বাড়ি, ১৯০৪ সালে ব্রহ্ম মন্দির-সহ শান্তিনিকেতন এলাকার ১৫.০৫ একর জমিকে ট্রাস্টের সম্পত্তি হিসেবে দেখানো হয়েছে। আবার দ্বিতীয় তফশিলে ট্রাস্টের সম্পত্তি হিসেবে বাংলাদেশের রাজশাহি, ওড়িশার কটক, হুগলির চন্দননগর, নদিয়ার কৃষ্ণনগর এলাকায় সম্পত্তি থাকার কথাও উল্লেখ রয়েছে। অনিলবাবুরা এ ব্যাপারে যোগাযোগ করলে ওড়িশা সরকার জানিয়েছে কটকের ওই জমি এখন খাস জমিতে পরিণত হয়েছে। অন্যগুলির খোঁজও এ বার শুরু হয়েছে। এ দিকে, ট্রাস্টের সহায়তায় শ্রীনিকেতন লাগোয়া দীনবন্ধু অ্যান্ড্রুস মেমোরিয়াল হাসপাতালের পরিষেবাকেও উন্নত করার ব্যাপারে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সেখানে একটি হোমিওপাথিক ইউনিটের পাশাপাশি অস্থায়ী ভাবে এক জন অ্যালোপাথিক চিকিৎসককে সপ্তাহে চার দিন রাখার ব্যবস্থা হয়েছে। আগামী দিনে ওই হাসপাতালে শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার ব্যবস্থাও করবে ট্রাস্ট।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.