দুই বিশ্বচ্যাম্পিয়ন
সচিনের মতোই অবসরের
সিদ্ধান্ত আনন্দ নিজে নিক
বিশ্বচ্যাম্পিয়নের তাজ আনন্দ হারানোর পর থেকে যেখানেই যাচ্ছি ওকে নিয়ে নানা প্রশ্নের মুখে পড়ছি। পাঁচ বারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ঘরের মাঠে দু’গেম বাকি থাকতেই হেরে যাওয়ায় একটা সহানুভূতির হাওয়া বইছে ওকে ঘিরে। কিন্তু তার সঙ্গেই ঘুরপাক খাচ্ছে একরাশ প্রশ্ন, কেন হারল আনন্দ? এই ধাক্কাটা সামলে আর কি ফিরে আসতে পারবে? বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হতে পারবে আবার? নাকি সচিনের মতো আনন্দেরও এ বার অবসর নেওয়া উচিত?
প্রথমেই বলি কেন হারল আনন্দ। আমার মতে এ বার ওর উপর মানসিক চাপটা অনেক বেশি ছিল। প্রায় অর্ধেক বয়সের প্রতিদ্বন্দ্বীর সঙ্গে বোর্ডে ওর বছর তিনেক আগেই সাক্ষাৎ হয়েছিল। তখন থেকেই জানত ম্যাগনাস কার্লসেন কী আশ্চর্য প্রতিভা। মুগ্ধতাটা তখনও গোপন করার চেষ্টা করেনি আনন্দ। তা ছাড়া খেতাবি লড়াইয়ে নামার সময়েই ম্যাগনাসের চেয়ে ওর প্রায় ১০০ রেটিংয়ে পিছিয়ে থাকাটাও একটা বড় ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়ায়। আন্তর্জাতিক দাবায় পারফরম্যান্সের ভিত্তিতে পাওয়া এই রেটিং থেকে একটা কথা পরিষ্কার, নরওয়ের চ্যাম্পিয়ন অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছিল। বিশেষ করে গত দু’বছরে ওর স্ট্র্যাটেজি আর প্লেয়িং স্টাইলের জবাব কেউই খুঁজে পায়নি। আনন্দও পেল না। মনে হয়, তিন আর চার নম্বর গেমে সুবিধে না নিতে পারার পর একটু ঢিলেমিও চলে এসেছিল আনন্দের খেলায়। চতুর কার্লসেন যার পুরো ফায়দা তুলে নিয়েছে পরপর দুটো গেম জিতে।

দাবার সম্রাট। চেন্নাইয়ে কার্লসেন। ছবি: পিটিআই।
তিন মাস পরেই ক্যান্ডিডেটস টুর্নামেন্ট। আগেই বলেছিলাম আমার বিশ্বাস পরিবারের সঙ্গে সময় কাটিয়ে, বিশ্রাম নিয়ে আনন্দ এই ধাক্কাটা কাটিয়ে উঠতে পারবে। এ দিন টিভিতে দেখলাম কার্লসেনও বলেছে ক্যান্ডিডেটস খেলে আনন্দের আবার বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে ফিরে আসার ক্ষমতা আর সুযোগ দুটোই আছে। আমরাও এই টুর্নামেন্টে বুঝতে পারব আনন্দ ধাক্কা কাটিয়ে ঠিক কোন অবস্থায় আছে।
অনেকে বলছেন এটাই আনন্দের অবসর নেওয়ার সঠিক সময়। শেষ গেমের পর সাংবাদিক বৈঠক থেকেই ওকে এই প্রশ্নটার মুখে পড়তে হয়েছে। আমার কিন্তু তা মনে হয় না। খেলাধুলোর জগতে এটা আকচার হয়। যে পারফর্ম করতে পারে না সে সমালোচনার মুখে পড়ে। সচিনের ক্ষেত্রে পর্যন্ত হয়েছে। আনন্দের ক্ষেত্রেও হচ্ছে। আমার মতে অবসরের সিদ্ধান্তটা আনন্দের উপরই ছেড়ে দেওয়া উচিত। ওর উপর এ নিয়ে চাপ দেওয়াটা ঠিক নয়। বরং দেশে দাবার প্রসারে আনন্দ যে স্বপ্ন আর উদ্যোগ দেখাচ্ছে তাতে আমাদের আরও উৎসাহ দেওয়া প্রয়োজন। ইন্টারনেটে দেখলাম আনন্দ বলেছে দেশের প্রত্যেক স্কুলে দাবা খেলাটা ছড়িয়ে দেওয়া ওর স্বপ্ন। অনেকটা সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের মতো। ওখানে প্রত্যেক পার্কে দাবার বোর্ড থাকত। ওখানে ট্যাক্সিচালক, বাসচালক থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ সবাই দাবা খেলতে জানে। তিরিশ বছর আগে আমারও একই অভিজ্ঞতা হয়েছিল ও দেশে। এই সংস্কৃতিটাই এ দেশে ছড়িয়ে দিতে চাইছে ও। দাবার জন্য এটা খুব ভাল দিক। আমার দৃঢ় বিশ্বাস আনন্দের যা জনপ্রিয়তা তাতে ওর মতো আইকনরা এগিয়ে আসলে ভবিষ্যতে আমরা কার্লসেনদের চ্যালেঞ্জ জানাতে দেশে আরও অনেক আনন্দকে উঠে আসতে দেখব।




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.