চড়াই পাখির আধিক্য নিয়ে কিছু কথা পড়ে (‘লন্ডনের পথেই... বাড়ছে চড়াই’, ২৮-১০) আরও কিছু তথ্য জানাতে চাই। শুধু কলকাতা মহানগরেই নয়, জেলাগুলোতেও বাড়ছে চড়াই। এ ছাড়া বিভিন্ন লোকাল রেল স্টেশনে এদের আধিক্য চোখে পড়ার মতো। তাই মনে হয়, মোবাইল ফোনের তড়িৎচুম্বকীয় বিকিরণের প্রভাব খুব বেশি এদের আঘাত করেনি। প্রকাশিত সংবাদের সূত্র ধরেই বলি যে, ডুয়ার্সে বেড়েছে হাতি, গন্ডার, বাইসন। রায়গঞ্জে কুলিক এশিয়ার বৃহত্তম ‘হেরন রি’ বা শামুকখোলের আস্তানায় পরিণত হয়েছে। সেখানে তাদের সঙ্গেই বেড়ে চলেছে ১৬৪ প্রজাতির অন্য পাখি। মালদহের কালিয়াচক অঞ্চলে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত এলাকায় উঁচু রাস্তা বানাতে গিয়ে মাটি কাটা হয়েছে। ফলে, তৈরি হয়েছে বিস্তীর্ণ জলাভূমি। সেখানের জলে সংরক্ষিত হচ্ছে অসংখ্য দেশি মাছ, কাঁকড়া, ব্যাঙ। পাড়ের লাগোয়া জঙ্গলে সুস্থিতিতে আছে বেজি, বুনো খরগোস, বনবিড়াল, শিয়াল। নদিয়া, মুর্শিদাবাদ, উত্তর চব্বিশ পরগনার বাংলাদেশ সীমান্তে প্রচুর শিয়ালের বাস। দিনের বেলাতেই তাদের দেখা যায়। নদিয়ার নিউ শিকারপুরে বর্ডার সংলগ্ন এলাকায় গাছগাছালিতে বাসা বেঁধেছে বিভিন্ন প্রজাতির বক, বাজকা, হাজারিকা, দুক্কা পাখিরা। এলাকাটি এখন দ্রষ্টব্য স্থান।
এ রাজ্যে কৃষিজ ফসলের সঙ্গে চাষ হচ্ছে ফুল। তাতে বেড়েছে প্রজাপতি, মৌমাছি, বোলতা ভীমরুল। এদের খায় বাঁশপাতি পাখি। নদিয়ার বাহাদুরপুরের জঙ্গলে তাদের সংখ্যা বেড়েছে প্রচুর। পাখিগুলো পাশের নয়ানজুলির নরম বেলেমাটির পাড়ে গর্ত খুঁড়ে অসংখ্য বাসা বানায় ফি-বছর। সে মাটির গর্তবাসায় পাখিগুলোর ডিম, বাচ্চার লোভে হানা দেয় বিভিন্ন প্রজাতির সাপ, তক্ষক। পুরুলিয়ার নিতুড়িয়ায় বেড়েছে হায়না, গোসাপ। অযোধ্যা পাহাড়ে নেকড়ে। এ সব আমার চোখে দেখা।
কলকাতার কাছাকাছি দুই চব্বিশ পরগনা, হাওড়া ও হুগলি জেলার অংশে ময়লা পড়ে থাকে প্রকাশ্য রাস্তায় জঞ্জাল হয়ে। ব্যারাকপুরের পর থেকে বেলঘরিয়া অবধি বিটি রোডের বেশ কয়েকটি অংশ ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। এই সব অঞ্চলে তাই বাড়ছে চিল, কাক, পেঁচা। সেখানে ধেড়ে ইঁদুরও সব সময় ঘোরাফেরা করে, যদিও ইঁদুরের জন্য দুর্বল হচ্ছে শহরের ভিত (পাতাল জুড়ে...সঙ্কট শহরে, ২৯-১০)। এই সব বক, চড়াই, কাক, চিল পেঁচা, বাদুড়, পতঙ্গ ইত্যাদি ক্ষুদ্রপ্রাণ, যারা সংরক্ষণের তালিকায় গুরুত্ব পায়নি, অভাবিত ভাবে জীবনসংগ্রামের অস্তিত্ব রক্ষায় জিতে গেছে।
দেবজ্যোতি চক্রবর্তী। কলকাতা-১১৪ |
কুমার রাণার ‘আধিপত্য ও লোকপ্রজ্ঞা’ বইটির আমার করা যে সমালোচনা প্রকাশিত হয়েছে (‘সমাজকাঠামোকে প্রশ্নের...’ ২৩-১১), সেটির পাণ্ডুলিপিতে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ঋণস্বীকার ছিল: ‘‘চোখ এবং হাতের অসহযোগ সত্ত্বেও লেখাটা সম্ভব হল সন্ধ্যা বেরা ও তোয়া বাগচীর সাহায্যে। দু’জনের কাছে আমার গভীর কৃতজ্ঞতা।’’ কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত এই অংশটি প্রকাশিত লেখাটিতে ছাপা হয়নি, যা আমার পক্ষে খুবই অস্বস্তিকর।
গুরুতর অসুস্থতার কারণে পড়া ও লেখা কোনওটাই ভাল ভাবে সম্ভব হয় না বলেই সন্ধ্যা ও তোয়ার সাহায্য নিতে হয়। কিন্তু, বইটি আদ্যোপান্ত পড়ার পর এ বিষয়ে কিছু লেখাটাও গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়, ইচ্ছা ছিল বইয়ের গুরুত্বটা সমালোচনার মাধ্যমে প্রকাশিত হোক। তবু, একা হাতে এই কাজ করার সাধ্য ছিল না, অতএব, এই দু’জনের সাহায্য নিতে হয়েছে। এই স্বীকৃতিটুকু না থাকাটা সততার সীমা লঙ্ঘন করে।
সুকুমারী ভট্টাচার্য। কলকাতা-৪৭
|
ক্রিকেট কিংবদন্তি হিসেবে কেবল ব্যাটসম্যানদের পরিসংখ্যানই দেওয়া হয়। (‘কিংবদন্তিদের শেষ টেস্ট ইনিংস’, ১৬-১১) কোনও বোলার বা অলরাউন্ডার কি কিংবদন্তি হতে পারেন না?
অমিতকুমার কর। জয়নগর মজিলপুর, দক্ষিণ ২৪ পরগনা |