এক জন মিডিয়া-সম্রাট রুপার্ট মার্ডক। অন্য জন ব্রিটেনের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ার। এ দু’জনের সম্পর্ক সুবিদিত বহু দিন ধরেই। কিন্তু মার্ডকের প্রাক্তন স্ত্রী ওয়েন্ডি দেংয়ের সঙ্গে ব্লেয়ারের সম্পর্কও যে কম ঘনিষ্ঠ নয়, সেটাই এখন ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমের সবচেয়ে মুখরোচক খবর হয়ে উঠেছে।
সালটা ২০১১। মিডিয়া-সম্রাট তখন ফোনে আড়ি পাতার অভিযোগ নিয়ে জেরবার। হাউস অব কমন্সে গিয়েছিলেন তদন্ত কমিটির মুখোমুখি হতে। কিন্তু সেখানেই মুখের উপরে খাবারে ছুড়ে মারেন এক জন। কলঙ্কিত বিপর্যন্ত স্বামীকে বাঁচাতে সে বার ব্লেয়ারের কাছে ছুটে গিয়েছিলেন তাঁর স্ত্রী ওয়েন্ডি। এর বছর ছয় আগে, ২০০৫-এ এই ব্লেয়ারই অর্ধেক দুনিয়া উড়ে অস্ট্রেলিয়ায় গিয়ে হাজির হয়েছিলেন ধনকুবের বন্ধুটির সমর্থন চাইতে। তা তিনি পেয়েওছিলেন।
এ সবই ব্লেয়ার-মার্ডক বন্ধুত্বের প্রকাশ। যা নিয়ে বিলেতে সমালোচনাও কম হয়নি। কিন্তু দু’জনের কেউই তাতে আমল দেননি। বন্ধুই থেকেছেন তাঁরা। দুনিয়াকে জানিয়েছেন, তাঁদের মধ্যে যে পেশাদারি সম্পর্ক রয়েছে, তাতে বেআইনি কিছুই নেই। এ-হেন দুই বন্ধুর মধ্যে সম্পর্কে চিড় ধরার কথা এ বার উঠে আসছে ব্রিটিশ পত্রপত্রিকায়। উঠে আসছে সম্পর্কে ফাটল ধরানো অন্য এক সম্পর্কের প্রসঙ্গ। যাতে জড়িয়ে গিয়েছে তৃতীয় একটি চরিত্র, ওয়েন্ডি। মার্ডক তাঁর সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদ চেয়ে মামলা করেছেন গত জুনে। সেটা গোপন কিছু নয়। কিন্তু এখন জানা যাচ্ছে, ব্লেয়ারের সঙ্গে স্ত্রীর ঘনিষ্ঠতার কথা জানার পরেই প্রাক্তন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন মার্ডক। ওয়েন্ডির সঙ্গে সম্পর্কটা একেবারেই প্লেটোনিক বলে দাবি করছেন ব্লেয়ারের বন্ধুরা। কিন্তু মার্ডকের সঙ্গে বন্ধুত্বের ফাটল তাতে জোড়া লাগেনি।
বরং মার্ডকের ঘনিষ্ঠ এক ব্যক্তি লন্ডনে জানিয়েছেন, ব্লেয়ার ও ওয়েন্ডি একই সময়ে মিডিয়া সম্রাটের ক্যালিফোর্নিয়ার প্রাসাদে গিয়ে থেকেছেন দু’বার। গত বছর অক্টোবরে ও এ বছর এপ্রিলে। দু’বারই তাঁরা এই এক সঙ্গে সপ্তাহান্ত কাটানোর বিষয়টি গোপন রেখেছিলেন রুপার্টের কাছে। ওই প্রাসাদের এক কর্মী পরে সেটা মার্ডককে জানান।
দু’জনের মধ্যে কোনও অসঙ্গত সম্পর্কের কথা কিন্তু কোনও তরফেই বলা হচ্ছে না। ব্লেয়ারের বন্ধুরাও বারবার বলছেন ওয়েন্ডির সঙ্গে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর কোনও ‘অ্যাফেয়ার’ নেই। কিন্তু মার্ডক গোটা বিষয়টি মেনে নিতে পারেননি বলে দাবি করছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমের একাংশ। বলা হচ্ছে, মার্ডকের ঘনিষ্ঠজনেরাই জানিয়েছেন যে, ব্লেয়ার বারবার মার্ডকের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু ওয়েন্ডির সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা করার পর থেকেই ব্লেয়ারের সঙ্গে কথা বন্ধ করে দিয়েছেন রুপার্ট। ব্লেয়ারের সঙ্গে তার আর কোনও সম্পর্কই নেই।
সম্পর্ক ও সম্পর্ক বিচ্ছেদের এমন একটা জম্পেশ কাহিনি মার্ডক সাম্রাজ্যের ট্যাবলয়েডে গোগ্রাসে গেলার মতো করে ছাপা হতে পারত। ঘটনাচক্রে এ বার তারা নীরব। কারণ, মার্ডকই যে কিছু বলছেন না। বলছেন না অভিনেত্রী ওয়েন্ডি বা ব্লেয়ারও। |