উত্তরের চিঠি

পুজোয় পুলিশি অসভ্যতা
রাষ্ট্রজীবনের পরিচায়ক আমাদের উৎসব। উৎসবগুলির সুদীর্ঘ ইতিহাস, শ্রেষ্ঠ পরম্পরা, প্রাচীন সংস্কৃতি স্মরণ করায়। সমাজে শ্রদ্ধা, দেশভক্তির ভাব জাগরণ করে। আত্মীয়তা, একাত্মতা নির্মাণ এবং রাষ্ট্রকে সুদূঢ় করার কাজ উৎসবগুলির দ্বারা সহজেই হয়। উত্তরবঙ্গ, অসমে কিছু অংশে হয়ে গেল শ্রী শ্রী আঈ ভান্ডানি পূজা আর উৎসব। মাথাভাঙার কিছু সুশিক্ষিত যুবকের নেতৃত্বে জনগণের সহায়তায় হয়ে গেল সেই উৎসব। উৎসবে কে না ছিলেন? প্রাক্তন মন্ত্রী যোগেশ বর্মন, মাথাভাঙার বিধায়ক বিনয়কৃষ্ণ বর্মন, জেলা সহ-সভাধিপতি ললিতচন্দ্র প্রামাণিক, স্থানীয় কাউন্সিলর কোকিলা সিংহ, প্রাক্তন আই এ এস বর্তমান বিধায়ক সুখবিলাশ বর্মা, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, অধ্যাপক, শিক্ষক, সরকারি চাকুরে, ব্যবসায়ী, কৃষক, খেটে খাওয়া মানুষ। ছিল বাংলাদেশ, অসম-সহ উত্তরবঙ্গের বহু খ্যাতনামা শিল্পীর ভাওয়াইয়া গান, গিদালি নাচ ও বহু সুবক্তার ভান্ডানি পূজা রাজবংশী নিয়ে তথ্যভরা বক্তব্য। ১৫, ১৬ ১৭ অক্টোবর এই তিন দিনের অনুষ্ঠান ভাল ভাবে চলছিল। শেষের দিন এক পুলিশ অফিসারের ভূমিকায় উৎসব কমিটি, মাথাভাঙার সচেতন নাগরিক এতজ অঞ্চলের রাজবংশী সমাজ ভীষণ ভাবে ব্যথিত।
কী হয়েছিল সে দিন? যতদূর জানি প্রশাসনের তরফে উৎসব কমিটিকে রাত ১১টা পর্যন্ত মাইক বাজানোর অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। কমিটির পক্ষ থেকে রাত ১১টা নাগাদ মাইকে ঘোষণা করা হয়েছিল এটাই শেষ গান। কিন্তু শ্রোতারা মানতে নারাজ। তাদের অনুরোধে গান চলছিল। রাত ১১টা ২০ মিনিট নাগাদ হঠাৎ দেখি এক পুলিশ অফিসার মঞ্চে উঠে গায়ক-গায়িকাকে (অসমের শিল্পী) অসভ্য ভাষায় গালাগাল দিচ্ছেন এবং মাইক্রোফোনের তার খুলে দেন। সব দেখে শ্রোতারা উত্তেজিত হয়ে সেই অফিসারকে গালিগালাজ শুরু করেন। তিনি থানায় গিয়ে কনস্টেবলদের নিয়ে এলে বেধড়ক লাঠি চার্জ শুরু করেন। সে সময় কাউন্সিলর কোকিলা সিংহ ও একটি হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষককে পুলিশের লাঠির ভয়ে পালাতে দেখি।
উদ্যোক্তাদের অপরাধ কী এতটাই ছিল যে মাইকের তার জোর করে খুলে দিতে হবে, বা যাঁরা অতিথি শিল্পী তাদের গালাগাল করতে হবে? এর প্রতিক্রিয়া হলে লাঠিচার্জ করতে হবে। কোনও অনুষ্ঠানে দর্শকেরা সাধারণত গণ্ডগোল করে থাকেন। পুলিশ গিয়ে গণ্ডগোল থামায়, না থামলে লাঠিচার্জ করে। এখানে পুলিশই গণ্ডগোলের স্রষ্টা। উৎসব কমিটিতে এমন কতগুলো সুশিক্ষিত, সভ্য যুবক আছেন যাঁরা প্রশাসনের কথা আমান্য করবেন তা আমি মানতে পারছি না।
এ বার আসি মাথাভাঙার নির্বাচিত অভিভাবকদের প্রসঙ্গে। তারা তো এ ঘটনা জানার পর সুরাহার প্রচেষ্টা করলেন না! পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে বসে সমস্যা মেটানোর চেষ্টা করলেন না। তারা তো রাজবংশী সমাজের তথা রিজার্ভ কোটার বিধায়ক/মন্ত্রী। যাঁদের কোটায় বিধায়ক/মন্ত্রী হয়েছেন তাদের কথা বা ব্যথা এ বার একটু ভাবুন।





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.