পাহাড়ে ‘শোকের আবহ’ শেষ। ‘স্বাভাবিক’ ছন্দে ফেরা পাহাড়কে এখন তাই জিটিএ-র ভরসাতেই বুক বাঁধতে বার্তা দিচ্ছেন তিনি।
শনিবার কার্শিয়াঙে জনমুক্তি অস্থায়ী কর্মচারি সংগঠনের প্রতিষ্ঠা দিবসের সভায় মোর্চা সভাপতি বিমল গুরুঙ্গের কথায় তারই ইঙ্গিত মিলল। তিনি বলেন, “পাহাড় তো এখন পুরোপুরি স্বাভাবিক। কিন্তু, আমি শুনছি, জিটিএ’র সদর দফতর লালকুঠিতে আগের মতো লোকজন হচ্ছে না। কেমন যেন একটা শোকের আবহ সেখানে। এটা ঠিক নয়। অতীতের দুঃখ-যন্ত্রণার কথা ভুলে এখন সামনে এগোনোর সময়।”
মোর্চার অন্দরের খবর, বিমল গুরুঙ্গ ‘চিফ’ পদ থেকে সরে দাঁড়ানোয় জিটিএ’র সদস্যদের অনেকেই উৎসাহ হারিয়ে ফেলেছেন। ভিড় কমেছে জমায়েতে। এমনকী দলীয় সভাতেও অনেকেই খোলাখুলিই জানিয়েছেন, জিটিএ থেকে মোর্চা সভাপতি সরে আসায় সে ভাবে আর কাজে মনোযোগ দিতে পারছেন না তাঁরা। দলের নিচুতলা থেকেও ফের গুরুঙ্গকে হাল ধরার জন্য আর্জি জানানো হচ্ছে। দলের বড় অংশ চাইছে, গুরুঙ্গ আলাদা রাজ্যের দাবিতে দিল্লিতে গিয়ে আন্দোলন চালিয়ে গেলেও পাহাড়ে উন্নয়নের প্রশ্নে ফের জিটিএ-কেই হাতিয়ার করুন। |
দলের নেতা-কর্মীদের মনোভাব আঁচ করে তাই ফের জিটিএ-তে ফেরার কথাই ভাবছেন তিনি। দলীয় কর্মীদের সেই বার্তা দিতেই এ দিন ফের জিটিএ-এর হাল ধরার কথা বলেছেন তিনি। এমনই মনে করছেন গুরুঙ্গ-ঘনিষ্ঠরা।
যদিও গুরুঙ্গ বলেন, “আমার লক্ষ্য গোর্খাল্যান্ড। সে জন্য আমি দিল্লিতে লাগাতার আন্দোলনের কর্মসূচি নিয়েছি। তবে জিটিএ চলবে। কারণ, মানুষের যখন খিদে থাকে, তখন আগে খাবারের ব্যবস্থা করে দেওয়া জরুরি। জিটিএ তাই অচল হতে দেওয়া যাবে না।”
বিমল ঘনিষ্ঠদের অনেকেই অবশ্য মনে করেন, পাহাড়ের সাম্প্রতিক আন্দোলনে ধৃত কয়েকশো নেতা-কর্মী এখনও ছাড়া না-পাওয়ায় দলের একাংশের মধ্যে যে হতাশা, উদ্বেগ রয়েছে তাও কাটানোর চেষ্টা করছেন গুরুঙ্গ। সে জন্যই তিনি এ দিন বলেন, “জিটিএ-তে এখনও শোকের আবহ থাকবে কেন? কারও মৃত্যু হলে পরিবারে শোকের আবহাওয়া তৈরি হয়। কিন্তু, শ্রাদ্ধশান্তি মিটলে ফের পরিবারটি স্বাভাবিক কাজকর্মে ফে। তা হলে জিটিএ পারবে না কেন?”
এ দিন দার্জিলিঙে কমিউনিস্ট পার্টি অব রেভলিউশনারি মার্কসিস্ট-এর (সিপিআরএম) উদ্যোগে দু’দিন ব্যাপী আলোচনা সভা শুরু হয়েছে। সিপিআরএম-এর মুখপাত্র গোবিন্দ ছেত্রী বলেন, “আমরা গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে কেন্দ্রের উপরে চাপ বাড়াব।” |