দেশে হু হু করে বাড়ছে পোলিওতে আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা। এই তথা সামনে আসার পরই উত্তর-পশ্চিম পাকিস্তানের একটি আদিবাসী এলাকায় তিন দিন ব্যাপী পোলিও টিকাকরণ অভিযান শুরু হয়েছিল। সে অভিযানেই সাহায্য করতে এগিয়ে এসেছিলেন ১১ জন শিক্ষক। তাঁদের শুরুটা ভাল হলেও শেষ রক্ষা হল না। পাকিস্তানের সিপাহ এলাকা থেকে অপহৃত হলেন এগারো জনই। পাক-পুলিশের সন্দেহ, তাঁদের অপহরণে পিছনে হাত রয়েছে তালিবানের।
কোনও শিশুকেই পোলিও টিকা খাওয়ানো যাবে না বলে ২০১২ সালে জুন মাসে ফতোয়া জারি করেছিল তালিবান। তার পর থেকেই তালিবান জঙ্গিদের রক্তচক্ষু এড়িয়ে মা-বাবারা তাঁদের শিশুকে পোলিও টিকা খাওয়াতে নিয়ে যেতে পারছিলেন না। ফলে দিন দিন বাড়ছিল পঙ্গু শিশুর সংখ্যাও। তথ্য বলছে, আফগানিস্তান-পাকিস্তান সীমান্তে উত্তর ও দক্ষিণ ওয়াজিরিস্তান প্রদেশেই প্রায় আড়াই লক্ষ শিশুকে পোলিও টিকা খাওয়ানো যায়নি। এ ছাড়াও দেশের নানা প্রান্ত থেকে খবর পাওয়া যাচ্ছিল, পোলিও টিকা খাওয়ানোর কাজে নিযুক্ত স্বাস্থ্যকর্মীদের উপর আক্রমণের
ঘটনাও বাড়ছে।
আন্তর্জাতিক পোলিও দূরীকরণ সংস্থার কর্তা ইলিয়াস ডুরি জানিয়েছেন, শুধু ওয়াজিরিস্তান নয়, পাকিস্তানের বিভিন্ন আদিবাসী এলাকায় পঙ্গু শিশুর সংখ্যা বাড়ছে। গত কয়েক বছরে যত শিশু এই রোগে আক্রান্ত হয়েছে, তার প্রায় ৮৫ শতাংশ শিশুই তালিবান অধ্যুষিত এলাকার। তবে তিনি আরও জানান, শুধু উপজাতি এলাকাতেই এই রোগ সীমাবদ্ধ এমন নয়। ঘনবসতিপূর্ণ শহরেও নতুন করে মাথাচাড়া দিতে পারে এই রোগ।
পোলিও প্রসঙ্গে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা সঈদ আব্দুল জাবার শাহ বলেন, “পোলিও আমাদের দেশের বড় সমস্যায় পরিণত হচ্ছে। সরকারও এই রোগ নির্মূল করতে লড়াই চালাচ্ছে। তবে দেশের মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে।” এর সঙ্গে সঙ্গে তিনি আরও জানিয়েছেন, দেশের প্রায় বাইশ লক্ষ শিশুকে পোলিও টিকা খাওয়ানোর জন্য স্বাস্থ্যকর্মীদের ৬২৮টি ছোট ছোট দল তৈরি করা হয়েছে। |