|
|
|
|
ডার্বি না খেলার যন্ত্রণা পেন-টোলগেদের
প্রীতম সাহা • কলকাতা
মহমেডান-০
চার্চিল ব্রাদার্স-০ |
সময়ের অদ্ভুত খেলা বোধহয় একেই বলে! কাকে যে কখন রাজা বানাবে আর কাকে-ই বা ফকির করে দেবে, বোঝার উপায় নেই।
শনিবারের এই যুবভারতী এক বছর আগে হলে এতক্ষণে হুড়োহুড়ি লেগে যেত। ওই তো যাচ্ছেন টোলগে..... ওই তো নবি.... আরে পেনকে ধর, দ্যাখ পিছনের গেট দিয়ে বেরিয়ে গেল বুঝি...। যে মহারথীদের লেন্স-বন্দি করার জন্য ক্যামেরাম্যানদের ভিড় উপচে পড়ত, আজ তাঁদের ম্যাচ দেখার জন্য কোনও উন্মাদনা নেই। আছে কেবল ফুটবলারদের মধ্যে ডার্বি-যুদ্ধের সৈনিক না হতে পারার শূন্যতা! যেটা ঘরের মাঠে চার্চিলকে হারাতে না পারার আফসোসও যেন ফিকে করে দিল।
কলকাতার তিন প্রধানের এক প্রধান হয়েও, ইস্ট-মোহন ম্যাচের টিআরপি এখন হয়তো ধরা ছোঁয়ার বাইরে মহমেডানের। সেই আবেগ, সমর্থকদের বাঁধ-ভাঙা উচ্ছ্বাস-ই বা কোথায়? প্রাক্তন লাল-হলুদ তারকা পেন ওরজি বলছিলেন, “ডার্বির ওই পরিবেশ খুব মিস করি। সেই আবেগ আর কোনও ম্যাচে পাওয়া যাবে না।” মোহনবাগানের প্রাক্তন ফুটবলার রহিম নবিকে চার্চিল ম্যাচে দলে রাখেননি সাদা-কালো কোচ। সেই নবিও বলে গেলেন, “ডার্বির আবেগ ভুলে থাকা যায় না। তবে এখন আমার ধ্যান-জ্ঞান সব মহমেডান।”
কলকাতা ফুটবল গত তিন বছর ডার্বির আগে উদ্বেলিত হত টোলগে ওজবেকে ঘিরে। রবিবার আই লিগে মরসুমের প্রথম ডার্বিতে করিমের বাগানে তিনি থাকলে, সমীকরণটাই হয়তো বদলে যেত। সকাল থেকেই হয়তো আলোচনা শুরু হয়ে যেত, অস্ট্রেলিয়ান স্ট্রাইকারকে নিয়ে আর্মান্দোর স্ট্র্যাটেজি কী হতে পারে? হিট করবে ওডাফা-টোলগে জুটি? শনিবার টোলগেকে নিয়ে নানা প্রশ্ন, বহু তর্ক তো হল। কিন্তু সেটা ডার্বি নিয়ে নয়, চার্চিল ম্যাচ নিয়ে। যেখানে তাঁর গোল নষ্টের বদভ্যাসে ফের আটকে গেল মহমেডান। তা সত্ত্বেও টোলগে নন, এ দিনের ম্যাচে বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে আজিজ-নবি কাজিয়া। সমস্যার সূত্রপাত, কেন নবিকে টিমে রাখা হয়নি? নবির দাবি, “আমি পুরো ফিট। কেন খেলছি না, কোচ বলতে পারবেন।” যা শুনে মহমেডান কোচের পাল্টা, “নবি এক দিন মাত্র ট্রেনিং করেছে। ও এখনও ম্যাচ ফিট নয়।”
চিন্তার বিষয় হল, মাঠের বাইরের টুকরো সমস্যার প্রভাব ফুটবলারদের খেলায় পড়ছে। এ দিন জোসিমারদের দেখে মনেই হল না তাঁরা ঘরের মাঠে খেলছেন। উল্টে সুভাষ ভৌমিকের চার্চিলকে বেশি আত্মবিশ্বাসী দেখাচ্ছিল। বল পজেশনেও অনেক এগিয়ে। আর হয়তো সে জন্যই গ্যালারি থেকে চকলেট বোমা, জলের বোতল উড়ে আসে মাঠে। এমনকী ম্যাচ গোলশূন্য হওয়ায় সুভাষকেও গ্যালারির রোষের মুখে পড়তে হয়। চার্চিল কোচ বললেন, “আমার এ সব যায়-আসে না। বড় ব্যাপার হল, অ্যাওয়ে ম্যাচ থেকে এক পয়েন্ট পেয়েছি।”
ফুটবলার এবং কোচ হিসেবে বহু ডার্বির যোদ্ধা সুভাষ রবিবারের মহাযুদ্ধ দেখার জন্য গ্যালারিতে থাকবেন না। সকালেই কলকাতা ছাড়ছেন। তবে বিকেলে প্র্যাকটিস থাকলেও, টিভি-র পর্দায় চোখ রাখবেন। আপনার ভবিষ্যদ্বাণী কী? সুভাষ বললেন, “চার্চিল কোচ না হলে নিশ্চয় মন্তব্য করতাম।” |
|
|
|
|
|