লিফটে ক্যামেরা ছিল না বলছে পুলিশ,
জেরা এ বার সোমাকেও
লিফটের মধ্যে তরুণী সাংবাদিককে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে। গত কাল তরুণ তেজপাল দাবি করেছিলেন, গোয়ার সেই হোটেলের লিফটের ভিতরের সিসিটিভি ফুটেজ পরীক্ষা করলেই সত্যিটা জানা যাবে। কিন্তু গোয়া পুলিশ আজ জানিয়ে দিয়েছে, লিফটের মধ্যে আদৌ সিসিটিভি ক্যামেরা নেই। তবে তাদের বক্তব্য, ভুল স্বীকার করে ওই তরুণীকে ই-মেল পাঠিয়েছিলেন তহেলকা-র প্রধান সম্পাদক। কাজেই তদন্তে কোনও অসুবিধে হবে না। ইতিমধ্যে ওই তরুণী আজ তেজপালের পরিবারের বিরুদ্ধে তাঁর পরিবারের উপর চাপ সৃষ্টির অভিযোগ করেছেন। আজই অবশ্য গোয়া পুলিশের একটি দল দিল্লিতে তহেলকার দফতরে গিয়ে জেরা করেছে কার্যনির্বাহী সম্পাদক সোমা চৌধুরীকে।
গোয়া পুলিশের ডেপুটি সুপার স্যামি তাভারেজের নেতৃত্বে চার সদস্যের দলটি আজ সোমাদেবীকে জেরা করার পাশাপাশি তাঁকে ল্যাপটপ, আইপ্যাড ও কম্পিউটারের হার্ড ডিস্ক জমা দিতে বলেছে। তেজপালের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে সোমাদেবীকেই প্রথম ই-মেল করেছিলেন অভিযোগকারিণী। সেই ই-মেল সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ায় চাঞ্চল্য দেখা দেয়। মুখ্যমন্ত্রী মনোহর পারিক্করের নির্দেশে গোয়া পুলিশ নিজেরাই এফআইআর করে তদন্ত শুরু করে। গোয়া পুলিশকে তদন্তে সাহায্য করছে দিল্লি পুলিশ।
গোয়ার ওই হোটেলের লিফটের মধ্যে সিসিটিভি ক্যামেরা না থাকলেও হোটেলের অন্যান্য সিসিটিভি ফুটেজ পুলিশের হাতে এসেছে। পুলিশ মনে করছে, ফুটেজ না মিললেও তেজপাল ভুল স্বীকার করে অভিযোগকারিণীকে যে ই-মেল পাঠিয়েছিলেন, সেটিকেই প্রমাণ হিসেবে ধরা যায়। ওই মেল-এ তেজপাল লিখেছিলেন, “আমাদের মধ্যে বিশ্বাস আর শ্রদ্ধার যে সম্পর্ক ছিল, তা যে আমি ভেঙেছি এটা স্বীকার করতে আমার অবর্ণনীয় যন্ত্রণা হচ্ছে। বিচারবুদ্ধির ভুলে আমি যে কাজ করেছি সে জন্য নিঃশর্ত ক্ষমা চাইছি।” তেজপাল অবশ্য দাবি করেছিলেন, সোমাদেবীর চাপেই তিনি এই ই-মেল লিখেছেন, প্রকৃত সত্য আলাদা। সোমাদেবীও জানান, তাঁর কাছে ঘটনার অন্য বিবরণ দিয়েছিলেন তেজপাল। তিনি তাতে আমল না দিয়ে তাঁকে ক্ষমা চাইতে বলেছিলেন।
যদিও সোমাদেবী তদন্তে সহযোগিতা করছেন না বলেই গত কাল দাবি করেছিলেন গোয়ার মুখ্যমন্ত্রী ও পুলিশ অফিসাররা। গোয়া প্রশাসনের অভিযোগ, তারা সাহায্য চেয়ে সোমাদেবীকে ই-মেল পাঠিয়েছিল। কিন্তু সোমাদেবী ওই তরুণী সাংবাদিকের অভিযোগের প্রতিলিপি পর্যন্ত পুলিশকে দেননি। তবে আজ তহেলকা অফিসে জেরার পরে সংস্থার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, প্রয়োজনীয় সব নথি পুলিশকে দেওয়া হয়েছে। এখনও পুলিশের কাছে অভিযোগ করেননি ওই তরুণী। যদিও পুলিশি তদন্তে সব রকম সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।
আজ ওই তরুণী অভিযোগ করেন, তেজপালের পরিবার তাঁর পরিবারের উপর চাপ সৃষ্টি করছে। তাঁর দাবি, গত রাতে তেজপালের পরিবারের এক সদস্য তাঁর মায়ের কাছে এসে বলেন, তেজপালকে বাঁচাতে হবে। সেই সঙ্গে জানতে চান কে তাঁদের আইনি সাহায্য করছেন? অভিযোগকারিণী এক বিবৃতিতে বলেছেন, “এই ঘটনা আমার পরিবারে তীব্র মানসিক চাপ ও আতঙ্কের সৃষ্টি করেছে। আমার আশঙ্কা, একটা ভীতি ও হেনস্থার পর্ব এ বার শুরু হল। তেজপাল ও তাঁর ঘনিষ্ঠদের বলছি, আমার পরিবারের থেকে দূরে থাকুন।”
তেজপাল-কেলেঙ্কারির জেরে আজও মহিলাদের নিরাপত্তাকে ঘিরে পাক খেয়েছে রাজনীতি। তেজপালের তহেলকা গোষ্ঠী কংগ্রেসের ইশারাতেই তাদের বিরুদ্ধে কাজ করে বলে বরাবরের অভিযোগ বিজেপির। সম্প্রতি এক তরুণীর উপরে নজরদারির অভিযোগ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন গুজরাতে নরেন্দ্র মোদীর মন্ত্রিসভার সদস্য অমিত শাহ। সেই খবরটিও প্রকাশিত হয় তহেলকা গোষ্ঠীর নিয়ন্ত্রণাধীন ‘কোবরাপোস্টে’।
ফলে, তেজপালের বিরুদ্ধে গোড়া থেকেই পুরোদমে আসরে নেমেছিল বিজেপি। আজ আবার মহিলা কংগ্রেস অমিত শাহের বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে যন্তর-মন্তরে মোমবাতি মিছিল করে। পরিস্থিতি বুঝে তেজপালের বিরুদ্ধেও মুখ খুলেছে তারা। তবে অমিত শাহের বিরুদ্ধে অভিযোগ যাতে চাপা না পড়ে যায়, তা নিশ্চিত করতে মরিয়া কংগ্রেস। তাদের নেতার কথায়, “পান থেকে চুন খসলেই মোদী তা নিয়ে ফুলিয়ে-ফাঁপিয়েপ্রচার করেন। কিন্তু এত দিন হয়ে যাওয়ার পরেও তরুণীর উপরে নজরদারির বিষয়টি নিয়ে মোদী কিংবা তাঁর ডান হাত অমিত শাহ টুঁ শব্দটিও করেননি।”
এই অভিযোগ নিয়ে আজও মুখ খোলেননি মোদী। তবে আজ দিল্লিতে এক সভায় মহিলাদের সুরক্ষা নিয়ে কেন্দ্রকে আক্রমণ করেন তিনি। বলেন, “প্রধানমন্ত্রী মহিলাদের নিরাপত্তার কথা বলছেন, কিন্তু দেশের রাজধানী দিল্লিতেই নির্ভয়া কাণ্ড হয়েছে। দিল্লিকে কংগ্রেস ধর্ষণের রাজধানী বানিয়ে দিয়েছে।”
মহিলাদের সুরক্ষা নিয়ে রাজনৈতিক তরজা এ বার কোন দিকে গড়ায়, তা-ই এখন দেখার।

পুরনো খবর:


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.