এলাকার বাসিন্দাদের আন্দোলনে ওয়ার্ডে একটি স্কুল তৈরি করতে রাজি হল প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদ। রায়গঞ্জ পুরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডে সম্প্রতি এক সরকারি অনুষ্ঠানে এ কথা জানিয়েছেন উত্তর দিনাজপুর জেলা প্রাথমিক স্কুল সংসদের চেয়ারম্যান শেখর রায়।
রায়গঞ্জ পুরসভার ২৪টি ওয়ার্ডেই সরকারি প্রাথমিক স্কুল রয়েছে। কেবল ৮ নম্বর ওয়ার্ডে কোনও স্কুল নেই। এ জন্য বাসিন্দারা দল বেঁধে আন্দোলনও শুরু করেন। সম্প্রতি, উত্তর দিনাজপুর জেলা প্রাথমিক স্কুল সংসদ চেয়ারম্যান শেখর রায় উদ্বাস্তুদের দলিল বিলির একটি অনুষ্ঠানে শক্তিনগরে যান। সেই সময় বাসিন্দারা তাঁর কাছে প্রাথমিক স্কুল তৈরি করার দাবি জানান। তৃণমূল কাউন্সিলর বরুণ বন্দ্যোপাধ্যায়ও মঞ্চে উঠে একই দাবি জানান।
তাঁরা জানান, শক্তিনগর এলাকা থেকে নদী বাঁধের উপর দিয়ে হেঁটে পড়ুয়াদের স্কুলগুলিতে যেতে হয়। বৃষ্টি হলে হাঁটাচলায় সমস্যা হয়। এলাকার দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণির পড়ুয়া পুতুল পাসোয়ান আর ভোম্বল সাহা বলে, “অনেক রাস্তা হেঁটে স্কুলে যেতে খুব কষ্ট হয়। তাই নিয়মিত স্কুলে যাই না।”
দূরে স্কুল হওয়ায় দিনমজুর পরিবারে অভিভাবক পড়ুয়াদের স্কুলে পৌঁছনোর কাজ নিয়মিত করতে পারেন না। যার ফলে, স্কুলছুটের সংখ্যা ক্রমশ বেড়ে চলেছে। ২০১০ সালে ৮ নম্বর ওয়ার্ডে প্রথম থেকে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত পড়ুয়া সংখ্যা ছিল ৪৫০ জন। বর্তমানে ২০০ জন। নানা কারণে ফি বছর
বিপিএল পরিবারের কচিকাঁচাদের মধ্যে স্কুলছুট বাড়ছে।
পুরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডে হাজার তিনেক পরিবারের বসবাস। বিপিএল তালিকাভুক্ত পরিবার সংখ্যা ৭০৩টি। সে সব পরিবারের সদস্যরা ছোটখাটো ব্যবসা, পরিচারিকা, দিনমজুরি, ভ্যান রিকশা টেনে সংসার চালান। আর্থিক সঙ্কটে তাঁদের মধ্যে অনেকেরই ভাল স্কুলে ছেলেমেয়েদের পড়ানোর ক্ষমতা নেই। বর্তমানে ওয়ার্ডের ২০০ জন পড়ুয়া প্রতিদিন ২ কিলোমিটার দূরে ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মিলনপাড়া মোহনবাটি অবৈতনিক প্রাথমিক, ৭ নম্বর ওয়ার্ডে দ্বারিকাপ্রসাদ অবৈতনিক প্রাথমিক স্কুলে পড়তে যায়। ওই দুই সরকারি স্কুলে পড়ুয়াদের যাতায়াত করতে চার কিলোমিটার রাস্তা হাঁটতে হয়। ৮ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলার বরুণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “বাসিন্দাদের নিয়ে আমি কিছু দিন আগে বারোয়ারিতলায় প্রায় ৭ কাঠা খাস জমির বিবরণ আর নকশা শেখরবাবুর হাতে তুলে দিয়েছি। ওই জমিতেই সরকারি প্রাথমিক স্কুল তৈরির দাবি জানানো হয়েছে।”
প্রাথমিক স্কুল সংসদ চেয়ারম্যান শেখরবাবু স্থানীয় বাসিন্দাদের বলেন, “জমির অভাবে এত দিন ওই ওয়ার্ডে প্রাথমিক স্কুল তৈরি করা যায়নি। তবে কাউন্সিলরের উদ্যোগে ওই ওয়ার্ডে ৭ কাঠা খাস জমির সন্ধান মিলেছে। ওই জমিতে সরকারি প্রাথমিক স্কুল তৈরির প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে।” |