বাম আমলে কথা ছিল হাসপাতালটি হবে প্রসূতি ও স্ত্রীরোগের জন্য। বর্তমান সরকার আরজিকরের প্রসূতি বিভাগের চাপ কমাতে এটিকে সহায়ক হাসপাতাল হিসেবে গড়ে তোলার কথা বলেছিল। অভিযোগ, কোনওটাই হয়নি ‘নর্থ সাবার্বান হাসপাতাল’।
কলকাতা পুরসভার এক নম্বর ওয়ার্ডের ওই হাসপাতালে চিকিৎসক, নার্স ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মী প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম। ‘স্টেট জেনারেল হাসপাতাল’-এর তকমা পাওয়া এই হাসপাতালে খাতায়কলমে শয্যাসংখ্যা ১৩৭ হলেও বাস্তবে মহিলা এবং পুরুষ বিভাগে যথাক্রমে ৩০টি এবং ২৫টি শয্যা রয়েছে। ঠিকমতো চলছে শুধু বহির্বিভাগ। একটি মাত্র অপারেশন থিয়েটার থাকলেও তা কয়েক বছর বন্ধ। যত্রতত্র আবর্জনা পড়ে থাকে। চত্বরে আগাছা গজিয়ে উঠেছে। অভিযোগ, হাসপাতালের ভিতরে বহিরাগতরা বাস করেন। |
নর্থ সাবার্বান হাসপাতাল।—নিজস্ব চিত্র। |
হাসপাতাল সূত্রের খবর, তিন বছর আগেও এই হাসপাতালে সাত জন চিকিৎসক, এক জন নার্সিং সুপার, এক জন সিস্টার-সহ ১৮ জন নার্সিং স্টাফ এবং ৩৩ জন চতুর্থ শ্রেণির কর্মী ছিলেন। কর্মীসংখ্যা এখন কত তা জানাতে নারাজ হাসপাতালের সুপার দেবাশিসকুমার রায়।
১৯৮০ তে রাজ্য সরকার সাড়ে ন’বিঘা জমির উপরে তৈরি এই হাসপাতালটি বেঙ্গল ইমিউনিটি লিমিটেডের থেকে অধিগ্রহণ করে। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, আশির দশকে এই হাসপাতালের চক্ষু ও প্রসূতি বিভাগ ছিল এলাকার গর্ব। এখন কর্মীর অভাব এবং খারাপ পরিষেবার জন্য রোগী কম আসেন। অভিযোগ, এ নিয়ে কর্তৃপক্ষের হেলদোল নেই। সামান্য কিছুতেই আরজিকরে রেফার করে দেওয়া হয়।
ডায়েরিয়া নিয়ে কিছু দিন ভর্তি ছিলেন স্থানীয় বাসিন্দা প্রকাশ মিত্র। প্রকাশবাবুর কথায়: “সাত দিন হাসপাতালে ছিলাম। এক দিনও বাথরুম পরিষ্কার হয়নি। অসম্ভব নোংরা, দুর্গন্ধ আর মশা।” এক কর্মী জানান, সাধারণ অসুখ নিয়ে রোগীরা দিনের পরে দিন ভর্তি থাকেন। বেশির ভাগ রোগীই আসেন দুঃস্থ পরিবার ও দূর থেকে। বয়স্ক রোগীদের পরিবার ফেরত নিয়ে যান না। এ নিয়েও কর্তৃপক্ষের মাথাব্যথা নেই।
রাজ্যের স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বলেন, “রাজ্য সরকার হাসপাতালটির উন্নয়নের কথা ভাবছে। মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দিলে কাজ শুরু হবে।” |