চড়া রোদে বেরোতে নিষেধ ডাক্তারদের
ক ঘণ্টার মধ্যে পরপর চার জন এল চর্মরোগ চিকিৎসকের চেম্বারে। সকলেই স্কুলপড়ুয়া। সকলেরই এক সমস্যা। মুখ, গলা বা হাতে সাদা দাগ। পরীক্ষা করে জানা গেল, সব ক্ষেত্রেই সমস্যাটা এক। ডাক্তারি পরিভাষায় যার নাম পলিমরফিক লাইট ইরাপশন বা পিএলই। রোগের উৎস রোদ। যে কোনও বয়সেই এই সমস্যা হতে পারে। সকাল ১০টা থেকে বিকেল তিনটের মধ্যে বাইরে বেরোলে যে রোদ লাগে, তা থেকেই এই কাণ্ড। চিকিৎসা না করালে ত্বকের অকাল বার্ধক্যেরও ভয় রয়েছে বলে হুঁশিয়ারি চিকিৎসকদের।
কিন্তু অনেকেরই বক্তব্য, মাঠেঘাটে খেলে তাঁরা বড় হয়েছেন। শুনে এসেছেন, সূর্যের আলো গায়ে না লাগাটাই স্বাস্থ্যের পক্ষে বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে। ফলে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘর বা গাড়ির আরাম ছেড়ে অনেকেই দিনের খানিকটা সময় বাধ্য হয়ে রোদে হাঁটাহাঁটি করছেন সুস্থ থাকার তাগিদে। কিন্তু চর্মরোগ চিকিৎসকদের বক্তব্য, ওজন স্তর ফুটো হয়ে যাওয়ায় সূর্যের আলো আর নিরাপদ নয়। অতি বেগুনি রশ্মি ত্বকে লেগে ঘটছে নানা বিপত্তি।
ভিটামিন ডি-র অন্যতম উৎস সূর্যের আলো। বিশেষজ্ঞদের মতে, শরীরে তা না লাগালে শারীরিক ও মানসিক ক্লান্তি বাড়ে। হার্টের সমস্যা, কিডনির অসুখ, এমনকী স্ট্রোকও হতে পারে। স্তন, কোলন, জরায়ু, প্রস্টেট, ফুসফুসের ক্যানসারের পিছনেও ভিটামিন ডি-র ঘাটতি অন্যতম কারণ।
রিউম্যাটোলজিস্ট অলোকেন্দু ঘোষ বলেন, “এ দেশের অধিকাংশ মানুষেরই ভিটামিন ডি-র ঘাটতি। প্রায়ই এমন কমবয়সী রোগী পাচ্ছি, যাঁদের হাঁটাচলায় সমস্যা, হাড় ভঙ্গুর। এটা যথেষ্ট আশঙ্কার।” মানুষ তা হলে যাবেন কোন দিকে? বিশেষত, অভিভাবকদের ভয়, বাচ্চাদের স্কুল যাওয়া থেকে খেলাধুলো সবই তো সূর্যের আলোয়। চর্মরোগ চিকিৎসক সঞ্জয় ঘোষ বলেন, “মাত্র ১৫-২০ মিনিট রোদ লাগলেও সমস্যা হতে পারে। গাড়ি করে যাওয়ার সময়ে কাচের বাইরে থেকে যে রোদ আসে, তা থেকেও রোগটা হতে পারে।” চর্মরোগ চিকিৎসক সন্দীপন ধর বলেন, “শীত পড়লে সমস্যাটা বাড়ে। কারণ ওই সময়ে রোদে থাকতে মানুষ পছন্দ করেন। ছাতা ব্যবহারও কমে যায়। সকলকেই বেশি রোদ লাগাতে বারণ করছি।”
তা হলে উপায়? সঞ্জয়বাবু বলেন, “রোদ থেকে বাঁচার যতটা সম্ভব চেষ্টা করতে হবে। ছাতা, সানগ্লাস, সানস্ক্রিন ক্রিম ব্যবহার জরুরি। তাতেও না হলে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। স্কুলগুলিরও উচিত খেলার পিরিয়ড শেষের দিকে রাখা। রোদটা তখন চড়া থাকে না।” অলোকেন্দুবাবুরও পরামর্শ, “চড়া রোদে বেরোনোর প্রয়োজন নেই। সকালের দিকে যখন রোদ তেমন প্রখর হয় না, তখন মিনিট পনেরো শুধু হাতে-পায়েও যদি রোদ লাগে, সেটাই যথেষ্ট।” একই বক্তব্য ফিজিক্যাল মেডিসিন চিকিৎসক মৌলিমাধব ঘটকের। তাঁর কথায়, “কারও যদি রোদে সমস্যা হয়, সে ক্ষেত্রে খাদ্যতালিকায় ডিম, দুধ, ফল, সামুদ্রিক মাছ ইত্যাদি নিয়মিত রাখতে হবে। কারণ সেগুলি ভিটামিন ডি-র উৎস। কিন্তু এটা ভুললে চলবে না, ভিটামিন ডি-র ঘাটতি মড়কের আকার নিয়েছে। সূর্যের আলো তাই শরীরের পক্ষে খুবই উপকারী।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.