ন্যাশনালে শিশু বিভাগে অনিয়ম কেন, রিপোর্ট তলব
দুপুর দুটোতেও হাসপাতালের শিশু বিভাগে ডাক্তার নেই কেন? কেন ৪০ শয্যার সিক নিউ বর্ন কেয়ার ইউনিটে কখনওই চার-পাঁচটির বেশি শিশু ভর্তি থাকছে না? কেন শিশু বিভাগ থেকে দিনের পর দিন রোগী ফেরানো চলছে? ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ পরিদর্শনে গিয়ে এই প্রশ্ন তুললেন রাজ্য সরকারের টাস্ক ফোর্সের সদস্যেরা। শুধু ডাক্তারদের গরহাজিরা নয়, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে নির্মিত এসএনসিইউ-টিও এ ভাবে প্রায় খালি পড়ে থাকলে রাজ্যে শিশু-মৃত্যু কমানোর মূল উদ্যোগ যে ধাক্কা খাবে, তা স্পষ্ট জানিয়েছে টাস্ক ফোর্স। কেন ন্যাশনালের শিশু বিভাগে ডাক্তারেরা সময় মেনে হাজির থাকেন না, শুক্রবার তার কৈফিয়ত চেয়ে পাঠায় স্বাস্থ্য দফতর। ভবিষ্যতে এমন অনিয়মের প্রমাণ ফের মিললে যে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে, সেই হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয়েছে।
শিশু বিভাগের ডাক্তারদের একটি বড় অংশ অবশ্য পরিকাঠামোর অভাবের পাল্টা অভিযোগ তুলেছেন। তাঁদের বক্তব্য, অন্য হাসপাতালের ঘাটতি মেটাতে এক-এক করে ন্যাশনালের ঢাল-তরোয়ালগুলি কেড়ে নেওয়া হয়েছে। তাই নিধিরাম সর্দার হয়েই তাঁদের দিন কাটছে।
এক চিকিৎসকের কথায়, “যখন বি সি রায় শিশু হাসপাতালে এক সঙ্গে অনেক শিশুর মৃত্যু হল, তখন এখান থেকে তিন জন ডাক্তারকে তুলে নিয়ে যাওয়া হল। তার পরে এনআরএসে রেডিয়্যান্ট ওয়ার্মারের অভাব হওয়ায় ন্যাশনাল থেকে ওয়ার্মারও নিয়ে নেওয়া হল। এ ভাবে কেমন করে চলে?”
স্বাস্থ্যকর্তারা অবশ্য ডাক্তারদের এই পাল্টা অভিযোগ উড়িয়ে দিতে পারেননি। টাস্ক ফোর্সের এক সদস্যের কথায়, “তিন জন ডাক্তারকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল ঠিকই, তাঁদের ফেরানোও হচ্ছে। ওয়ার্মারও দেওয়া হবে দিন কয়েকের মধ্যে। কিন্তু এটা তো কাজ না করার যুক্তি হতে পারে না। সীমিত পরিকাঠামোয় যতটুকু পরিষেবা দেওয়া যায়, সেটুকুও তাঁরা দিচ্ছেন না কেন?”
ন’মাস আগে ন্যাশনালের এসএনসিইউটি চালু হয়েছিল। গোড়া থেকেই শুরু হয় নানা সমস্যা। কখনও টাকা বরাদ্দ হওয়ার পরেও সরঞ্জাম কেনা হয়নি, কখনও জীবাণুমুক্ত করার নামে কাজ বন্ধ থেকেছে মাসের পর মাস। শেষে বাধা কাটিয়ে কাজ শুরু হলেও ৪০টি শয্যার সদ্ব্যবহার কখনওই করা যায়নি। হাসপাতাল সূত্রে খবর, প্রতি দিন একাধিক রুগ্ণ শিশুকে ফেরানো হয়। অন্য হাসপাতালের এসএনসিইউ-এ শয্যা খালি না থাকলে যদি ন্যাশনালে রেফার করা হয়, সে ক্ষেত্রেও আপত্তি তোলেন ডাক্তারদের একটি অংশ।
শিশু বিভাগের প্রধান চিকিৎসক বাদল মণ্ডল অবশ্য কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তিনি বলেছেন, “যা বলার সুপার বলবেন।” সুপার পার্থ প্রধান বলেছেন, “যা বলার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বলবেন।” ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ অর্থাৎ অধ্যক্ষ সমীর ঘোষ রায় বলেছেন, “স্বাস্থ্য ভবন থেকে আমার কাছে রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে। যা বলার, সেই রিপোর্টেই থাকবে।”
স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তা সুশান্ত বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য ডাক্তারদের কোনও যুক্তিই মানতে চাননি। তিনি বলেন, “ফাঁকিবাজের যুক্তির অভাব হয় না। এসএনসিইউ-এ যে ক’টি বাচ্চাকে দেখা যায়, তারা প্রায় কেউই খুব রুগ্ণ নয়। প্রকৃত রুগ্ণ শিশুদের ভর্তি নেওয়াই হচ্ছে না ন্যাশনালে, এমন খবর আমাদের কাছে আসছে। আর ডাক্তারেরা বলছেন ওয়ার্মার নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আমার প্রশ্ন, যে ক’টা ওয়ার্মার এখন রয়েছে, সেগুলি কেন ব্যবহার ব্যবহার হয় না?”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.